রোহিঙ্গাদের এনআইডি দিতে ইসির ল্যাপটপ চুরি করেন কর্মচারী!

Looks like you've blocked notifications!
জাতীয় পরিচয়পত্র জালিয়াতি করে রোহিঙ্গাদের দেওয়ার অভিযোগে গতকাল সোমবার রাতে চট্টগ্রামের নির্বাচন কমিশনের এক কর্মচারীসহ তিনজনকে আটক করা হয়। ছবি : এনটিভি

মিয়ানমারের নাগরিক রোহিঙ্গাদের এ দেশের জাতীয় পরিচয়পত্রে (এনআইডি) অন্তর্ভুক্ত করতে চট্টগ্রাম নির্বাচন কমিশন (ইসি) কার্যালয়ের ল্যাপটপ চুরি করেন অফিস সহকারী জয়নাল আবেদীন। এ অভিযোগে গতকাল সোমবার গভীর রাতে তাঁকে আটক করা হয়। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আরো দুজনকে আটক করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধিত একটি ল্যাপটপও। 

চট্টগ্রামের সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসারের কার্যালয়ে গভীর রাতে এক সংবাদ সম্মেলনে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. হাসানুজ্জামান বলেন, নির্বাচন কমিশনের দুটি তদন্ত দল অভিযান চালিয়ে তাঁদের আটক করে। তাঁরা হলেন আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসের ডবলমুরিং থানার অফিস সহাকারী জয়নাল আবেদীন, তাঁর বন্ধু বিজয় দাশ ও বিজয়ের বোন সোমা দাশ। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে রোহিঙ্গাদের অবৈধভাবে এনআইডি দেওয়ার কাজে তাঁদের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে।

জেলা নির্বাচন কমিশন কর্মকর্তা মো. মুনির হোসাইন খান বলেন, এর আগে এনআইডিতে জালিয়াতি করে রোহিঙ্গাদের অন্তর্ভুক্ত করার ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে কমিশনের দুটি তদন্ত দল কক্সবাজারে অভিযান চালায়। সেখান থেকে এই কাজে জড়িত পাঁচ রোহিঙ্গা দালালকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের দেওয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী জয়নাল ও তাঁর দুই সহযোগীকে আটক করা হয়েছে।

নির্বাচন কমিশনের ভোটার নিবন্ধিত করার সাতটি লাইসেন্স করা ল্যাপটপ ২০১৫ সালে হারিয়ে যায়। অফিস সহকারী জয়নালকে আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানান, একটি ল্যাপটপ তাঁর বন্ধু বিজয়ের কাছে আছে। তখন বিজয়কে ডাকানো হয়। বিজয় জানায়, ল্যাপটপটি তাঁর বোন সীমার কাছে আছে। তখন সীমা ল্যাপটপ নিয়ে এলে তাঁকেও আটক করা হয়।

এই ল্যাপটপ দিয়েই রোহিঙ্গাদের অবৈধভাবে এনআইডিতে অন্তর্ভুক্ত করার তথ্য মিলেছে বলেও জানান জেলা নির্বাচন কমিশন কর্মকর্তা মো. মুনির হোসাইন খান। তিনি বলেন, একটি চক্র এই কাজ করছে। তাঁদের ধরার জন্য অভিযান চালানো হচ্ছে।

গত ১৮ আগস্ট লাকী নামের এক রোহিঙ্গা নারী জেলা নির্বাচন অফিসে জাতীয় পরিচয়পত্র তুলতে গিয়ে পুলিশের হাতে ধরা পড়েন। দেখা যায়, ইসির সার্ভারে জাতীয় পরিচয়পত্রের সব তথ্য সংরক্ষণ থাকলেও হাটহাজারী উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়ন ও নির্বাচন অফিসে তাঁর নামে কোনো কার্ড ইস্যু হয়নি।

এ ঘটনার পর থেকেই সামনে আসতে থাকে রোহিঙ্গাদের এনআইডি কার্ডে অন্তর্ভুক্ত করার নানা জালিয়াতির তথ্য। এ ঘটনার তদন্তে নেমেই এদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে নির্বাচন কমিশনের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে।