সম্রাটের অফিস ঘুরে যা দেখা গেল

Looks like you've blocked notifications!
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটের কাকরাইলের কার্যালয়ের ভেতরের চিত্র। ছবি : এনটিভি

অবশেষে সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি মুকুটহীন সম্রাট ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট। আজ রোববার ভোরে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার আলকারা ইউনিয়নের কুঞ্জশ্রীপুর গ্রামে পরিবহন ব্যবসায়ী মুনির চৌধুরীর বাড়ি থেকে সম্রাট ও তাঁর সহযোগী ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সহসভাপতি এনামুল হক আরমানকে আটক করার কথা জানায় র‍্যাব। এরপর সকাল ৯টায় সম্রাটকে নিয়ে আসা হয় র‍্যাব সদর দপ্তরে।

ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটের গ্রেপ্তারের পর থেকে গণমাধ্যম কর্মীরা তাঁর কাকরাইলের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এসে জড়ো হন। বাড়তে থাকে উৎসুক মানুষের ভিড়ও। এরপর বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতি।

দুপুর ১টার আগে সম্রাটকে নিয়ে আসা হয় কাকরাইলে তাঁর রাজনৈতিক কার্যালয়ে। এরপর ১টা ৩৫ মিনিটে র‍্যাবের ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলমের নেতৃত্বে অফিসের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন র‍্যাব সদস্যরা। এরপর ১টা ৪০ মিনিটে সম্রাটকে গাড়ি থেকে নামিয়ে ১টা ৪৩ মিনিটে ভেতরে প্রবেশ করেন র‍্যাবের আরো কিছু সদস্য।

এরপর সম্রাটের অফিসে তল্লাশি চালান র‍্যাবের সদস্যরা। প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টার অভিযান শেষে সম্রাটের কার্যালয়ে ডাকা হয় গণমাধ্যম কর্মীদের। এরপর সাততলা ভবনের বিভিন্ন রুম ঘুরিয়ে দেখানো হয়। এসব রুমে প্রবেশ করে এনটিভি অনলাইনের এ প্রতিবেদকও। সম্রাটের অফিসের চারতলায় মূলত তাঁর অফিস রুম হিসেবে ব্যবহার হতো।

সেখান থেকে র‍্যাব সদস্যরা দুটি ক্যাঙ্গারুর চামড়া, বেশ কিছু ইয়াবা, বিদেশি মদের বোতল, বিভিন্ন মানুষকে নির্যাতনের জন্য ব্যবহৃত ইলেকট্রনিক শক মেশিন, একটি অবৈধ পিস্তলসহ আরো বেশ কিছু জিনিস উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া এ ফ্লোরের বিভিন্ন রুমে খাবার ঘর, বিশ্রাম বা রাত্রিযাপনের জন্য দামি বিছানা ও আসবাবপত্র দেখা যায়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তল্লাশির ফলে এসব জিনিস রয়েছে রুমগুলোতে ছড়ানো ছিটানো।

এ ছাড়া উপরের তথা পঞ্চম তলায় গিয়ে দেখা যায়, বেশ কয়েকটি আলিশান রুম। মূলত এখানে যুবলীগ নেতা সম্রাট বিশ্রাম নিতেন বলে র‍্যাবের এক সদস্য জানিয়েছেন। পঞ্চম তলার একটি ইউনিটের তিনটি রুমের একটিতে থাকতেন তিনি। তাঁর বিশ্রামের রুমটি আধুনিক আসবাবপত্রে সজ্জিত। তবে তল্লাশির কারণে সব জিনিসপত্র চারদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। এই ইউনিটে ঢুকতেই  প্রথমেই একটি অত্যাধুনিক রকিং চেয়ার। এ ছাড়া আছে সাজানো সোফা সেট, খাবার টেবিলসহ সুন্দর সাজানো আসবাব, যেটিতে সম্রাট বসে বিশ্রাম নিতেন। এ ছাড়া ওয়াশরুমটিও সাজানো হয়েছে বিদেশি সরঞ্জামে, ভেতরে আছে একটি আধুনিক তিন দরজার আলমারি।

আরেকটি ফ্লোরেও রয়েছে বেশ কিছু আসবাবপত্র। এখানেও আছে বিছানাপত্র, খাবার টেবিলসহ হরেক রকমের আসবাব। এ ফ্লোরে থাকার ঘরটিতে কে থাকত সেটি জানা যায়নি। তবে এক র‍্যাব সদস্য বললেন, হয়তো সম্রাটের কাছের কেউ এ রুমে অবস্থান করতেন।

এ ছাড়া সম্রাটের অফিসের ছাদের একপাশে আছে একটি হল রুম। এখানেই বসে নিজস্ব লোকদের সঙ্গে বৈঠক রকতেন তিনি। এক রুমের এই ঘরটি অত্যন্ত পরিপাটি, সাজানো গুছানো।

আর অফিসে ঢুকতেই হাতের বাঁ পাশে রয়েছে বিশাল একটি ঘর। এখানে ঢুকতেই চোখে পড়বে একটা বিশাল রুম। যেখানে রয়েছে বিভিন্ন শোকেসে সাজানো ক্রেস্ট, বই, সুভ্যেনির, বাধাই করা ছবি। এ ঘরের ডান পাশে রয়েছে উপরে উঠার সিঁড়ি। যেটি বেয়ে উঠা হয় সম্রাটের অফিস।