পাবনায় ধর্ষকের সঙ্গে থানায় বিয়ে : সেই ওসি বরখাস্ত

Looks like you've blocked notifications!
পাবনায় ধর্ষকের সঙ্গে থানায় বিয়ে দেওয়ার ঘটনায় সাময়িক বরখাস্তকৃত ওসি ওবাইদুল হক। ছবি : সংগৃহীত

পাবনায় গৃহবধূকে গণধর্ষণের পর অভিযুক্ত এক ধর্ষকের সঙ্গে থানায় বিয়ে দেওয়ার ঘটনায় সদর থানার প্রত্যাহার হওয়া ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওবাইদুল হককে সাময়িক বরখাস্ত করেছে পুলিশ সদর দপ্তর। আজ বুধবার বিকেলে বরখাস্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল ইবনে মিজান।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, পুলিশ মহাপরিদর্শক জাবেদ পাটোয়ারীর পক্ষে সহকারী মহাপরিদর্শক (পারসোনাল ম্যানেজমেন্ট) আব্দুল্লাহিল বাকি স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এই সিদ্ধান্ত জানিয়ে সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরে ফ্যাক্স বার্তা পাঠানো হয়েছে। একইসঙ্গে ওবাইদুল হককে চট্টগ্রাম রেঞ্জে সংযুক্তির কথাও জানানো হয়েছে ওই চিঠিতে। 

পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ইবনে মিজান বলেন, পাবনা সদর উপজেলার দাপুনিয়া ইউনিয়নের সাহাপুর যশোদল গ্রামে গণধর্ষণের শিকার গৃহবধূর মামলা না নিয়ে ওসি ওবাইদুল হক এক ধর্ষকের সঙ্গে থানায় বিয়ে দেন। এ ঘটনা গণমাধ্যমে প্রকাশ হলে পুলিশি তদন্তে এ ঘটনায় ওসি ওবাইদুল হক ও এসআই একরামুল হকের সম্পৃক্ততার প্রমাণ মেলে। প্রাথমিকভাবে পাবনার পুলিশ সুপার শেখ রফিকুল ইসলাম গত ১২ সেপ্টেম্বর ওসি ওবাইদুল হককে পাবনা পুলিশ লাইনে প্রত্যাহার ও এসআই একরামুল হককে সাময়িক বরখাস্ত করেন। তদন্ত প্রতিবেদনে পুলিশ সদর দপ্তরে পাঠানোর পর প্রতিবেদনটি পর্যালোচনা শেষে মঙ্গলবার রাতে ওসি ওবাইদুল হককে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত জানিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে পুলিশ সদর দপ্তর।

এদিকে এ ঘটনায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশে গঠিত জেলা প্রশাসকের তদন্তদলের প্রতিবেদনেও ধারাবাহিক গণধর্ষণ, ঘটনা ধামাচাপা দিতে মামলা না নিয়ে পাবনা সদর থানার ওসির নির্দেশে এক ধর্ষকের সঙ্গে বিয়েসহ গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিটি ঘটনার সত্যতা মিলেছে। পাবনা জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদ ওই তদন্ত প্রতিবেদনটিও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কাছে পাঠিয়েছেন।

গত ২৯ আগস্ট রাতে পাবনা সদর উপজেলার দাপুনিয়া ইউনিয়নে তিন সন্তানের জননী এক গৃহবধূকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে রাসেল, দাপুনিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শরিফুল ইসলাম ঘন্টু, ওসমান, হোসেন ও সঞ্জু নামের পাঁচ যুবক আটকে রেখে টানা চারদিন ধরে ধর্ষণ করে।

গত ৫ সেপ্টেম্বর ওই গৃহবধূ বাদী হয়ে পাবনা সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে পুলিশ মামলাটি নথিভুক্ত না করে অভিযুক্ত এক ধর্ষক রাসেলের সঙ্গে থানায় বিয়ে দিয়ে ঘটনাটির নিষ্পত্তির চেষ্টা করে। পরে পাবনার পুলিশ সুপার শেখ রফিকুল ইসলামের নির্দেশে গত ৯ সেপ্টেম্বর মামলা নেওয়ার পর অভিযুক্ত সব আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়।