আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার আসামিদের পরিচয়

Looks like you've blocked notifications!
বুয়েটছাত্র আবরার ফাহাদ রাব্বী। ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরার ফাহাদ রাব্বী হত্যার ঘটনায় তাঁর বাবা মো. বরকত উল্লাহ গত সোমবার রাতে রাজধানীর চকবাজার থানায় হত্যা মামলা করেন। এতে বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের ১৯ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে। পূর্ব শত্রুতার জের ধরে আসামিরা পরস্পর যোগসাজসে পূর্বপরিকল্পিতভাবে ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করে মামলার এজাহারে বলা হয়েছে।

মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল। দ্বিতীয় আসামি হলেন যুগ্ম সম্পাদক মুহতাসিম ফুয়াদ।

মামলার পর বরকত উল্লাহ জানান, ছেলে হত্যার ঘটনায় সিসিটিভি ফুটেজ দেখে শনাক্ত করে ১৯ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে।

মামলার এজাহারে যা আছে

মামলার বাদী আবরার ফাহাদ রাব্বীর বাবা বরকত উল্লাহ এজাহারে উল্লেখ করেন, যথাবিহীত সম্মান প্রদর্শন পূর্ব বিনীত নিবেদন এই যে, আমি নিম্ন স্বাক্ষরকারী মো. বরকত উল্লাহ হাজির হয়ে এই মর্মে এজাহার দায়ের করছি যে, আমার ছেলে আবরার ফাহাদ রাব্বী (২২), বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকার ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। বুয়েটের শেরে বাংলা আবাসিক হলের নিচতলার ১০১১ নম্বর কক্ষে থেকে লেখাপড়া করে। আমি লোক মারফত জানতে পারি যে, উক্ত ছাত্রাবাসের কতিপয় ছাত্র আমার ছেলেকে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে মারধর করে গুরুতর জখম করে মৃত্যু ঘটিয়েছে। উক্ত সংবাদ পেয়ে আমি তাৎক্ষণিকভাবে ঢাকায় এসে বুয়েট শেরে বাংলা হলের কর্তৃপক্ষের সাথে, বুয়েটের কতিপয় ছাত্রের সাথে আলোচনা করে ও ভিডিও ফুটেজ দেখে জানতে পারি যে ১৯ জন আসামিসহ আরো অজ্ঞাতনামা কয়েকজন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ৬ অক্টোবর ২০১৯ রাত ৮টা ৫ মিনিটে আমার ছেলেকে বুয়েট শেরে বাংলা হলের রুম নম্বর ১০১১ থেকে হত্যার উদ্দেশে ডেকে নিয়ে ৭ অক্টোবর ২০১৯ রাত আনুমানিক আড়াইটা পর্যন্ত হলের ২০১১ ও ২০০৫ নম্বর রুমের ভেতরে নিয়ে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ক্রিকেট স্ট্যাম্প ও লাঠিসোঁটা দিয়ে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় প্রচণ্ড মারধর করে যার ফলে ঘটনাস্থলেই আমার ছেলে মারা যায়। আমার ছেলের মৃত্যু নিশ্চিত করে আসামিরা উক্ত ভবনের দ্বিতীয় তলার সিঁড়িতে আমার ছেলের মৃতদেহ ফেলে রাখে। পরে কতিপয় ছাত্র আমার ছেলের মৃতদেহ সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার আমার ছেলে আবরার ফাহাদ রাব্বীকে মৃত ঘোষণা করেন।

বাদী বরকত উল্লাহ এজাহারে বলেন, ‘আমি ঢাকায় পৌঁছে বুয়েট হল কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বুয়েটের কতিপয় ছাত্রদের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করে ও ভিডিও ফুটেজ দেখে এবং এই বিষয় নিয়ে আমার আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে থানায় এসে এজাহার দায়ের করতে সামান্য বিলম্ব হলো।

পূর্ব শত্রুতার জের হিসেবে পরস্পর যোগসাজশে বর্ণিত আসামিরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আমার ছেলে আবরার ফাহাদ রাব্বীকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করেছে। অতএব, এই বিষয়ে মামলা রুজু করে আইনগত ব্যাবস্থা গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ করা হলো।’

মামলার আসামি যারা

আবরার ফাহাদ রাব্বী হত্যা মামলার ১ নম্বর আসামি বুয়েট ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল (সামনে চশমা পরা গোলচিহ্নিত) ৮ অক্টোবর মঙ্গলবার ঢাকা চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে। ছবি : স্টার মেইল

