পুলিশ পাহারায় ভোলায় ইসলামি দুই সংগঠনের পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন

ভোলায় পৃথক দুটি সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন করে মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে ইসলামি দুটি সংগঠন। উভয় পক্ষ নিজেদের সঠিক বলে দাবি করছে। পুলিশ পাহারায় সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন হলেও জনমনে বিরাজ করছে আতঙ্ক।

আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় ভোলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করেন ইমান আক্বিদা সংরক্ষণ কমিটি। সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক মাওলানা তাজউদ্দিন ফারুকী এক লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘আহলে হাদিস নামের একটি সংগঠন সামাজিক শৃঙ্খলা ও মুসলিম ঐক্য বিনষ্ট করার লক্ষ্যে ধর্মীয় বিরোধ সৃষ্টির অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। আর ইসলাম ধর্মের নামে অপপ্রচার চালাচ্ছে।’

লিখিত বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, ‘সদর উপজেলার বাপ্তা ইউনিয়নে এ সংগঠনটি আহলে হাদিস কমপ্লেক্সে নামে একটি আস্তানা নির্মাণের তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। এ ঘটনায় ওই সংগঠনের লোকজন স্থানীয়দের বাধা দিলে তাঁদের নামে বিভিন্ন ধরনের মামলা করে হয়রানি করছে। যা স্থানীয় মানুষদের আরো ক্ষুদ্ধ করে তুলেছে। এসব কর্মকাণ্ড মেনে নেওয়া যায় না। এ সময় সংগঠনের পক্ষে সভাপতি মাওলানা বশির উদ্দিন ও তরিকুল ইসলামসহ বিভিন্ন পর্যায়ের আলেম-ওলামারা উপস্থিত ছিলেন।

অপরদিকে, গতকাল রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় আহলে হাদিস নামের একটি সংগঠন ভোলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলন করে। আহলে হাদিস অনুসারীরা তাঁদের নিরাপত্তার দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। তদের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান আহলে হাদিস অনুসারী মো. নুর-ই আলম। তিনি বলেন, ‘তাঁরা সবাই মিলে ভোলা সদর উপজেলার বাপ্তা ইউনিয়নে একটি মসজিদ নির্মাণ করেন। তবে স্থানীয় কিছু উশৃঙ্খল মানুষ তাঁদের মসজিদটি ভেঙে ফেলে মালামাল লুটপাট করে। এ ঘটনায় একাধিক মামলা হয়েছে যা তদন্ত চলছে। এ অবস্থায় আহলে হাদিস অনুসারীদের বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি ও হুমকি দিচ্ছে স্থানীয় ও বহিরাগত কিছু মানুষ।

এদিকে, গতকাল ২৯ সেপ্টেম্বর সাংবাদিক সম্মেলন চলাকালীন ইসলামবিরোধী আখ্যা দিয়ে আহলে হাদিসের কার্যক্রম বন্ধের দাবিতে ভোলা প্রেসক্লাবের সামনে ইমান আকিদা সংরক্ষণ কমিটির আয়োজনে মানববন্ধনসহ বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হয়। এ সময় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে প্রেসক্লাব চত্বরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়। গত দুদিন ধরে পুলিশি নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে উভয়পক্ষের সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাপ্তায় টান টান উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোনো সময় সংঘাতের আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী। যে কারণে তাঁরা পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

ভোলার পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার বলেন, ‘সংঘাত এড়াতেই আমরা প্রেসক্লাব এলাকায় পুলিশ ও ডিবি মোতায়েন করেছি। তবে পুরো ঘটনা আমরা জানার চেষ্টা করছি। যাতে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে তার জন্য জেলা প্রশাসকের সঙ্গে আলোচনা করে আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ নেব।