প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বললেন

কেউ পানি পান করতে চাইলে না দিলে কেমন হয়?

Looks like you've blocked notifications!
গণভবনে আজ বুধবার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি : বাসস

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কেউ যদি পানি পান করতে চায়; তাকে যদি না দেই সেটা কেমন হয়? বিএনপি নেতাদের কাছে আমার প্রশ্ন, জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে ভারত গেলেন অথবা খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী হয়ে ভারত গিয়েছেন তারা কি গঙ্গা চুক্তি করতে পেরেছিলেন? উল্টো যখন সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেছিলেন, গঙ্গা নদী নিয়ে তখন বলেছিলেন, আমি তো ভুলেই গিয়েছিলাম। যারা নিজ দেশের স্বার্থ ভুলে যায় তাদের মুখে এসব কথা কতটা মানায়?

আজ বুধবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে সরকারি বাসভবন গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ফেনী নদীর উৎপত্তিস্থল হচ্ছে খাগড়াছড়ি। এটার ১৪০ কিলোমিটার বাংলাদেশের ভেতরে। রাঙামাটি, মাটিরাঙা, খাগড়াছড়ি থেকে ফেনীর সোনাগাজী হয়ে সাগরে চলে গেছে। এটি সীমান্তবর্তী নদী। আর এসব নদীর দুই দেশের ভাগ থাকে। আমরা সীমান্তবর্তী নদী এক সঙ্গে খননের বিষয়ে আলোচনা করছি।

শেখ হাসিনা বলেন, ত্রিপুরাতে খাবারের পানির অভাব। তাদের সঙ্গে যে চুক্তি হয়েছে সেটি তাদের খাবারের পানি দেওয়ার জন্য। তাও অনেক সামান্য, এক দশমিক ৮২ কিউসেক। যে পানি তাদের দিচ্ছি মেটার পরিমাণ অত্যন্ত নগণ্য। এটা নিয়ে এত চিৎকার কিসের জন্য, আমি জানি না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা এত কথা বলেছিল, তারা ক্ষমতায় এসে সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়ন করেনি কেন? আমরা তো স্বধীন দেশ। এটার প্রক্রিয়া প্রথম আমরা শুরু করি ১৯৯৬ সালে। আর ২০০৮ সালে ক্ষমতায় এসে অনেকটা সম্পন্ন করি। সমুদ্র সীমার বিষয়েও উদ্যোগ জাতির পিতা করে গেছেন।

শেখ হাসিনা বলেন, যারা কোনো কিছুই করেনি তারা এত কথা বলে কী করে? তারা কি সীমান্ত চুক্তির পর খবর নিয়েছিল কতটা গেছে আর কতটা আসছে? আমরা সব জায়গায় আমাদের নিজেদের স্বার্থ রক্ষা করি।

সদ্য সমাপ্ত নিউইয়র্ক ও নয়াদিল্লি সফর নিয়ে আজ বিকেল সাড়ে ৩টায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে সংবাদ সম্মেলন শুরু হয়। শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন। এরপর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন তিনি। সংবাদ সম্মেলন শেষ হয় বিকেল ৫টায়।

প্রধানমন্ত্রী নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৪তম সম্মেলনে যোগ দিতে ২২ সেপ্টেম্বর আট দিনের সফরে যুক্তরাষ্ট্র যান। সেখান থেকে ফিরে তিনি নয়াদিল্লিতে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের ইন্ডিয়া ইকোনমিক সামিটে অংশ নিতে ৩ অক্টোবর ভারতে চার দিনের সফরে যান।

শেখ হাসিনা ভারত সফরকালে ৫ অক্টোবর দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক এবং রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। দুই প্রধানমন্ত্রী যৌথভাবে তিনটি দ্বিপক্ষীয় উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন করেন এবং তাদের উপস্থিতিতে সাতটি দ্বিপক্ষীয় চুক্তি সই হয়।

ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি সোনিয়া গান্ধী, সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং ও প্রিয়াংকা গান্ধীসহ রোববার তাজমহল হোটেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

প্রধানমন্ত্রী নয়াদিল্লিতে অবস্থানের সময় আঞ্চলিক শান্তি ও সমৃদ্ধি বজায় রাখার ক্ষেত্রে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ‘ঠাকুর শান্তি পুরস্কার ২০১৮’ গ্রহণ করেন। তাঁকে এ পুরস্কারে ভূষিত করে কলকাতার এশিয়াটিক সোসাইটি।

শেখ হাসিনা ২২ থেকে ২৯ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্ক সফরের সময় ২৭ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সম্মেলনে বক্তব্য দেন এবং ২৪ সেপ্টেম্বর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন। নিউইয়র্ক সফরকালে তিনি তরুণদের দক্ষতা উন্নয়নে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ‘চ্যাম্পিয়ন অব দ্য স্কিল ডেভেলপমেন্ট ফর ইয়ুথ’ এবং বাংলাদেশে টিকাদান কর্মসূচির সাফল্যের জন্য ‘ভ্যাকসিন হিরো’ শীর্ষক দুটি সম্মানজক আন্তর্জাতিক পুরস্কার গ্রহণ করেন। সেই সঙ্গে তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কুশল বিনিময় এবং জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন।

এ ছাড়া, প্রধানমন্ত্রী আলাদাভাবে আইসিসির কৌঁসুলি ফাতোউ বেনসোউদা, বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের কো-চেয়ার বিল গেটস, জাতিসংঘ মহাসচিবের উন্নয়নের জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থায়ন বিষয়ক বিশেষ দূত রানি ম্যাক্সিমা ও গ্লোবার হোপ কোয়ালিশনের অনারারি প্রেসিডেন্ট ইরিনা বোকোভার সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেন।