মানবতাবিরোধী অপরাধে ফিরোজ খাঁর মৃত্যুদণ্ডাদেশ
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বাঁশবাড়িয়ার আবদুস সামাদ ওরফে ফিরোজ খাঁ ওরফে মুসাকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে এ রায় ঘোষণা করা হয়। এ সময় আসামি ফিরোজ খাঁ ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত ছিলেন।
গতকাল সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চ রায়ের জন্য এ দিন ধার্য করেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর ঋষিকেশ ও জাহিদ ইমাম। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী আবদুস সাত্তার পালোয়ান।
এদিকে, রায় ঘোষণার পর সন্তোষ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা। অন্যদিকে রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে আসামিপক্ষের আইনজীবী আবদুস সাত্তার পালোয়ান বলেছেন, ‘ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছি। রায়ের বিরুদ্ধে আমরা আপিল করব।’
এর আগে গত ৮ জুলাই উভয়পক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখেন ট্রাইব্যুনাল।
তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী, পুঠিয়ার বাঁশবাড়ি এলাকার মৃত আব্বাস আলীর ছেলে মো. আবদুস সামাদ (মুসা) ওরফে ফিরোজ খাঁ মুক্তিযুদ্ধের আগে মুসলিম লীগের সমর্থক ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় জামায়াতে ইসলামীর সমর্থক হিসেবে শান্তি কমিটির স্থানীয় নেতার নেতৃত্বে মানবতাবিরোধী অপরাধ করেন।
তদন্ত প্রতিবেদনে আসামি ফিরোজ খাঁর বিরুদ্ধে চারজন সাঁওতালসহ ১৫ জনকে হত্যা, ২১ জনকে নির্যাতন, ৮ থেকে ১০টি বাড়িঘর লুণ্ঠনসহ ৫০ থেকে ৬০টি বাড়িঘর অগ্নিসংযোগ করে ধ্বংস করে দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়।
এ ছাড়া মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১৯৭১ সালের ২০ এপ্রিল সাড়ে ৫টা থেকে সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে পুঠিয়া থানার ভালুকগাছী ইউনিয়নের সাঁওতালপাড়ায় গিয়ে আসামি ফিরোজ খাঁ, পাকিস্তানি আর্মি ও তার সহযোগীরা স্বাধীনতার পক্ষের হেমব্রম, কানু হাসদা, জটু সরেন ও টুনু মাড্ডিকে তরবারি দিয়ে ও আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করে।
২০১৬ সালের ১১ ডিসেম্বর মামলাটির তদন্ত শুরু হয়। তখন এ মামলায় আসামি করা হয়েছিল ছয়জনকে। কিন্তু তদন্ত চলার সময় বাকি পাঁচ আসামির মৃত্যু হলে একমাত্র আসামি হিসেবে মো. আবদুস সামাদ (মুসা) ওরফে ফিরোজ খাঁ-ই থাকেন।
তদন্ত চলার সময় নাশকতার মামলায় গ্রেপ্তার হন এ আসামি। পরে ২০১৭ সালের ২৪ জানুয়ারি গ্রেপ্তার দেখিয়ে হাজির করা হলে ট্রাইব্যুনাল তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।