মামলার ১ নম্বর আসামি হলেন বুয়েট ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল (২৪)। তিনি ফরিদপুরের সালথা উপজেলার রাংগারদিয়া গ্রামের মো. রুহুল আমিন ও ঝর্না আমিনের ছেলে। রাসেল বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৩তম ব্যাচের ছাত্র। তিনি বুয়েটের শেরেবাংলা হলের ৩০১২ নম্বর কক্ষের বাসিন্দা। আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে তিনি বর্তমানে পাঁচ দিনের রিমান্ডে আছেন।

আবরার ফাহাদ রাব্বী হত্যা মামলার ২ নম্বর আসামি বুয়েট ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সহসভাপতি মুহতাসিম ফুয়াদ (গোলচিহ্নিত) ৮ অক্টোবর মঙ্গলবার ঢাকা চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে। ছবি : স্টার মেইল

২ নম্বর আসামি মুহতাসিম ফুয়াদ (২৩) হলেন বুয়েট ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সহসভাপতি। তিনি ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার লাঙ্গলমোড়া গ্রামের মো. আবু তাহের ও সালমা ইয়াসমিনের ছেলে। ফুয়াদ বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৪তম ব্যাচের ছাত্র। তিনি শেরেবাংলা হলের ২০১০ নম্বর কক্ষের বাসিন্দা। আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে তিনি বর্তমানে পাঁচ দিনের রিমান্ডে আছেন।

আবরার ফাহাদ রাব্বী হত্যা মামলার ৩ নম্বর আসামি বুয়েট ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মো. অনিক সরকার (গোলচিহ্নিত) ৮ অক্টোবর মঙ্গলবার ঢাকা চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে। ছবি : স্টার মেইল

মামলার ৩ নম্বর আসামির নাম মো. অনিক সরকার (২২)। তিনি বুয়েট ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক। তিনি রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার বড়ইকুড়ি গ্রামের মো. আনোয়ার হোসেন ও শাহিদা বেগমের ছেলে। শেরেবাংলা হলের ছাত্র অনিক  বুয়েটের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষে পড়েন। আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে তিনি বর্তমানে পাঁচ দিনের রিমান্ডে আছেন।

আবরার ফাহাদ রাব্বী হত্যা মামলার ৪ নম্বর আসামি বুয়েট ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মেহেদী হাসান রবিন (গোলচিহ্নিত) ৮ অক্টোবর মঙ্গলবার ঢাকা চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে। ছবি : স্টার মেইল

মামলার ৪ নম্বর আসামি হলেন মো. মেহেদী হাসান রবিন (২২)। তিনি বুয়েট ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদক। তিনি রাজশাহীর পবা উপজেলার কাপাসিয়া গ্রামের মো. মাকসুদ আলী ও রাশিদা বেগমের ছেলে। শেরেবাংলা হলের এই বাসিন্দা কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৫তম ব্যাচের ছাত্র। আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে তিনি বর্তমানে পাঁচ দিনের রিমান্ডে আছেন।

আবরার ফাহাদ রাব্বী হত্যা মামলার ৫ নম্বর আসামি বুয়েট ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত উপসমাজসেবা সম্পাদক ইফতি মোশাররফ সকাল (গোলচিহ্নিত) ৮ অক্টোবর মঙ্গলবার ঢাকা চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে। ছবি : ফোকাস বাংলা

মামলার ৫ নম্বর আসামি হলেন ইফতি মোশাররফ সকাল (২১)। তিনি বুয়েট ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত উপসমাজসেবা সম্পাদক। বায়ো মেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষে পড়েন। আবরার ফাহাদকে যে রুমে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয় তিনি সেই ২০১১ নম্বর রুমের বাসিন্দা। ইফতি রাজবাড়ী সদর উপজেলার ১ নম্বর ওয়ার্ডের ৩৯৫ নম্বর বাড়ির ফকির মোশাররফ হোসেন ও রাবেয়া মোশাররফের ছেলে। আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে তিনি বর্তমানে পাঁচ দিনের রিমান্ডে আছেন।

মামলার ৬ নম্বর আসামি হলেন মো. মনিরুজ্জামান মনির (২১)। তিনি বুয়েট ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সাহিত্য সম্পাদক। শেরেবাংলা হলের এই ছাত্র পড়েন ওয়াটার রিসোর্সেস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের  তৃতীয় বর্ষে। মনির দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার ভাংগাড়ীপাড়ার মো. মাহতাব আলী ও এলিজা বেগমের ছেলে। মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকার ডেমরা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ তাঁর পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।

