গণতন্ত্র রক্ষায় সশস্ত্র বাহিনীকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

সংবিধান ও গণতন্ত্র রক্ষায় সরকারের অন্যান্য সংস্থার মতো সশস্ত্র বাহিনীকেও সদা প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ রোববার কক্সবাজারের রামুতে সেনাবাহিনীর ১০ পদাতিক ডিভিশনের পতাকা উত্তোলন অনুষ্ঠানে এমন নির্দেশনা দেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অন্যান্য বাহিনীর মতো সশস্ত্র বাহিনীকেও সংবিধান রক্ষায় ও যেকোনো ধরনের হুমকির মুখ থেকে গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে কাজ করতে হবে।’ এ সময় তিনি জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে নিজের দৃঢ় অবস্থানের কথা ব্যক্ত করেন। এদের বিরুদ্ধে সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে, যেন জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ কোনোভাবেই এ দেশে বেড়ে উঠতে না পারে। যেকোনো মূল্যে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদকে প্রতিহত করতে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।’
উন্নয়ন কর্মসূচি এগিয়ে নেওয়ার জন্য শৃঙ্খলা ও শান্তি প্রয়োজন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জঙ্গি ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপ শুধু উন্নয়ন কর্মসূচিকেই বাধাগ্রস্ত করে না, বরং তা সততা, শান্তি ও শৃঙ্খলার জন্য হুমকিস্বরূপ।’ তিনি বলেন, ‘সেজন্যই সরকার চায়, জনগণের প্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটিয়ে দেশ পরিচালনা করতে। মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে গড়ে ওঠা বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এখন দেশের মানুষের জীবনের অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠেছে।’ অতীতের মতো ভবিষ্যতেও বাংলাদেশের মানুষের প্রয়োজনে সেনাবাহিনী পাশে থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেনাবাহিনীর উন্নয়নে যা করা দরকার, তা করবে সরকার। তিনি বলেন, নতুন এই ডিভিশনের সেনাসদস্যরা সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষের মধ্যে অসাম্প্রদায়িকতার চেতনা বজায় রাখতে কাজ করবেন বলে স্থানীয়রা আশা করে। ভবিষ্যতে একটি দক্ষ ও আধুনিক সেনাবাহিনীর জন্য যেকোনো প্রয়োজন পূরণের অঙ্গীকার করেন তিনি।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী হেলিকপ্টারযোগে রামুতে সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ইকবাল করিম ভুঁইয়া ও ১০ পদাতিক ডিভিশনের জেনারেল অফিসার কমান্ডিং (জিওসি) সেখানে তাঁকে স্বাগত জানান। সেনাবাহিনীর একটি সশস্ত্র দল এ সময় প্রধানমন্ত্রীকে রাষ্ট্রীয় সালাম জানায়। প্রধানমন্ত্রী সালাম গ্রহণ করেন এবং প্যারেড পরিদর্শন করেন।
অনুষ্ঠানে সাবেক রাষ্ট্রপতি ও সেনাপ্রধান এইচ এম এরশাদ, গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, সাবেক সেনাপ্রধান মেজর জেনারেল কে এম সফিউল্লাহ, নৌবাহিনীর প্রধান ভাইস অ্যাডমিরাল এম ফরিদ হাবিব, বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার মার্শাল মো. এনামুল বারী এবং সংসদ সদস্য, কূটনীতিক, উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
কক্সবাজারের রামু উপজেলার রাজারকুল, দক্ষিণ মিঠাছড়ি ও খুনিয়াপালং ইউনিয়নের এক হাজার ৭৮৮ একর জায়গাজুড়ে গড়ে উঠেছে ১০ পদাতিক ডিভিশনের রামু সেনানিবাস।
বিকেলে কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রামে যান প্রধানমন্ত্রী। সেখানে সেনাবাহিনীর মালিকানাধীন চট্টগ্রাম র্যাডিসন ব্লু-চিটাগং বে ভিউ হোটেল উদ্বোধন করেন তিনি। সেনা হোটেলস ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনায় চিটাগাং ক্লাব, সার্কিট হাউস ও এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের মাঝের এলাকায় তৈরি করা হয়েছে ২২ তলা এই পাঁচতারা হোটেল।