‘গণতান্ত্রিক পরিবেশকে ভেঙে তছনছ করেছে সরকার’
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘বর্তমান সরকার দেশের সব প্রতিষ্ঠানকে ভেঙে দিয়ে একদলীয় বাকশাল প্রতিষ্ঠার সব ব্যবস্থা করেছে। এটা অঘোষিত বাকশাল। দেশের গণতান্ত্রিক পরিবেশকে ভেঙে তছনছ করে দিয়েছে।’
আজ রোববার জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত স্মরণসভায় তিনি এই দাবি করেন। বিএনপির সাবেক মহাসচিব প্রয়াত আব্দুস সালাম তালুকদারের ২০তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ওই সভার আয়োজন করা হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে সারা দেশে লুটের রাজত্ব কায়েম করেছে ক্ষমতাসীনরা। যেখানেই যাবেন সেখানেই দেখবেন আওয়ামী লীগের লোকজন লুটপাট ছাড়া কিছু করছে না।’
সরকার সুপরিকল্পিতভাবে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘শুধু গণতন্ত্র নয়, তারা রাজনীতিকে ধ্বংস করছে। ১/১১ তে যে ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল বিরাজনীতিকরণের সেই ধারাই এখন চলছে। এই দেশে বিচার ব্যবস্থা বলতে কিছু নেই, ন্যায় নীতি বলতে কিছু নেই।’
বিএনপি একটি খুনির দল তথ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যের সমালোচনা করে ফখরুল বলেন, ‘১৯৭২ সালে রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসার পর থেকে আওয়ামী লীগ খুন শুরু করেছে। তথ্যমন্ত্রী ভুলে গেছেন, উনারা ১৯৭২ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই রক্ষীবাহিনী তৈরি করে বিরোধী দলের হাজার হাজার নেতাকর্মীদের খুন করেছেন। বিএনপির হাত কিন্তু কারো খুনের রক্তে রঞ্জিত হয়নি। বিএনপি কখনো কোনো খুনের দায়ে পড়ে নাই। ২০০৮ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে আমাদের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে খুন করেছে, নিপীড়ন করেছে। গণতান্ত্রিক পথ সব রুদ্ধ করে দিয়েছে, তারা গণতান্ত্রিক স্পেস বলতে আর কিছু রাখেনি।’
সরকার সবদিকে ব্যর্থ এমন দাবি করে ফখরুল বলেন, ‘তারা অর্থনীতি, শিক্ষা ব্যবস্থা, স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে নষ্ট করেছে। ডেঙ্গু কী আকার ধারণ করেছে! হাজার হাজার মানুষ আক্রান্ত হয়েছে সরকারের অব্যবস্থাপনার কারণে। রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে সরকার ব্যর্থ হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘দুই বছর ধরে রোহিঙ্গারা এ দেশে এসেছে। তখন খালেদা জিয়া সেই লন্ডন থেকে স্টেটমেন্ট দিয়ে বলেছিলেন - যারা বিতাড়িত হচ্ছে মিয়ানমারে, তারা এখানে এসে আশ্রয় নেবে, তাদের আশ্রয় দিতে হবে। কিন্তু একই সঙ্গে তারা যেন সম্মান নিয়ে , নাগরিকত্ব নিয়ে দেশে ফিরে যেতে পারে সেই ব্যবস্থাও সরকারকে করতে হবে। এই দুই বছরের সরকার এতই ব্যর্থ হয়েছে যে, দিনক্ষণ ঠিক করেও সাড়ে তিন হাজার রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠাতে পারল না।’
অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, ‘বিএনপিকে যারা অনুসরণ করে তারা একত্রিত হচ্ছে, আমরা দেশের জনগণ, রাজনীতির খেলার মাঠ থেকে এই প্রধানমন্ত্রীকে লাল কার্ড দেখিয়ে বিতাড়িত করব।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমেদের সভাপতিত্বে স্মরণসভায় বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, বেগম সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু প্রমুখ।