লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি কাজ করা হয়েছে : পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী

Looks like you've blocked notifications!
পদ্মার ডান তীর শরীয়তপুরের নড়িয়া-জাজিরা এলাকায় ভাঙন রোধে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলার কাজ করছে শ্রমিকরা। ছবি : এনটিভি

পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক বলেছেন, ‘পদ্মার ডান তীর শরীয়তপুরের নড়িয়া-জাজিরা এলাকায় ভাঙন রোধে ২৮ লাখ জিও ব্যাগ ফেলার কথা, সেখানে ৩৩ লাখ জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে। সিসি ব্লকও ফেলা হচ্ছে। এটি তিন বছরের প্রকল্প। এক বছরে যা কাজ করার কথা তারচেয়ে বেশি করেছি। এত বড় প্রকল্প রাতারাতি করা সম্ভব হয় না।’

আজ রোববার দুপুরে নড়িয়া উপজেলার উত্তর কেদারপুর নড়িয়া রক্ষাবাঁধে ভাঙন পরিদর্শনে এসে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক বলেন, ‘নড়িয়া রক্ষাবাঁধে ভাঙন রোধে আমরা কাজ করছি। পানি উন্নয়ন বোর্ড জিও ব্যাগ ও ব্লক ফেলে ভাঙন রোধের চেষ্টা করছে। কাজের কোনো ধরনের ঘটতি হয়নি। উইপোকা ও ইঁদুর গর্ত করার ফলে নিচ দিয়ে সুরঙ্গ হয়ে যায়। সে কারণে নদীর তীরগুলো ভেঙে পড়ে। আগামী বছর থেকে প্রতিটি বাঁধ দেওয়ার আগে ভালোভাবে তীরগুলো পরীক্ষা করা হবে। পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও পানিউন্নয়ন বোর্ড নড়িয়ায় ভাঙনের কারণ তদারকি করছে। ভাঙন রোধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে। আমরা ভাঙন রোধ না হওয়া পর্যন্ত অসহায় মানুষের পাশে থাকব।’

এ সময় পানিসম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম বলেন, ‘গত বছর নড়িয়ায় পাঁচ হাজার ৮১ পরিবার তাঁদের বাড়িঘর হারিয়েছে। পরে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। দ্রুত কাজ করার কারণে এ বছর নড়িয়ার ভাঙন বন্ধ হয়েছে। নদীতে স্রোত ও পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এ বছর মাত্র একটি জায়গায় সমস্যা দেখা দিয়েছে।’

এ সময় শরীয়তপুর জেলা প্রশাসক কাজী আবু তাহের, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ছাবেদুর রহমান খোকা শিকদার, শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী প্রকাশ কৃষ্ণ সরকার, নড়িয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ কে এম ইসমাইল হক, নড়িয়া পৌরসভার মেয়র শহিদুল ইসলাম বাবু রাড়ি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্র জানায়, গত বছর নড়িয়ার আট কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ব্যাপক ভাঙন ছিল। ভাঙনে অনেক পরিবার গৃহহীন হয়েছে। নড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ অসংখ্য স্থাপনা বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙন ঠেকাতে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় এক হাজার ৯৭ কোটি টাকার একটি প্রকল্পর অনুমোদন করে। পানি উন্নয়ন বোর্ড বাংলাদেশ নৌবাহিনীর প্রতিষ্ঠান খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেডকে ওই কাজের দায়িত্ব দেয়। যার মধ্যে ৫৫২ কোটি টাকা ব্যয়ে নড়িয়ার সুরেশ্বর থেকে জাজিরার কায়ুম খাঁর বাজার পর্যন্ত আট দশমিক নয় কিলোমিটার অংশে নদীর তীররক্ষার কাজ। বাকি টাকা দিয়ে নদীর চর খনন করা হবে।

পাউবি সূত্রে আরো জানা যায়, গত বছর ১২ ডিসেম্বর ওই প্রকল্পে নদীর তীররক্ষার কাজ শুরু করা হয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে তিন বছরে। প্রথম বছরে ৪০ লাখ বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হবে। দ্বিতীয় বছর ও তৃতীয় বছরে ৩২ লাখ ৫০ হাজার সিসি ব্লক ফেলা ও প্রকল্পের অন্য কাজ করার কথা। ইতিমধ্যে পাউবোর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বেঙ্গল গ্রুপ নড়িয়া ও জাজিরার সাত কিলোমিটার এলাকায় ৩৩ লাখ বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলেছে। সেইসঙ্গে ২৫ হাজার সিসি ব্লক ফেলেছে।

গত ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে পদ্মা নদীতে পানি ও স্রোত বেড়েছে। বৃহস্পতিবার থেকে রোববার দুপুর পর্যন্ত নড়িয়ার উত্তর কেদারপুর এলাকায় নদীর তীররক্ষা প্রকল্পের ২৮০ মিটার অংশ ধসে যায়।  এমন পরিস্থিতিতে ওই স্থানের ধস ঠেকাতে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা শুরু করে। আজ রোববার দুপুর পর্যন্ত ১১ হাজার জিও ব্যাগ ও পাঁচ হাজার সিসি ব্লক ফেলা হয়েছে।