অধ্যক্ষকে হুমকি দিয়ে ছাত্রলীগ নেতা শ্রীঘরে

Looks like you've blocked notifications!
ছাত্রলীগ নেতা আশরাফুজ্জামান তাজ। ছবি : সংগৃহীত

সাতক্ষীরার আশাশুনি সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মিজানুর রহমানের ওপর তিন দফা হামলা ও তাঁর অফিস ভাঙচুরের ঘটনায় কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি আশরাফুজ্জামান তাজসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

আশাশুনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুস সালাম জানান, অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান মামলা করার পর আশরাফুজ্জামান তাজ ও তাঁর সহযোগী ছাত্রলীগ নেতা আল মামুনকে গতকাল সোমবার রাতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান জানান, গত শনিবার সন্ধ্যায় তিনি তাঁর কয়েকজন সহকর্মীকে নিয়ে নিজ কক্ষে কাজ করছিলেন। এ সময় এক যুবক এসে তাঁকে সালাম দিয়ে একটু রুমের বাইরে যেতে বলে। তিনি বাইরে আসার পরপরই তাঁর (অধ্যক্ষ) সামনে আরেকটি ছেলেকে যুবকেরা বেদম মারধর করতে থাকে। তিনি বিষয়টি কী তা জানতে চাইলে যুবকেরা জানায়,  সে (মারধরের শিকার) সাতক্ষীরা থেকে  একটি মেয়েকে এনে কলেজ ক্যাম্পাসের মধ্যে ঢুকে অনৈতিক আচরণ করেছে। অধ্যক্ষ ছেলেটিকে মারধর না করে তাঁর কাছে দিতে বলেন। এ সময় তিনি তার (মারধরের শিকার) অভিভাবকদের ফোন করে ডাকেন। একই সময়ে সেখানে পুলিশও পৌঁছায় । পরে পুলিশ  থানায় নিয়ে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয় অজ্ঞাত পরিচয় ছেলেটিকে।

অধ্যক্ষ মিজানুর জানান, ছেলেটিকে যুবকদের হাতে কেনো দেওয়া হলো না এই কৈফিয়ত তলব করে তাঁর ওপর হামলা করে কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি আশরাফুজ্জামান তাজ ও তাঁর সহযোগী শাওন, আল মামুন ও সাইফুল্লাহসহ ৭/৮ জন ছাত্রলীগ ক্যাডার।  এ সময় তারা তাঁর কক্ষ ভাঙচুর করে। জানালার গ্লাস, চেয়ার টেবিল সবই ভাঙচুর করে। ইটপাটকেল ছুঁড়ে তাণ্ডব চালায়।

অধ্যক্ষ জানান, পরপর তিনবার তিনি ওই হামলার শিকার হন। তাঁকে চড়  কিল ঘুষি মেরে ফেলে দেওয়া হয়।  তিনি জানান সহকর্মী শিক্ষকরা হামলাকারীদের  কবল থেকে  তাঁকে রক্ষার  চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। সহকর্মীরাও  কমবেশি লাঞ্ছিত হন।

তিনি জানান, এ সময় ছাত্রলীগ নেতা তাজ  বলেন, ‘এখানে চাকুরি করতে হলে আমাদের কথা মতো চলতে হবে। না হলে সাইজ করে দেব’। আক্ষেপ করে অধ্যক্ষ বলেন,  ‘এসব সন্তানতুল্য ছেলেদের হাতে বারবার লাঞ্ছিত হয়ে আমরা যেনো মরে গেছি।’ তিনি জানান, বিষয়টি তিনি স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তাদের নাম উল্লেখ করে আশাশুনি থানায় একটি মামলা করেন। 

ওসি আবদুস সালাম বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছি। মামলার পর সোমবার রাতেই আশরাফুজ্জামান তাজ ও আল মামুনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাদিকুর রহমান বলেন ‘তাজ ও অন্যদের বিরদ্ধে অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত হলেই সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’