অবশেষে ইলিশ আনল হাসি

Looks like you've blocked notifications!
ভোলার দৌলতখানে ইলিশ নিয়ে মাছ ব্যবসায়ীর মুখে হাসি। ছবি : এনটিভি

অবশেষে নদীতে ধরা পড়তে শুরু করেছে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ। তাই দেরিতে হলেও ভোলার জেলে ও মাছ ব্যবসায়ীদের মুখে হাসি ফুটেছে। তবে সাগরে ইলিশ বেশি ধরা পড়ায় দাম কমের কারণে মিঠা পানির সুস্বাদু মেঘনার ইলিশের দাম পাচ্ছে না স্থানীয় জেলেরা।

দ্বীপ জেলা ভোলাকে ইলিশের বাড়ি বলা হয়। কারণ এর চারপাশে ইলিশের অভয়াশ্রম বলে খ্যাত মেঘনা আর তেঁতুলিয়া নদী। মৌসুমের শেষে এসে অবশেষে দেখা দিল কাঙ্ক্ষিত রুপালি ইলিশ। ধরা পড়তে শুরু করেছে জেলেদের জালে। যে কারণে জেলেদের মুখে হাসি ফুটতে শুরু করেছে। তাই নদীতে নৌকা নিয়ে ছুটছে আর মাছ ধরার কাজে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে। শুধু তাই নয়, জেলেদের জালে একের পর এক উঠতে থাকে ইলিশ। মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে ইলিশ একটু কম ধরা পড়লেও সাগরে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। নদীর ইলিশ অন্য সব নদীর ইলিশের চেয়ে সুস্বাদু হওয়ায় এই ইলিশের কদর একটি বেশিই থাকে। তবে দাম কমের কারণে পুষিয়ে নিতে পারছে না জেলে ও আড়ৎদাররা। তার পরও জেলে ও আড়ৎদারদের আশা, এভাবে মাছ পাওয়া গেলে তাদের পেছনের ক্ষতি কিছুটা হলেও কাটিয়ে উঠতে পারবেন।

ভোলার দৌলতখান মাছঘাটের ব্যবসায়ী মো. গিয়াস উদ্দিন বলেন, সাগরে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। সেই তুলনায় মেঘনা ও তেঁতুলিয়ায় একটু কম ধরা পড়ছে। তবে স্বাদের দিক থেকে এই নদীর ইলিশ বেশি জনপ্রিয় হলেও দামের দিক থেকে এক হওয়ায় আমরা পোষাতে পারছি না। ঢাকার বাজারে সঠিক দর না পাওয়ায় বঞ্চিত হচ্ছি আমরা।

অপরদিকে মো. সবুজ নামের এক জেলে জানান, ভরা মৌসুমে ইলিশ মাছ ধরা না পড়লেও এখন ভালো মাছ পাচ্ছি। তাই আগের দেনা পরিশোধ করতে পারব বলে আশা করছি। ইলিশ পাওয়ায় ভালোই লাগছে।

এদিকে সব কিছুর পরও থেমে নেই ভোলার অন্তত দেড় লাখ জেলে। ছুটছেন উত্তাল মেঘনাকে উপেক্ষা করে মাছের আশায়। আর তাই আশাহত হচ্ছেন না জেলেরা। ইলিশ ধরা পরতে শুরু করায় দিন-রাত বেচাকেনা হচ্ছে ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীর পাড়ের মাছ ঘাটগুলোতে। হাক-ডাক দিয়ে বিক্রি হচ্ছে ইলিশ। তাই জেলেদের পাশাপাশি খুশি মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারাও। এ বছরের এক লাখ ৬০ হাজার মেট্রিক টন মাছ উৎপাদনের যে লক্ষ্যমাত্রা তা অর্জিত হবে।

তাই তো দৌলতখান উপজেলার জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান বলেন, বিগত সময়ে ইলিশের পরিমাণ অত্যন্ত কম থাকা সত্ত্বেও বর্তমানে ইলিশের পরিমাণ অনেকটা বৃদ্ধি পেয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তন এবং বৃষ্টিপাতের কারণে দেরীতে ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে। বর্তমানে যে পরিমাণে ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে তা সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে পাওয়া গেলে আমাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে বলে আশা করছি।

বর্তমানে নদীতে যে পরিমাণে ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে তাতে স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে যাতে ইলিশ যেতে পারে সেদিকে লক্ষ রাখার জন্য সরকারের প্রতি দাবি ভোলার মৎস্য আড়ৎদারদের। একই সঙ্গে নদীতে নিষিদ্ধ জালমুক্ত করার দাবিও তাদের।