কারাগারেই মারা গেলেন বিএনপি নেতা আবুল হাকিম

Looks like you've blocked notifications!

রাজশাহীর কেন্দ্রীয় কারাগারে মৃত্যুবরণ করেছেন পাবনার বিএনপি নেতা আবুল হাকিম টেনু (৫৮)। তিনি পাবনার ঈশ্বরদীতে ১৯৯৪ সালে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ট্রেনে বোমা ও গুলিবর্ষণ মামলার যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ছিলেন।

আজ বৃহস্পতিবার রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে মৃত্যুবরণ করেছেন।

দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কারাগারের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আবুল হাকিম টেনু মারা যান বলে পরিবারের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিসসহ নানা রোগে ভুগছিলেন। তিনি তিন মেয়ে ও স্ত্রী রেখে গেছেন।

চলতি বছরের ৩ জুলাই পাবনার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক রোস্তম আলী ওই মামলার রায়ে নয়জনের ফাঁসি, আবুল হাকিম টেনুসহ ২৫ জনের যাবজ্জীবন, ১৩ জনের ১০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন। পাশাপাশি মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের পাঁচ লাখ, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তদের তিন লাখ ও ১০ বছরের সাজাপ্রাপ্তদের এক লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়। রায় ঘোষণার কয়েক দিন পর মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত ও যাবজ্জীবন দণ্ডাদেশপ্রাপ্তদের রাজশাহী কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। রাজশাহী কারাগারে টেনুর শারীরিক অবস্থা খারাপ হলে তাঁকে কারাগারের হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার দুপুরে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

সূত্র জানায়, গত ২১ জুলাই এই দণ্ডের বিরুদ্ধে আসামিদের পক্ষে হাইকোর্টে আপিল আবেদন করা হয়। গত ২০ আগস্ট মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আটজনসহ মোট ৪৩ জনের আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেছেন হাইকোর্টের বিচারপতি রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি এ এস এম আব্দুল মোবিনের বেঞ্চ।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর খুলনা থেকে ট্রেনে ঈশ্বরদী হয়ে সৈয়দপুরের দলীয় কর্মসূচিতে যাচ্ছিলেন তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁকে বহনকারী ট্রেনটি ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংশন স্টেশনে প্রবেশের মুহূর্তে ওই ট্রেন ও শেখ হাসিনার কামরা লক্ষ্য করে বোমা হামলা ও গুলি চালায় দুর্বৃত্তরা। স্টেশনে যাত্রাবিরতি করলে আবারও ট্রেনটিতে হামলা চালানো হয়। এ ঘটনায় দলীয় কর্মসূচি সংক্ষিপ্ত করে শেখ হাসিনা দ্রুত ঈশ্বরদী ত্যাগ করেন। পরে ঈশ্বরদী রেলওয়ে জিআরপি থানার ওই সময়কার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাদী হয়ে তৎকালীন ছাত্রদল নেতা ও বর্তমানে ঈশ্বরদী পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া পিন্টুসহ সাতজনকে আসামি করে মামলা করেন। মামলা দায়েরের পর কোনো সাক্ষী না পেয়ে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয় পুলিশ। কিন্তু আদালত ওই প্রতিবেদন গ্রহণ না করে অধিকতর তদন্তের জন্য তা সিআইডিতে (অপরাধ তদন্ত বিভাগ) পাঠান। পরে সিআইডি তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। ওই অভিযোগপত্রে নতুনভাবে স্থানীয় বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীসহ ৫২ জনকে এ মামলার আসামি করা হয়। মামলা চলাকালে সুদীর্ঘ ২৫ বছরে পাঁচজন আসামি মৃত্যুবরণ করেন।