পাবনায় স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ, ধর্ষককে ছেড়ে দিলেন চেয়ারম্যান

Looks like you've blocked notifications!

পাবনার সুজানগর উপজেলার ভায়না ইউনিয়নে তৃতীয় শ্রেণির এক ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই ঘটনায় শিশুটির বাবা সুজানগর থানায় মামলা করেছেন।

ভিকটিমের পরিবার ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত শুক্রবার দুপুরে বাড়ির পাশে বড়ই বাগানে প্রতিবেশী জয়দেব কুমার দাস (৪০) ওই শিশুটিকে একা পেয়ে ধর্ষণ করে। এরপর ধর্ষণের কথা কাউকে না বলার জন্য ভয়ভীতি দেখিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। পরে মেয়েটির যৌনাঙ্গ থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণ দেখে তার মা জিজ্ঞাসা করলে ধর্ষণের বিষয়টি জানতে পারেন। মেয়েটির বাবা ঘটনাটি ভায়না ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানকে জানালে তিনি মীমাংসার কথা বলে সময়ক্ষেপণ করেন।

একপর্যায়ে ঘটনাটি জানাজানি হলে শনিবার সুজানগর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) অর্জুন সাহা ঘটনাস্থলে তদন্তে এসে জয়দেব কুমার দাসকে আটক করে। এ সময় ইউপি চেয়ারম্যান মো. আমিন উদ্দিন ও সাবেক ই্উপি সদস্য ইমরুল হোসেন সামাজিকভাবে সমঝোতার কথা বলে জয়দেব দাসকে পুলিশের কাছ থেকে ছাড়িয়ে নেন। কিন্তু মেয়েটির দরিদ্র ভ্যানচালক  বাবা পুলিশের কাছে যেতে চাইলে চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্য তাঁকে বাধা দেন।

ঘটনার বিষয়ে শিশুটির মা বলেন, ‘আমার নাবালিকা শিশু বাচ্চা মেয়ের সাথে এই রকম ঘটনায় আমি মর্মাহত। কাউকে কিছু বলতে পারছি না। মেয়ের বাবাসহ পরিবারের সবাই এলাকার চেয়ারম্যানের কাছে গিয়েছিল। আমরা মেয়েকে ডাক্তারের কাছে নিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু চেয়ারম্যান-মেম্বাররা যেতে দেয়নি। আমরা গরিব মানুষ, আমার মেয়ের ভবিষ্যৎ কী হবে? আমার শিশু মেয়ের সাথে যে এই জঘন্য কাজ করেছে আমি তার কঠিন বিচার চাই।’

ঘটনার বিষয়ে ভায়না ইউপি চেয়ারম্যান আমিন উদ্দিন বলেন, ‘বিষয়টি আমি সামাজিকভাবে বসে ঠিক করার কথা বলেছিলাম। পরে সমাধান করতে পারব না বলে জানিয়েছি ওই পরিবারকে। মেয়েটির বাবা আমার কাছে এসেছিলেন। আমি তাঁকে আইনগত ব্যবস্থার গ্রহণের কথা বলেছি। ঘটনার পরে পুলিশ তদন্তে এসেছিল, তখন অভিযুক্ত জয়দেব দাস ঘটনাস্থলে পুলিশের সঙ্গে উপস্থিত ছিল। ভিকটিমের পরিবার তখন পুলিশের কাছে কোনো অভিযোগ করেনি। সেই কারণে পুলিশ তাকে ছেড়ে দেয়। আমি জয়দেব দাসকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য কোনো ধরনের তদবির করিনি।’

সুজানগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শরিফুল আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘প্রাথমিক পর্যায়ে ভিকটিমের পরিবার বিষয়টি থানাকে জানাতে চায়নি। আমরা ভিকটিমের পরিবার ও ভিকটিমের সঙ্গে কথা বলেছি। ভিকটিমের বাবা বাদী হয়ে থানায় ধর্ষণের মামলা করেছেন। আমরা ধর্ষককে গ্রেপ্তারের জন্য চেষ্টা করছি।’

এ ব্যাপারে পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস বলেন, এই বিষয়ে একটি অভিযোগের কথা শুনেছি। সংশ্লিষ্ট থানাকে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখার জন্য বলেছি। ধর্ষক যেই হোক তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।