সহকারী ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নিয়োগের বৈধতা চ্যালেঞ্জ
হাইকোর্টে উচ্চ আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনায় নিয়োগ দেওয়া ৭০ জন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও ১০৫ সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলের নিয়োগের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে।
আজ রোববার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় অ্যাডভোকেট ফরহাদ উদ্দিন আহমেদ ভূঁইয়া এ রিট আবেদন দায়ের করেন।
বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চে চলতি সপ্তাহে শুনানি হতে পারে।
রিটে মন্ত্রী পরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব, আইন সচিব, আইন কমিশনের চেয়ারম্যান, অ্যাটর্নি জেনারেলসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছে।
অ্যাডভোকেট ফরহাদ উদ্দিন আহমেদ ভূঁইয়া সাংবাদিকদের বলেন, ‘সম্পূর্ণ রাজনৈতিক বিবেচনায় অপেক্ষাকৃত কম যোগ্যতা সম্পন্ন আইনজীবীদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। যা সংবিধানের ১৯, ২২, ২৭, ২৮, ২৯ এবং ৩১ অনুচ্ছেদের পরিপন্থী। সংবিধানের ২২ অনুচ্ছেদে বিচার বিভাগের স্বাধীনতার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু আইন কর্মকর্তাদের রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগ দেওয়া হয় তাহলে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়।’
এই আইনজীবী আরো বলেন, ‘সৎ, যোগ্য ও মেধাবীদের বাদ দিয়ে এবং পেশাগত জ্ঞান ও দক্ষতা বিবেচনা না করে শুধু রাজনৈতিক বিবেচনায় এই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। নিয়োগপ্রাপ্ত ১০৫ সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলের মধ্যে ব্যারিস্টার আল-মামুনের হাইকোর্টে প্র্যাকটিসের সময়কাল চার বছর দুই মাস। যদিও আইনানুযায়ী সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল নিয়োগের ক্ষেত্রে হাইকোর্টে ন্যূনতম পাঁচ বছর প্র্যাকটিসের অভিজ্ঞতা থাকতে হয়। এই নিয়োগ বাংলাদেশ ল’ অফিসার অর্ডার ১৯৭২-এর অনুচ্ছেদ ৩(৩) এবং বাংলাদেশ ল’ অফিসার (সংশোধিত) আইন ২০০১-এর সুস্পষ্টভাবে লঙ্ঘন। এ কারণে রিট দায়ের করেছি।
আল-মামুন ছাড়াও নিয়োগপ্রাপ্ত ১০৫ জন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলের মধ্যে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখিত ক্রমিক নম্বর ৯৯ থেকে ১০৫ পর্যন্ত (১০৪ নম্বর বাদে) ব্যক্তিদের নিয়োগ প্রক্রিয়া সন্দেহজনক। কারণ প্রজ্ঞাপনে এদের কারো হাইকোর্টে তালিকাভুক্তির তারিখ উল্লেখ করা হয়নি। ফলে এসব নিয়োগপ্রাপ্ত সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলের হাইকোর্টে প্র্যাকটিসের অভিজ্ঞতা পাঁচ বছর আছে কি না, তা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ রয়েছে।
রিটে সরকারি আইন কর্মকর্তা নিয়োগ, পদোন্নতি, অপসারণ, প্রশিক্ষণ ইত্যাদিসহ সব বিষয় পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি নতুন আইন প্রণয়নের মাধ্যমে একটি স্বাধীন প্রসিকিউশন সার্ভিস কমিশন প্রতিষ্ঠার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
গত ৭ জুলাই ১০৫ জন আইনজীবীকে সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ও ২১ জুলাই ৭০ জন আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।