ময়ূরসহ খুলনার ২৬ নদ-নদী দখলমুক্ত করতে উচ্ছেদ অভিযান শুরু

Looks like you've blocked notifications!
খুলনা সেটি করপোরেশন (কেসিসি) ও জেলা প্রশাসনের নেতৃত্বে ময়ূর নদসহ ২৬ নদ-নদী ও খাল দখলমুক্ত করতে অভিযান। ছবি : এনটিভি

ময়ূর নদসহ খুলনার ২৬টি নদ-নদী-খাল দখলমুক্ত করতে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করা হয়েছে। আজ রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় খুলনা সেটি করপোরেশন (কেসিসি) ও জেলা প্রশাসনের নেতৃত্বে ময়ূর নদের বুড়ো মৌলভীর দরগা এলাকা থেকে এ উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়।

অভিযানে উপস্থিত ছিলেন কেসিসি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও কাউন্সিলরসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

এ সময় কেসিসি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক বলেন, ‘ময়ূর নদসহ ২৬টি নদী ও খালে যত দিন অবৈধ স্থাপনা থাকবে তত দিন উচ্ছেদ অভিযান চলবে। এর আগে ময়ূর নদ ও ২৬টি খাল এলাকা থেকে অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নিতে মাইকিং করেছে জেলা প্রশাসন।’

কেসিসি সূত্রে জানা গেছে, ময়ূর নদসহ ২৬টি নদী ও খালে যৌথ জরিপ চালায় জেলা প্রশাসনের নেতৃত্বে সরকারের চারটি সংস্থা। এর মধ্যে সেখানে ৪৬০ জন দখলদারের তালিকা তৈরি করা হয়। এসব নদ-নদী ও খাল দখল করে তৈরি স্থাপনার সংখ্যা ৩৮২টি। এর মধ্যে ময়ূর নদে ৭৯ জন ব্যক্তি ৬৩টি অবৈধ স্থাপনা তৈরি করেছেন বলে জরিপে উঠে আসে। ময়ুর নদ ছাড়াও ভৈরব নদ এলাকার মোট ১১৫৪টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে চিহ্নত করা হয়েছে।

মহানগরীসহ আশপাশের খাল ও নদ-নদীর তীরে বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করে দখল করা হয়েছে। ফলে বর্ষা মৌসুমে পানি বাধাগ্রস্ত হয়ে ভয়াবহ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। সামান্য বৃষ্টিতে তলিয়ে যায় সড়ক ও ঘরবাড়ি-ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।

অন্যদিকে পানি জমে থাকায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সড়ক। যে কারণে ময়ূর নদসহ ২৬টি নদী ও খাল দখলমুক্ত করতে এ উচ্ছেদ অভিযান শুরু করা হয়েছে।

জানা যায়, প্রভাবশালীরা স্রোতহীন ময়ূর নদে খুব সহজেই পাটা ও বাঁধ দিয়ে প্রতিদিনই দখল করে আসছিল। পৈত্রিক সম্পত্তির মতো গাছপালা লাগানো ও চাষাবাদসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা, এমনকি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও পাকা বাড়ি-ঘর ভবন নির্মাণ করেছিলেন অনেকে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দুই যুগ আগেও ময়ূর নদে পালতোলা নৌকা চলাচল করত। অনেক জেলে পরিবারের জীবিকার মূল উপজীব্য ছিল এ নদ। গোসল ও তৈজসপত্র ধোয়ার কাজে এ নদের পানি ব্যবহার করত। অথচ এখন দখল ও দূষণে আর ব্যবহারের উপযোগী নেই। ১২ কিলোমিটার দীর্ঘ ময়ূর নদের সঙ্গে আগে রূপসা নদীর সরাসরি সংযোগ ছিল। দখলে নদটি হারিয়েছে নিজস্বতা। ময়ূর নদে নাব্য সংকট সমাধানে পাঁচ কোটি ৭৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০১৬ সালে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে খুলনা সিটি করপোরেশন। তাতে পুরোপুরি দখলমুক্ত হয়নি নগরীর নদ ও খালগুলো।