‘পিচ্চি’ বলায় রাবিতে শিক্ষার্থীকে পেটাল ছাত্রলীগ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এক শিক্ষার্থীকে বেধড়ক মারধর করেছে ছাত্রলীগকর্মীরা। আজ সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা চলাকালে বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের টুকিটাকি চত্বরে এ ঘটনা ঘটে।
আহত শিক্ষার্থীর নাম সোহাগ রানা। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আর অভিযুক্ত ওমর ফারুক বায়েজীদ ছাত্রলীগকর্মী ও হিসাববিজ্ঞান ও তথ্যব্যবস্থাপনা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী।
প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক শিক্ষার্থী এনটিভি অনলাইনকে জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান ও তথ্যব্যবস্থাপনা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগকর্মী ওমর ফারুক বায়েজীদ এবং সোহাগ নামের ওই শিক্ষার্থী টুকিটাকি চত্বরে পাশাপাশি বসে ছিলেন। সোহাগ টুকিটাকি চত্বরের দোকানের খাবার পরিবেশনকারী এক ছেলেকে ‘পিচ্চি’ সম্বোধন করে চা দিতে বলেন। ওই ছেলেটিকে ‘পিচ্চি’ বলায় আপত্তি জানায় বায়েজীদ। এরপর তাঁদের মধ্যে কথাকাটি শুরু হয়। একপর্যায়ে সোহাগকে মারতে শুরু করেন ছাত্রলীগকর্মী বায়েজীদ। এরপর কয়েক দফায় রাবি ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত কর্মী আবু খায়ের মোস্তফা রিনেট, ছাত্রলীগকর্মী জিম ও শোভনসহ কয়েকজন সোহাগকে মারধর করেন।
ছাত্রলীগকর্মীদের মারধরে সোহাগের মাথা, মুখ ও চোখে গুরুতর জখম হয়। প্রথমে তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। পরে তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (রামেক) স্থানান্তর করা হয়।
ভুক্তভোগী সোহাগ বলেন, “বায়েজীদ নামের ওই ছেলেকে আমি চিনি না। আমি টুকিটাকিতে বসে ছোট এক ছেলেকে চা আনার জন্য ‘পিচ্চি’ বলে ডাকলে সে আপত্তি জানায়। এ কারণে কয়েকজন আমাকে অনেক মারধর করেছে।”
আহত শিক্ষর্থীর সঙ্গে থাকা দর্শন বিভাগের স্নাতকোত্তর পর্বের শিক্ষার্থী শরিফুল জাহিদ জানান, ‘সোহাগের চোখে গুরুতর আঘাত লাগার কারণে তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেলে সেন্টার থেকে রামেকে পাঠানো হয়েছে।’
এ বিষয়ে ছাত্রলীগকর্মী ওমর ফারুক বায়েজীদ মাপিটের ঘটনাটি অস্বীকার করেন।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, ‘ওদের দুজনের মধ্যে সামান্য ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছিল। দুজনকে ডেকে বিষয়টি মীমাংসা করে দেওয়া হয়েছে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক তারিকুল বলেন, ‘শিক্ষার্থীকে মারধরের বিষয়টি শুনেছি। ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে ব্যস্ত থাকার কারণে আহত শিক্ষার্থীকে দেখতে যেতে পারিনি। পরীক্ষা শেষে পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখব এবং অপরাধীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।’