‘বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে অ্যাকশন শুরু ৮ সেপ্টেম্বর’
চলতি মাসের ৮ তারিখ থেকে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ও তাদের মদদদাতাদের বিরুদ্ধে অ্যাকশন শুরু হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
আজ মঙ্গবলবার বিকেলে রাজধানীর ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি। এর আগে দলের সম্পাদকমণ্ডলীর সভা অনুষ্ঠিত হয়।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের আগের ওয়ার্কিং কমিটির মিটিংয়ে উপজেলা নির্বাচনে বিদ্রোহী এবং বিদ্রোহীদের মদতদাতাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন গত আগস্ট মাস থাকায় স্থগিত রেখেছিলাম। এখন সিদ্ধান্ত হয়ে গেছে, বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া আগামী ৮ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর করতে আমরা শুরু করব। এর আগে আমরা নিজেরা জয়েন্ট সেক্রেটারি, অর্গানাইজিং সেক্রেটারি, যারা বিভিন্ন বিভাগের দায়িত্বে আছেন তারা এক সঙ্গে একটা বৈঠক করব। পরে ফাইনালি কোনো ভুল হয়েছে কি না, কেউ বাদ পড়েছে কি না অথবা নতুন কোনো সংযোজনের প্রয়োজন আছে কি না, এ বিষয়গুলো বিশ্লেষণ করব। যাতে এই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা প্রক্রিয়াটা নিখুঁত হয় এবং এটার সিদ্ধান্তটা কার্যকর করা সেজন্যই আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখার চিন্তা ভাবনা করছি।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আগামী ৮ তারিখ থেকে আমরা চিঠি দিতে শুরু করব। সেটাই আমাদের সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে।’
আসন্ন কয়েকটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বাছাইয়ের বিষয়ে কাদের বলেন, ‘আগামী ৭ তারিখ রংপুর উপনির্বাচনের মনোনয়ন বোর্ডের সভা হবে। এ ছাড়া আমাদের সাতটি উপজেলা, তিনটি পৌরসভা এবং ২১টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন রংপুর উপনির্বাচনের পর পরই অনুষ্ঠিত হবে। মনোনয়ন বোর্ড এই নির্বাচনের প্রার্থিতার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর আমাদের পরবর্তী ওয়ার্কিং কমিটির মিটিং অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে আমাদের সাংগঠনিক রাজনৈতিক বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে। ওয়ার্কিং কমিটির মিটিংয়ের পর আমরা সাংগঠনিক সফরে যাব।’
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কার্যক্রমে স্থবিরতা বিরাজ করছে এমন অভিযোগের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘কোনো কোনো মিডিয়ায় দেখলাম আওয়ামী লীগের কার্যক্রমে স্থবিরতা বিরাজ করছে। আমি বলব শোকের মাসে আমাদের ওয়ার্ড পর্যন্ত পার্টির কার্যক্রম চলে। একটা দিনের জন্যও বন্ধ হয় না। সভা সমাবেশ প্রতিদিনই লেগেই আছে। বরং আগস্ট মাসে আমাদের কর্মসূচি আরো বেশি করে চলমান থাকে। নেতাকর্মীরা আন্তরিকতার মধ্য দিয়ে কর্মসূচিগুলো পালন করে।’
বর্তমান কমিটির মেয়াদে একটি জেলা বাদে অন্য কোনো জেলায় সম্মেলন সম্পন্ন করতে পারেনি- এমন অভিযোগের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এখন আমাদের যেসব জায়গা বা শাখাগুলোর মেয়াদ উত্তীর্ণ, এসব ব্যাপারে আগামী ওয়ার্কিং কমিটির মিটিংয়ে আলোচনা করা করা হবে। যেসব বিষয়ে ঘাটতি রয়েছে, সমস্যা আছে সেসব বিষয়ে ওয়ার্কিং কমিটি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়। আগামী ওয়ার্কিং কিমিটির মিটিংয়ে সম্মেলন সংক্রান্ত বা কোথাও কোনো সাংগঠনিক অচলবস্থা থাকলে এসব বিষয় নিয়ে আলাপ আলোচনা হবে এবং সেখানে সিদ্ধান্ত হবে।’
সম্মেলন করার জন্য বর্তমান কমিটি প্রস্তুত কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা সম্মেলন করতে প্রস্তুত। আমাদের নেত্রী যখনই সিদ্ধান্ত দেবেন তখনই আমরা সম্মেলন করব।’
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, মেজবাউদ্দিন সিরাজ, বি এম মোজাম্মেল হক, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, এ কে এম এনামুল হক শামীম, মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, দপ্তর সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ, প্রচার ও প্রকাশণা সম্পাদক হাছান মাহমুদ, বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী প্রমুখ।