‘সংসদ অধিবেশনের আগেই বিরোধীদলীয় নেতা ঠিক করা হবে’
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেছেন, ‘আগামী ৮ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদ অধিবেশন শুরু হওয়ার আগেই দল সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা নির্বাচন করবে।’
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের বনানীর কার্যালয়ে আজ মঙ্গলবার সাংবাদিকদের তিনি জানান, তাঁদের দলে কোনো বিভাজন নেই এবং তাঁরা ঐক্যবদ্ধভাবে রংপুর-৩ উপনির্বাচনে অংশ নেবেন।
কাদের বলেন, ‘সংসদের পরবর্তী অধিবেশনের আগেই বিরোধীদলীয় নেতা নির্বাচন করা হবে।’
একাদশ জাতীয় সংসদের চতুর্থ অধিবেশন আগামী ৮ সেপ্টেম্বর বিকেল ৫টায় শুরু হবে। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ গত ১৪ জুলাই মারা যাওয়ার পর সংসদে বিরোধীদলীয় নেতার পদ শূন্য হয়ে পড়ে।
এ বছরের ১০ জানুয়ারি, এরশাদ এবং তার ভাই জি এম কাদের একাদশ সংসদে যথাক্রমে বিরোধীদলীয় নেতা এবং বিরোধীদলীয় উপনেতা হিসেবে স্বীকৃতি পান।
২৩ মার্চ একটি নাটকীয় পদক্ষেপে এরশাদ বিরোধীদলীয় উপনেতার পদ থেকে জি এম কাদেরকে অপসারণ করেন এবং তার স্থলে বিরোধীদলীয় উপনেতা হিসেবে দায়িত্ব পান জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান এরশাদের স্ত্রী রওশন এরশাদ। রওশন দশম সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা ছিলেন।
জাতীয় পার্টি মহাজোটের মূল অংশীদার হিসেবে একাদশ নির্বাচনে অংশ নেয় এবং ২২টি আসন লাভ করে। নির্বাচনের পরে দলটি সংসদে বিরোধী দলের ভূমিকা পালনের সিদ্ধান্ত নেয়।
জাতীয় পার্টি সূত্র জানায়, দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সংসদ সদস্যরা বিরোধী নেতা নির্বাচন করার বিষয়ে দুটি দলে বিভক্ত।
রওশনের অনুগত কিছু নেতা তাঁকে বিরোধী নেতার ভূমিকায় দেখতে চান। অন্যরা দলের প্রধান হিসেবে জি এম কাদেরকে বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে চান।
দলের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, শিগগিরই তাদের দলের নীতিনির্ধারণী ফোরামের একটি সভা অনুষ্ঠিত হবে এবং সংখ্যাগরিষ্ঠতার সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে বিরোধীদলীয় নেতা চূড়ান্ত করা হবে। তিনি জানান, এরশাদের রংপুর-৩ আসনের উপনির্বাচনের প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রেও জাতীয় পার্টি সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে।
জাতীয় পার্টির এই নেতা বলেন, ‘রওশন তার পুত্র রাহগীর আল মাহি ওরফে সাদ এরশাদকে উপনির্বাচনে প্রার্থী করার ব্যাপারে অনড় রয়েছেন এবং জি এম কাদের তাঁর ভাতিজা এবং এক ভাগ্নিও মনোনয়ন চাওয়ায় বিষয়টি নিয়ে নীরব রয়েছেন।’
জি এম কাদের আজ জানিয়েছেন, তাঁদের দল সর্বসম্মতিক্রমে রংপুর-৩ আসনের প্রার্থী ঘোষণা করবে। তিনি বলেন, ‘দলীয় মনোনয়ন বোর্ড প্রার্থী চূড়ান্ত করবে এবং কেউ যদি দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘনের চেষ্টা করে তবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
রংপুর-৩ আসনকে তাদের দলের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে বর্ণনা করে কাদের আশা প্রকাশ করেন যে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা দলীয় মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থীর বিজয় নিশ্চিত করতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে।