ফুটেজ দিয়ে মুক্ত হলেন পুলিশ কর্মকর্তারা

Looks like you've blocked notifications!
বুয়েটের শেরেবাংলা হলে অবরুদ্ধ দশা থেকে মুক্তি পেয়ে প্রভোস্টের কক্ষ থেকে বের হন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার কৃষ্ণপদ রায়সহ অন্যরা। ছবি : মোহাম্মদ ইব্রাহিম

বুয়েটের ছাত্র আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনার ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার ফুটেজ শিক্ষার্থীদের দিয়ে প্রায় পৌনে তিন ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর মুক্ত হলেন পুলিশ কর্মকর্তারা।

আজ সোমবার সন্ধ্যায় বুয়েটের শেরেবাংলা হলে যান ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) দুই অতিরিক্ত কমিশনার আবদুল বাতেন ও কৃষ্ণপদ রায়সহ অন্য পুলিশ সদস্যরা।

বিকেল ৫টা ৫৫ মিনিটে কৃষ্ণপদ রায় সেখানে সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, ‘আমরা ভিডিও ফুটেজ দেখে নয়জনকে আটক করেছি। আরো যারা আছে তাদের আটকের চেষ্টা চলছে। আদালতের পর্যবেক্ষণ দেখে আমরা পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করব। আবরার ফাহাদের বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা চকবাজার থানা আসবেন এবং মামলা করবেন।’

এরপর কৃষ্ণপদ রায় ও অন্য পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল ত্যাগ করতে চাইলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা তাঁদের ঘিরে ধরে। স্লোগান দেয়, ‘ফুটেজ চাই, ফুটেজ চাই’। ফুটেজ ছাড়া কাউকে যেতে দেওয়া হবে না বলে পরিষ্কার জানায় শিক্ষার্থীরা। তখন কৃষ্ণপদ রায় শিক্ষার্থীদের শান্ত করার চেষ্টা করে বলেন, ‘আদালত একটি পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন। আমরা কাজ করছি। এখন ফুটেজ দেওয়া যাবে না।’

এর পরই বুয়েটের শিক্ষার্থীরা আরো জোরে জোরে ‘ফুটেজ চাই, ফুটেজ চাই’ বলে চিৎকার করতে থাকে। সে সময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণপদ রায়কে গোল হয়ে ঘিরে ধরেন। গোল করে ধরা অবস্থায় তাঁকে সন্ধ্যা ৬টার দিকে শেরে বাংলা হল প্রভোস্টের কক্ষে নিয়ে যায় শিক্ষার্থীরা। তারপর থেকে তিনিসহ অন্য পুলিশ কর্মকর্তারা সেখানে অবস্থান করেন। ওই কক্ষের দুই পাশের দরজার পাশে শিক্ষার্থীরা অবস্থান নেয় এবং ‘ফুটেজ চাই’ স্লোগান দিতে থাকে।

পুলিশ কর্মকর্তারা অবরুদ্ধ থাকা অবস্থায় ডিএমপি থেকে অন্তত ১০০ জন পুলিশ এসে হাজির হয় হলের ভেতরে। দুই লাইনে সারিবদ্ধ অবস্থায় তারা অবস্থান নেয়। এভাবে অনেক সময় দাঁড়িয়ে থাকার পর সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটে সারিবদ্ধ অবস্থায় দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশ সদস্যরা অতিরিক্ত কমিশনার আবদুল বাতেন ও কৃষ্ণপদ রায়কে মুক্ত করতে হল প্রভোস্টের কক্ষের দিকে এগিয়ে গেলে শিক্ষার্থীরা বাধা দেয়। বাধার মুখে পুলিশ সরে আসতে বাধ্য হয়।

বুয়েটের ছাত্র আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সরবরাহের দাবিতে আজ সোমবার সন্ধ্যায় শেরেবাংলা হলে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার আবদুল বাতেন ও কৃষ্ণপদ রায়সহ অন্যদের অবরুদ্ধ করে রাখে শিক্ষার্থীরা। ছবি : মোহাম্মদ ইব্রাহিম

এরপর ঘটনাস্থলে আরো পুলিশ সদস্য হাজির হতে শুরু করে। তারপর অন্তত ১৫০ জন পুলিশ সদস্য রাত ৮টা ৫০ মিনিটের দিকে হাতে লাঠি ও অস্ত্র নিয়ে বাঁশি বাজাতে বাজাতে পুনরায় হল প্রভোস্টের কক্ষের দিকে এগিয়ে যায়। সে সময় হলের ভেতরে উত্তেজনা বিরাজ করতে থাকে। কিন্তু শিক্ষার্থীরা সবাই সারিবদ্ধ অবস্থায় পুলিশের সামনে দাঁড়িয়ে গিয়ে স্লোগান দিতে থাকে, ‘ক্যাম্পাসে পুলিশ কেন?, পুলিশ হটাও, পুলিশ হটাও, ভাই হত্যার বিচার চাই, সিসিটিভির ফুটেজ চাই’ স্লোগান দিতে দিতেই মিনিট দুয়েকের ভেতরে হলের ভেতরে অবস্থান করা সব পুলিশ সদস্যকে ঠেলতে ঠেলতে নিয়ে যান গেটের বাইরের দিকে। সে সময় পুলিশ-শিক্ষার্থী হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে। কিন্তু পুলিশ হলের বাইরে বের হয়ে যেতে বাধ্য হয়। তারপর শিক্ষার্থীরা গেটে তালা লাগিয়ে দেয়। এরপর থেকে গেটের ভেতরে কাউকে ঢুকতে কিংবা বের হতে দেয়নি শিক্ষার্থীরা।

সে সময় পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডাও হয় শিক্ষার্থীদের। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দু-একজন ভেতরে ঢুকতে চাইলেও ঢুকতে দেয়নি শিক্ষার্থীরা। সে সময় পুলিশকে উদ্দেশ করে শিক্ষার্থীরা বলতে থাকেন, ‘আপনারা নিশ্চিন্ত থাকেন। ভেতরে থাকা স্যারদের কিছুই হবে না, দায়িত্ব আমাদের। আমরা শুধু ফুটেজ চাই, ফুটেজ পেলেই স্যারদের মুক্ত করে দেব।’

তারপর থেকে পুরো এক ঘণ্টা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার আবদুল বাতেন ও কৃষ্ণপদ রায়সহ অন্য কয়েকজন পুলিশ সদস্য ভেতরে অবস্থান করেন। সর্বশেষ ৮টা ৩৫ মিনিটে শিক্ষার্থীদের হাতে সিসিটিভির ফুটেজ তুলে দিতে বাধ্য হন পুলিশ কর্মকর্তারা ও হল কর্তৃপক্ষ। এরপর ৮টা ৪০ মিনিটের দিকে পুলিশ কর্মকর্তাদের মুক্ত করে দেয় শিক্ষার্থীরা। সে সময় শিক্ষার্থীরা নিরাপত্তা বলায় তৈরি করে পুলিশ কর্মকর্তাদের হল গেটের বাইরে পর্যন্ত রেখে আসে।  

প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনামতে, গতকাল রোববার রাত ৮টার দিকে বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী এবং শেরেবাংলা হলের আবাসিক ছাত্র আবরার ফাহাদকে হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে ডেকে এনে জেরা করেন ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা। তাঁরা শিবির সন্দেহে আবরার ফাহাদকে বেধড়ক পেটান। ওই সময় বুয়েট ছাত্রলীগের আইনবিষয়ক উপসম্পাদক ও সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র অমিত সাহা, উপদপ্তর সম্পাদক ও কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র মুজতবা রাফিদ, সমাজসেবাবিষয়ক উপসম্পাদক ও বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র ইফতি মোশারফ ওরফে সকালসহ তৃতীয় বর্ষের আরো কয়েকজন শিক্ষার্থী ছিলেন।

বুয়েটের ছাত্র আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সরবরাহের দাবিতে আজ সোমবার সন্ধ্যায় শেরেবাংলা হলে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার আবদুল বাতেন ও কৃষ্ণপদ রায়সহ অন্যদের অবরুদ্ধ করে রাখে শিক্ষার্থীরা। ছবি : মোহাম্মদ ইব্রাহিম

