দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান অর্থনীতিকে ত্বরান্বিত করবে : রাষ্ট্রপতি

Looks like you've blocked notifications!

রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ সোমবার আশা প্রকাশ করেছেন যে, দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে সরকারের চলমান অভিযান ইতিবাচকভাবে দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে এবং অবকাঠামোসহ উন্নয়নের সব ক্ষেত্রে গুণগত মান নিশ্চিত করবে।

সংবাদ সংস্থা ইউএনবি জানায়, বিশ্ব বসতি দিবসে উপলক্ষে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত তিন দিনের আবাসন মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য প্রদানকালে তিনি এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এ বছরের দিবসটি পালনের প্রতিপাদ্য হলো ‘বর্জ্যকে সম্পদে পরিণত করতে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার’।

রাষ্ট্রপতি বলেন, জনগণের টাকায় বাস্তবায়িত প্রকল্প কাজের গুণগত মানের ব্যাপারে কোনো ধরনের ছাড় বরদাশত করা হবে না।

ব্যবসায়ীরা যদি সৎভাবে ব্যবসা করে তবে সরকার পাশে থাকবে এবং সব ধরনের সহযোগিতা দেবে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন, ‘আপনি যত বড় নেতা, কর্মকর্তা, প্রকৌশলী, ব্যবসায়ী বা ঠিকাদার হোন না কেন, অনিয়ম-দুর্নীতি করে পার পাবেন না।’

আবদুল হামিদ বলেন, কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর দায় সরকার নেবে না বরং তাদেরই তাদের দায় নিতে হবে। ‘প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বাস্তবায়নকারী কর্তৃপক্ষ এবং সংশ্লিষ্ট সবাইকে দায়িত্ব নিতে হবে। প্রকল্পের শুরু থেকে শেষ পযর্ন্ত প্রতিটি কাজের জন্য কর্মকর্তা, প্রকৌশলী ও সংশ্লিষ্ট সবার দায়িত্ব সুনির্দিষ্টভাবে নির্ধারণ করতে হবে যাতে প্রকল্পে কোনো ধরনের অনিয়ম বা দুর্নীতি হলে তাৎক্ষণিকভাবে চিহ্নিত করা যায় এবং দায়ী ব্যক্তিকে শাস্তির আওতায় আনা যায়।’

কাজের গুণমান এবং প্রকল্পের অর্থের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে কঠোর পর্যবেক্ষণের গুরুত্বের ওপর জোর দিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘পদ্মা সেতুর মতো বিশাল প্রকল্প নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়িত হচ্ছে। এমআরটির (ম্যাস র‍্যাপিড ট্রানজিট) কাজ দ্রুত শেষ হবে, ইনশা আল্লাহ…কিন্তু কিছু অসাধু লোকের জন্য জাতির এ অর্জন ম্লান হতে পারে না।’

ছোট ক্রয় বাদে সব সরকারি কাজ ঠিকাদাদের মাধ্যমে হয় উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ব্যবসার নামে প্রতারণা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। ‘কাজ না করে বা আংশিক কাজ করে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অশুভ আঁতাত করে বিল নেওয়ার চেষ্টা করবেন না। অহেতুক বিলম্ব করে প্রকল্প ব্যয় বাড়িয়ে ফায়দা লুটবেন- এ ধরনের মনমানসিকতা পরিহার করতে হবে।’

আবদুল হামিদ বর্জ্যকে সম্পদে পরিণত করার ওপর জোর দেন। ‘পৃথিবী এখন অনেক এগিয়েছে। আমরা তৃতীয় শিল্প বিপ্লব থেকে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যুগে পদার্পণ করেছি।

অন্যদিকে বিশ্ব পঞ্চম শিল্প বিপ্লবের দিকে ঝুঁকছে। তাই পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে আমাদের পরিবেশে প্রতিদিন জমা হওয়া বর্জ্যকে সম্পদে রূপান্তর করতে প্রয়োজন সর্বাধুনিক প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার এবং উদ্ভাবনীমূলক ধারণা।’ তিনি মানবজাতি ও প্রাণিসম্পদকে বাঁচাতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় গুরুত্ব দেয়ার জন্য থ্রি-আরের পরিবর্তে ফাইভ-আর (পুনর্বিবেচনা, অস্বীকার, পুনরায় ব্যবহার, হ্রাস এবং পুনর্ব্যবহার) অনুসরণ করার জন্য আহ্বান জানান।

রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র প্রাঙ্গণে ফিতা কেটে তিন দিনের মেলার উদ্বোধন করেন।

অনুষ্ঠানে গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, সচিব শহীদ উল্লাহ খন্দকার, জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী মিয়া সেপ্পো এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন প্রমুখ বক্তব্য দেন।