আবরার ফাহাদ রাব্বী হত্যা মামলার ৭ নম্বর আসামি বুয়েট ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত ক্রীড়া সম্পাদক মো. মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন (গোলচিহ্নিত) ৭ অক্টোবর সোমবার গ্রেপ্তারের পর। ছবি : এনটিভি

মামলার ৭ নম্বর আসামি হলেন মো. মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন (২২)। তিনি বুয়েট ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত ক্রীড়া সম্পাদক। তিনি নেভাল আর্কিটেকচার অ্যান্ড মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র। থাকতেন শেরেবাংলা হলে। তিনি রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার শঠিবাড়ীর মো. শহিদুল ইসলাম ও শাহনাজ বেগমের ছেলে। আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে তিনি বর্তমানে পাঁচ দিনের রিমান্ডে আছেন।

মামলার ৮ নম্বর আসামি হলেন মো. মাজেদুল ইসলাম (২১)। মামলার এজাহারে তাঁর ঠিকানা ও বাবা-মায়ের নাম অজ্ঞাত লেখা আছে। শেরেবাংলা হলের মাজেদুল এমএমই বিভাগের ১৭তম ব্যাচের ছাত্র।

মামলার ৯ নম্বর আসামির নাম মো. মুজাহিদুর রহমান মুজাহিদ (২১)। তিনি বুয়েট ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সদস্য। তিনি ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের। নিহত আবরার ওই বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। তিনি শেরেবাংলা হলের ৩০৩ নম্বর কক্ষের বাসিন্দা। মামলার এজাহারে তাঁর ঠিকানা ও বাবা-মায়ের নাম অজ্ঞাত লেখা আছে। আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে তিনি বর্তমানে পাঁচ দিনের রিমান্ডে আছেন।

মামলার ১০ নম্বর আসামির নাম লেখা মো. তানভীর আহম্মেদ। পড়েন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষে। আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে তিনি বর্তমানে পাঁচ দিনের রিমান্ডে আছেন। মামলার এজাহারে তাঁর ঠিকানা ও বাবা-মায়ের নাম অজ্ঞাত লেখা আছে।

মামলার ১১ নম্বর আসামির নাম হোসেন মোহাম্মদ তোহা (২০)। মামলার এজাহারে তাঁর ঠিকানা ও বাবা-মায়ের নাম অজ্ঞাত লেখা আছে। পড়েন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষে। থাকেন শেরেবাংলা হলের ২১১ নম্বর কক্ষে।

মামলার ১২ নম্বর আসামির নাম মো. জিসান (২১)। মামলার এজাহারে তাঁর ঠিকানা ও বাবা-মায়ের নাম অজ্ঞাত লেখা আছে। সদস্য। তিনি ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের। নিহত আবরার ওই বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। তিনি শেরেবাংলা হলের ৩০৩ নম্বর কক্ষের বাসিন্দা।

মামলার ১৩ নম্বর আসামির নাম মো. আকাশ হোসেন (২১)। মামলার এজাহারে তাঁর ঠিকানা ও বাবা-মায়ের নাম অজ্ঞাত লেখা আছে। আকাশ বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৬তম ব্যাচ বা তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। তিনি বুয়েটের শেরেবাংলা হলের ১০০৮ নম্বর কক্ষের বাসিন্দা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গাজীপুর বাইপাস সড়ক থেকে আকাশকে গ্রেপ্তার করা হয়।

মামলার ১৪ নম্বর আসামির নাম মো. শামীম বিল্লাহ (২০)। মামলার এজাহারে তাঁর ঠিকানা ও বাবা-মায়ের নাম অজ্ঞাত লেখা আছে। তিনি মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৭তম ব্যাচ ও শেরেবাংলা হলের ছাত্র।

মামলার ১৫ নম্বর আসামির নাম মো. শাদাত (২০)। মামলার এজাহারে তাঁর ঠিকানা ও বাবা-মায়ের নাম অজ্ঞাত লেখা আছে। তিনি মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৭তম ব্যাচ ও শেরেবাংলা হলের ছাত্র।

মামলার ১৬ নম্বর আসামির নাম মো. তানিম (২০)। তাঁর পুরো নাম সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের এহতেশামুল রাব্বি তানিম। মামলার এজাহারে তাঁর ঠিকানা ও বাবা-মায়ের নাম অজ্ঞাত লেখা আছে। তিনি সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৭তম ব্যাচ ও শেরেবাংলা হলের ছাত্র।

