আবরার হত্যায় ন্যায়বিচার চাইল যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্স

Looks like you've blocked notifications!

ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মারধরে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যার ঘটনায় ন্যায়বিচার নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্স। ঢাকায় দুটি দেশের দূতাবাসের পক্ষ থেকে এমন আহ্বান জানানো হয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের ভেরিফায়েড অফিশিয়াল ফেসবুক পাতায় বাংলা ও ইংরেজিতে দেওয়া এক প্রতিক্রিয়ায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার বলেন, ‘বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আমি হতবাক ও মর্মাহত। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা যেকোনো গণতন্ত্রের মৌলিক অধিকার। এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি তোলা সব কণ্ঠস্বরের সঙ্গে আমরা একাত্ম ও তাঁর পরিবারের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।’

অন্যদিকে ঢাকায় ফরাসি দূতাবাসের অফিশিয়াল ফেসবুক পাতায় আবরারের ছবিসহ প্রচারিত এক প্রতিক্রিয়ায় বলা হয়, “বুয়েট শিক্ষার্থী হত্যার ঘটনায় আমরা (ফ্রান্স) অত্যন্ত মর্মাহত এবং বিস্মিত। আমরা ওই শিক্ষার্থীর শোকাহত পরিবার-স্বজন এবং বন্ধুদের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জ্ঞাপন করছি। একই সঙ্গে আশা করছি, তাঁর হত্যার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে এবং এ ঘটনায় ‘ন্যায়বিচার’ নিশ্চিত হবে।”

সংক্ষিপ্ত ওই ইংরেজি বার্তায় ‘কিলিং’, ‘সিমপ্যাথি’ ও ‘জাস্টিস’—এই তিন শব্দকে হ্যাশট্যাগে উল্লেখ করা হয়েছে।

এর আগে জার্মানি ও জাতিসংঘ তাদের ঢাকা কার্যালয়ের মাধ্যমে নৃশংস এ হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে ন্যায়বিচার প্রত্যাশার কথা জানায়।

গত রোববার রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হলে মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ ঘটনায় সোমবার রাতে ১৯ জনকে আসামি করে চকবাজার থানায় হত্যা মামলা করেন আবরারের বাবা মো. বরকত উল্লাহ। সেই রাতেই বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেলসহ ১১ জনকে সংগঠন থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।

এদিকে আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মোট ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। এর মধ্যে গতকালই এ ঘটনায় প্রথম ঢাকা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন মামলার আসামি বুয়েটের বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র এবং বুয়েট ছাত্রলীগের উপসমাজসেবা সম্পাদক ইফতি মোশাররফ সকাল। এ চাঞ্চল্যকর হত্যার ঘটনার তদন্তের দায়িত্ব পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগকে দেওয়া হয়েছে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল, সহসভাপতি মুহতাসিম ফুয়াদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রবিন, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার, ক্রীড়া সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, সাহিত্য সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির, উপসমাজকল্যাণ সম্পাদক ইফতি মোশাররফ সকাল, উপদপ্তর সম্পাদক মুজতবা রাফিদ, দুই সদস্য মুনতাসির আল জেমি ও এহতেশামুল রাব্বি তানিম এবং শামসুল আরেফিন রাফাত, মনিরুজ্জামান মনির, মো. আকাশ হোসেন, সাখাওয়াত ইকবাল অভি, অমিত সাহা ও মিজানুর রহমান মিজান।