২২ দিন ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ
আগামী ৯ থেকে ৩০ অক্টোবর ২২ দিন ইলিশ প্রজননক্ষেত্রের অন্তর্গত সাত হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকাসহ দেশব্যাপী ইলিশ আহরণ, পরিবহন, বাজারজাতকরণ, ক্রয়-বিক্রয়, মজুদ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
আজ সোমবার সচিবালয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু বলেন, ‘সারা বিশ্বের মোট উৎপাদিত ইলিশের প্রায় ৮০ শতাংশ আহরিত হয় এ দেশের নদ-নদী, মোহনা ও সাগর থেকে। বিগত ১০ বছরে ইলিশ উৎপাদনের গড় প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ৫ দশমিক ২৬ শতাংশ। ছয় লাখ লোক ইলিশ আহরণে সরাসরি নিয়োজিত এবং ২০-২৫ লাখ লোক ইলিশ পরিবহন, বিক্রয়, জাল ও নৌকা তৈরি, বরফ-উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ, রপ্তানি ইত্যাদি কাজে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সম্প্রতি পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেড মার্কস অধিদপ্তর দেশের জাতীয় মাছ ইলিশের ভৌগোলিক নির্দেশক নিবন্ধন প্রদান করেছে। ইলিশ আহরণে বাংলাদেশ বিশ্বে সর্বশীর্ষে। পৃথিবীর প্রায় দু-তৃতীয়াংশের অধিক ইলিশ উৎপাদনকারী হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্বে পরিচিত। তাই ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি ও ত্বরান্বিত করতে চলতি বছর ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে, অর্থাৎ ৯ থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত সারা দেশে মোট ২২ দিন ইলিশ আহরণ, পরিবহন, বাজারজাতকরণ, ক্রয়-বিক্রয় ও মজুদ নিষিদ্ধ করে এরই মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে।
‘ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান ২০১৯’-এর আওতায় উপকূলীয় ইলিশ প্রজননক্ষেত্রের অন্তর্গত সাত হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকাসহ দেশব্যাপী ইলিশ আহরণ, পরিবহন, বাজারজাতকরণ, ক্রয়-বিক্রয়, মজুদ ও বিনিময় নিষিদ্ধ করা হয়েছে বলে প্রতিমন্ত্রী উল্লেখ করেন।
প্রতিমন্ত্রী জানান, চলতি বছর এরই মধ্যে মা-ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ হওয়ার আগেই দেশের ইলিশসমৃদ্ধ ৩৫ জেলার ১৪৭ উপজেলায় মোট চার লাখ আট হাজার ৩২৯টি জেলে পরিবারকে ২০ কেজি হারে মোট আট হাজার ১৬৭ টন খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। প্রধান প্রজনন মৌসুমে ইলিশ আহরণ এবং জাটকাধরা নিষিদ্ধকালীন জাটকা ও ইলিশসমৃদ্ধ এলাকার জেলেদের জন্য প্রতিবছর পরিবারপ্রতি ৪০ কেজি হারে খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। জাটকাধরা নিষিদ্ধকালীন আট মাস দেশের ১৭ জেলার ৮৫টি উপজেলায় জাটকা আহরণে বিরত মোট দুই লাখ ৪৮ হাজার ৬৭৪টি জেলে পরিবারে ৪০ কেজি হারে চার মাসের জন্য প্রায় ৩৯ হাজার ৭৮৮ টন ভিজিএফ খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় এ বছরই প্রথমবারের মতো সামুদ্রিক জলসীমায় ৬৫ দিনের মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধকালে মোট চার লাখ ১৪ হাজার ৭৮৪টি জেলে পরিবারকে মোট ৩৫ হাজার ৯৪৮ টন খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।’