মামলার ১৭ নম্বর আসামির নাম মো. মোর্শেদ (২০)। মামলার এজাহারে তাঁর ঠিকানা ও বাবা-মায়ের নাম অজ্ঞাত লেখা আছে। তিনি মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৭তম ব্যাচ ও শেরেবাংলা হলের ছাত্র।

মামলার ১৮ নম্বর আসামির নাম মো. মোয়াজ (২০)। মামলার এজাহারে তাঁর ঠিকানা ও বাবা-মায়ের নাম অজ্ঞাত লেখা আছে। তিনি সিএসই বিভাগের ১৭তম ব্যাচ ও শেরেবাংলা হলের ছাত্র।

আবরার ফাহাদ রাব্বী হত্যা মামলার ১৯ নম্বর আসামি বুয়েট ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সদস্য মুনতাসির আল জেমি (গোলচিহ্নিত) ৮ অক্টোবর মঙ্গলবার ঢাকা চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে। ছবি : এফএনএস

মামলার ১৯ নম্বর আসামির নাম লেখা জেমি (২০)। তাঁর পুরো নাম মুনতাসির আল জেমি। পড়েন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষে। তিনি বুয়েট ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সদস্য। মামলার এজাহারে তাঁর ঠিকানা ও বাবা-মায়ের নাম অজ্ঞাত লেখা আছে। আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে তিনি বর্তমানে পাঁচ দিনের রিমান্ডে আছেন।

এজাহার ছাড়া আসামি বুয়েটের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র ও বুয়েট ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সদস্য ইশতিয়াক আহম্মেদ মুন্না (গোলচিহ্নিত) ৮ অক্টোবর মঙ্গলবার ঢাকা চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে। ছবি : স্টার মেইল

আবরার হত্যায় আরো তিন বুয়েটছাত্র গ্রেপ্তার

আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে বুয়েটের আরো তিন ছাত্রকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এঁরা হলেন মনিরুজ্জামান মনির (২১), মো. আকাশ হোসেন (২১) ও শামসুল আরেফিন রাফাত (২১)। এর মধ্যে মনির ও আকাশ হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি।

মঙ্গলবার বিকেলে ডেমরা থেকে মনিরকে ও জিগাতলা থেকে রাফাতকে এবং সন্ধ্যায় গাজীপুর বাইপাস সড়ক থেকে আকাশকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ তাদের পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।

মনির বুয়েটের ওয়াটার রিসোর্সেস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ষোড়শ ব্যাচের তৃতীয় বর্ষে, আকাশ একই ব্যাচের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষে এবং রাফাত মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের সপ্তদশ ব্যাচের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।

ছাত্রলীগের ১০ নেতাকর্মীর পাঁচ দিনের রিমান্ড

আবরার ফাহাদ রাব্বী হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া ছাত্রলীগের ১০ নেতাকর্মীর পাঁচ দিন করে রিমান্ড দিয়েছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাদবীর ইয়াসির আহসান চৌধুরী এ আদেশ দেন।

এর আগে আবরার ফাহাদ রাব্বী হত্যা মামলা তদন্তের দায়িত্ব পাওয়া ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ আজ দুপুরে গ্রেপ্তার ১০ আসামিকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে ১০ দিন করে রিমান্ড আবেদন করেন। সে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক শুনানি শেষে পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

রিমান্ড মঞ্জুর করা আসামিরা হলেন বুয়েট ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল (সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, দ্বিতীয় বর্ষ), সহসভাপতি মুহতাসিম ফুয়াদ (সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, দ্বিতীয় বর্ষ), সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রবিন (মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, চতুর্থ বর্ষ), তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার (মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, চতুর্থ বর্ষ), ক্রীড়া সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন (নেভাল আর্কিটেকচার অ্যান্ড মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং, চতুর্থ বর্ষ), উপসমাজসেবা সম্পাদক ইফতি মোশাররফ সকাল (বায়ো মেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং, তৃতীয় বর্ষ), সদস্য মুনতাসির আল জেমি (মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, দ্বিতীয় বর্ষ), মো. মুজাহিদুর রহমান মুজাহিদ (ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং, তৃতীয় বর্ষ) এবং মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভির ও একই বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ইশতিয়াক আহম্মেদ মুন্না।

গত রোববার রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হলে মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ ঘটনায় ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে চকবাজার থানার পুলিশ। হত্যার ঘটনায় বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেলসহ ১১ জনকে সংগঠন থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।