পরে ওই কক্ষে দ্বিতীয় দফা আবরারকে পেটানো হয়। ওই সময় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এবং মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী অনিক সরকার, ক্রীড়া সম্পাদক ও নেভাল আর্কিটেকচার অ্যান্ড মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের একই বর্ষের মেফতাহুল ইসলাম জিয়নসহ কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন। রাত ৩টার দিকে আবরারকে মৃত ঘোষণা করেন বুয়েটের চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. মো. মাশুক এলাহী।

মারধরের সময় ওই কক্ষে উপস্থিত ছিলেন বুয়েট ছাত্রলীগের সহসম্পাদক আশিকুল ইসলাম বিটু। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আবরারকে শিবির সন্দেহে রাত ৮টার দিকে হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে ডেকে আনা হয়। সেখানে আমরা তাঁর মোবাইল ফোনে ফেসবুক ও মেসেঞ্জার চেক করি। ফেসবুকে বিতর্কিত কিছু পেজে তাঁর লাইক দেওয়ার প্রমাণ পাই। সে কয়েকজনের সঙ্গে যোগাযোগও করেছে। শিবির সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাই। আবরারকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন বুয়েট ছাত্রলীগের উপদপ্তর সম্পাদক ও কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মুজতবা রাফিদ, উপসমাজসেবা সম্পাদক ইফতি মোশাররফ সকাল ও উপ-আইন সম্পাদক অমিত সাহা। প্রমাণ পাওয়ার পর চতুর্থ বর্ষের ভাইদের খবর দেওয়া হয়। খবর পেয়ে বুয়েট ছাত্রলীগের ক্রীড়া সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার সেখানে আসেন। একপর্যায়ে আমি রুম থেকে বের হয়ে আসি। এরপর হয়তো ওরা মারধর করে থাকতে পারে। পরে রাত ৩টার দিকে শুনি আবরার মারা গেছে।’

বুয়েটের শেরেবাংলা হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাফর ইকবাল বলেন, ‘আমরা সিসিটিভির ফুটেজ দেখছি। ঘটনায় কারা জড়িত, তা শনাক্ত করা হচ্ছে।’

হলের এক আবাসিক শিক্ষার্থী সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৫ ব্যাচের হাসিবুর রহমান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘সে খুবই ভদ্র ছেলে। পড়ালেখা ছাড়া কিছুই বুঝত না।’

আবরার ফাহাদের গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের রায়ডাঙ্গায়। তবে কুষ্টিয়া শহরের পিটিআই রোডে তাঁর বাবা-মা ও ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ থাকেন। আবরারের বাবার নাম বরকত উল্লাহ। আবরার ফাহাদের মৃত্যুতে কান্নায় ভেঙে পড়েছে স্বজনরা। মা ছালেহা খাতুন মানতেই পারছেন না তাঁর ছেলে আর নেই। ছেলের কথা মনে করে বারবার জ্ঞান হারাচ্ছেন তিনি।

আবরার ফাহাদের ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ শোকে পাথর হয়েছিলেন। বিশ্বাস করতে পারছিলেন না তাঁর ভাই আর নেই। গতকাল রোববার রাতে ছেলে আবরার ফাহাদকে ফোন দিয়েছিলেন তাঁর মা ছালেহা। আবরার ধরেননি। এর কিছুক্ষণ পরই শোনেন ছেলে অসুস্থ, তাঁর কিছুক্ষণ পরে শোনেন ছেলে আর নেই।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, স্কুলজীবন থেকেই আবরার মেধাবী। কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে তাঁর কোনো সম্পৃক্ততা নেই।

আবরারের ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ বলেন, ‘কাল রাতে ভাইয়ার মোবাইল ফোনে কয়েকবার ফোন দেওয়া হয়। ফোন না ধরায় টেনশন হচ্ছিল। সকালে ভাইয়ার রুমমেট হয়তো ফোন করে বলে যে ফাহাদ অসুস্থ, ঢাকায় কেউ থাকলে আসতে বলেন। একটু পরে ফোন করে বলে যে ফাহাদ আর নেই। তারপর ঢাকায় আমার আত্মীয়রা গিয়ে ব্যাপারটি নিশ্চিত করেছে।’

