সালমান শাহর চলে যাওয়া, ২৩ বছরেও খোলেনি রহস্যের জট

Looks like you've blocked notifications!

প্রয়াত নায়ক সালমান শাহ মৃত্যুর ২৩ বছর পার হলেও এখনো খোলেনি মামলার রহস্যজট। আগামী ১ অক্টোবর এ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য রয়েছে।

আজ ৬ সেপ্টেম্বর। ১৯৯৬ সালের এ দিন জনপ্রিয় এ নায়কের লাশ উদ্ধার করা হয়। এরপর একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়। তবে এতদিনেও তাঁর মৃত্যুর রহস্যের জট খোলেনি।

গতকাল বৃহস্পতিবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর পরিদর্শক  মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘গত ১ সেপ্টেম্বর ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে সালমান শাহ মৃত্যুর মামলার তদন্ত অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করেছি। এ মামলায় সালমানের স্ত্রী সামিরা হকসহ সাতজন সাক্ষী হিসেবে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় বিচারকের কাছে জবাবন্দি দিয়েছেন।’

সিরাজুল বলেন, ‘মামলাটি তদন্ত করছি। এ ছাড়া রুবির একটি ভিডিও আমরা এখনো তদন্ত করে দেখছি। তদন্ত শেষ হলেই আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।’

বাদীপক্ষের আইনজীবী ফারুক আহম্মেদ বলেন, ‘গত ১  সেপ্টেম্বর আদালতে অগ্রগতি প্রতিবেদন দিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা। এর মধ্যে সালমান শাহর স্ত্রী সামিরা আদালতে সাক্ষ্য দিয়ে গেছেন। আমরা সে সাক্ষ্যের কপি নেওয়ার চেষ্টা করছি। আশা করছি দ্রুত আমাদের পক্ষে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।’

১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর জনপ্রিয় চিত্রনায়ক চৌধুরী মোহাম্মদ শাহরিয়ার ইমন ওরফে সালমান শাহর লাশ উদ্ধার করা হয়। ওই সময় তাঁর বাবা প্রয়াত কমরউদ্দিন আহম্মদ চৌধুরী একটি অপমৃত্যুর মামলা করেছিলেন। ১৯৯৭ সালের ২৪ জুলাই সালমানের বাবা তাঁর ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে—এমন অভিযোগ এনে মুখ্য মহানগর হাকিমের (সিএমএম) আদালতে একটি অভিযোগ করেন।

ওই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার সিএমএম আদালত অপমৃত্যুর মামলার সঙ্গে হত্যার অভিযোগটি একসঙ্গে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) নির্দেশ দেন।

পরবর্তী সময়ে একই বছরের ৩ নভেম্বর সিআইডি ঘটনাটি পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করে ঢাকার সিএমএম আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে।

ওই চূড়ান্ত প্রতিবেদনে সালমান শাহর মৃত্যুকে অপমৃত্যু হিসেবে উল্লেখ করে সিআইডি। একই বছরের ২৫ নভেম্বর ঢাকার সিএমএম আদালত সিআইডি পুলিশের দাখিল করা চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করেন।

সিআইডির দাখিল করা প্রতিবেদনে সালমানের বাবা সন্তুষ্ট না হয়ে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে একটি রিভিশন মামলা করেন।

ওই রিভিশন মামলার ওপর শুনানি শেষে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ ২০০৩ সালের ১৯ মে মামলাটি ফের বিচার বিভাগীয় তদন্তের জন্য নির্দেশ দেন। এরপর ১২ বছর ধরে এ মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তে ছিল।

সর্বশেষ ২০১৪ সালের ৩ আগস্ট সিএমএম বিকাশ কুমার সাহার কাছে মহানগর হাকিম ইমদাদুল হক বিচার বিভাগীয় তদন্ত শেষে প্রতিবেদন দাখিল করেন। ওই প্রতিবেদনেও সালমান শাহের মৃত্যুকে অপমৃত্যু হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

পরবর্তী সময়ে সালমান শাহর মা নীলা চৌধুরী ওই প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে ২০১৬ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি ঢাকার সিএমএম আদালতে আরেকটি নারাজি দাখিল করেন। এর শুনানি শেষে বিচারক মামলাটি র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নকে (র‌্যাব) তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। সে আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে রিভিশন মামলা করেন। পরে ঢাকার বিশেষ জজ ৬-এর বিচারক ইমরুল কায়েস রিভিশন মঞ্জুর করেন।