প্রতিদিনই টেকনাফ বন্দরে ভিড়ছে পেঁয়াজভর্তি জাহাজ-ট্রলার

Looks like you've blocked notifications!
মিয়ানমার থেকে আসা পেঁয়াজ গতকাল বৃহস্পতিবার কক্সবাজারের টেকনাফ বন্দরে খালাস করা হয়। ছবি : এনটিভি

ভারত থেকে হঠাৎ পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর দেশে চলমান সংকট মোকাবিলায় প্রতিবেশী মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ আমদানির ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। প্রতিদিনই কক্সবাজারের টেকনাফ বন্দরে পেঁয়াজভর্তি জাহাজ ও ট্রলার ভিড়ছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার টেকনাফ বন্দরে মিয়ানমার থেকে আসা ৮০৩ টন পেঁয়াজ খালাস করা হয়েছে। মিয়ানমার থেকে এভাবে আমদানি অব্যাহত থাকলে দেশের চলমান পেঁয়াজের সংকট থাকবে না বলে জানিয়েছেন আমদানিকারকরা। এ ছাড়া দামও সহনীয় পর্যায়ে চলে আসবে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, শ্রমিকের অভাবে খালাসের অপেক্ষায় নাফ নদে ভাসছে ২১ হাজার ৭৫ বস্তার (৮৪৩ টন) পেঁয়াজের কয়েকটি ট্রলার।  

টেকনাফ স্থলবন্দরের শুল্ক কর্মকর্তা আবছার উদ্দিন বলেন, ‘টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে মিয়ানমার থেকে আমদানি করা পেঁয়াজভর্তি ট্রাক দেশের বিভিন্ন এলাকায় রওনা দিয়েছে। প্রতিদিনই ৫০ থেকে ৬০টি ট্রাক পেঁয়াজ নিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে চলে যাচ্ছে। এ ছাড়া মিয়ানমার থেকে আসা ৮৪৩ টন পেঁয়াজ বন্দরে খালাসের অপেক্ষায় রয়েছে।’

শুল্ক কর্মকর্তা আরো জানান, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে এ পর্যন্ত পাঁচ হাজার ৫৯৮ টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। এ ছাড়া মিয়ানমারের আকিয়াব বন্দরে টেকনাফমুখী প্রচুর পেঁয়াজভর্তি জাহাজ আসার অপেক্ষায় রয়েছে। 

টেকনাফ বন্দর দিয়ে পেঁয়াজের আমদানি পরিস্থিতি জানতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব তৌফিকুর রহমানের নেতৃত্বে সরকারের একদল প্রতিনিধি টেকনাফ স্থলবন্দরের কর্মকর্তা ও আমদানিকারকদের সঙ্গে এক বৈঠক করেছে।

বৈঠকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব তৌফিকুর রহমান বলেন, ‘যেসব ব্যবসায়ী পেঁয়াজের মূল্য নিয়ে কারসাজি করে কৃত্রিম সংকটের অপচেষ্টা চালাচ্ছে, তাদের চিহ্নিত করে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ব্যবসায়ীরা অধিক মুনাফার চিন্তা না করে পেঁয়াজের সংকট নিরসনে এগিয়ে এলে সরকার তাদের সব ধরনের সহযোগিতা করবে।’

এ ছাড়া কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেন সরকারের নির্দেশে টেকনাফ স্থলবন্দর পরিদর্শন করে পেঁয়াজের আমদানি পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল বলেন, ‘বাজারদর সহনশীল রাখতে মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ আমদানি নির্বিঘ্ন রাখতে হবে। এরই মধ্যে কক্সবাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজের খুচরা বিক্রয়মূল্য ৬৫ থেকে ৭০ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে।’

জেলা প্রশাসক আরো জানান, মিয়ানমার থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ স্থানীয় বাজারে ৫০ টাকার বেশি দরে বিক্রি না করার জন্য বলা হয়েছে।

টেকনাফ স্থলবন্দরের পেঁয়াজ আমদানিকারকরা জানান, পেঁয়াজ বুকিং দিতে মিয়ানমারে যোগাযোগ করা হয়েছে। তারা সেখানে আগের চেয়ে দাম বাড়িয়ে টনপ্রতি ৮০০ ডলার হাঁকাচ্ছে। তবে এতে তাঁরা রাজি হননি। কিন্তু গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত যেসব পেঁয়াজ মিয়ানমার থেকে টেকনাফ স্থলবন্দরে এসে পৌঁছেছে, তা টনপ্রতি ৫০০ ডলার করে কেনা হয়েছে।