‘ভাইয়া সব সময় পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত থাকতেন। সেভাবে কারো সঙ্গেই মিশতেন না। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তেন। রাজনৈতিক কোনো কিছুর মধ্যে ছিলেন না। জামায়াত বা শিবিরের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না। ইসলামী উগ্রবাদী কারো সঙ্গেও তিনি ছিলেন না।’

‘অনেক ছেলেই তো ছিল, তাঁকে রুম থেকে নিয়ে গেল, পেটানো হলো সেটা কেউ দেখতে পেল না?’ বলছিলেন আবরার ফাইয়াজ।

এদিকে আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা। আজ সোমবার দুপুরে ঢাবির ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) রাজু ভাস্কর্যের সামনে প্রথমে মানববন্ধন করা হয়। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি নুরুল হক নুরের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকশ শিক্ষার্থী। মিছিলটি বুয়েট ক্যাম্পাসে গিয়ে শেষ হয়।

মিছিল থেকে আবরার ফাহাদ হত্যায় কারা জড়িত, তা খুঁজে বের করে দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানানো হয়। হত্যার জন্য বুয়েট ছাত্রলীগকে দায়ী করে শিক্ষার্থীরা বলেন, ভিন্নমত পোষণ করায় কাউকে হত্যা করা কোনোভাবে মানা যায় না।

এ ব্যাপারে জানতে ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় বলেন, ছাত্রলীগ কখনো কোনো হত্যাকাণ্ডের রাজনীতিতে বিশ্বাস ও সমর্থন করে না। যারা এ ঘটনায় জড়িত তাদের অবশ্যই বহিষ্কার করা হবে। এবং প্রশাসন যাতে সুষ্ঠুভাবে তদন্ত করতে পারে সে সহযোগিতা করা হবে।

নাহিয়ান নিহত আবরার ফাহাদের পরিবার ও সহপাঠীদের প্রতি সমবেদনা জানান। বুয়েটের ঘটনা তদন্তে দুই সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি ইয়াজ আল রিয়াদ ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক আসিফ তালুকদার। তদন্ত কমিটির সদস্যদের আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সুপারিশসহ তদন্ত প্রতিবেদন কেন্দ্রীয় দপ্তর সেলে জমা দিতে বলা হয়েছে।

রাতে ১১ জনকে স্থায়ী বহিষ্কার

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যার ঘটনায় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেলসহ ১১ জনকে সংগঠন থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। আজ সোমবার রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয় ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের এক জরুরি সিদ্ধান্ত মোতাবেক জানানো যাচ্ছে যে, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে সাম্প্রতিক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটির নিকট প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে উক্ত অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ১১ জনকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হলো।

বহিষ্কার হওয়া নেতারা হলেন বুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল, সহসভাপতি মুহতাসিম ফুয়াদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রবিন, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার, ক্রীড়া সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, সাহিত্য সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির, উপসমাজসেবা সম্পাদক ইফতি মোশাররফ সকাল, উপদপ্তর সম্পাদক মুজতবা রাফিদ, সদস্য মুনতাসির আল জেমি, এহতেসামুল রাব্বি তানিম ও মুজাহিদুর রহমান।

আবরার ফাহাদ হত্যার ঘটনায় এর আগে বুয়েট ছাত্রলীগের ১৯ জনকে আসামি করে রাজধানীর চকবাজার থানায় মামলা করেন তাঁর বাবা বরকত উল্লাহ।

বরকত উল্লাহ জানান, ছেলে হত্যার ঘটনায় সিসিটিভি ফুটেজ দেখে শনাক্ত করে ১৯ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। আবরার ফাহাদের মরদেহ বুয়েটে নেওয়া হয়েছে। সেখানে জানাজা শেষে মরদেহ গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ায় নেওয়া হবে।