ছাত্রলীগ থেকে বুয়েটের অমিত সাহা বহিষ্কার
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সন্দেহভাজন অমিত সাহাকে ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করেছে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটি।
গত ৬ অক্টোবর আবরার ফাহাদকে রাতভর নির্যাতন করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা যে কক্ষে হত্যা করা হয়, সেই কক্ষটির বাসিন্দা ছিলেন সংগঠনটির বুয়েট শাখার আইনবিষয়ক উপসম্পাদক অমিত সাহা। ঘটনার পর থেকেই তিনি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন।
হত্যাকাণ্ডের চার দিন পর গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর সবুজবাগ এলাকার একটি বাসা থেকে অমিতকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপরই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ডে পায় পুলিশ। তিনি এখন রিমান্ডে আছেন।
আবরার হত্যাকাণ্ডের পর পরই ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। সেই তদন্ত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে বুয়েট শাখার ১১ নেতাকে বহিষ্কার করে।
সবশেষ আজ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয় ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য এক বিবৃতিতে অমিত সাহাকে বহিষ্কারের কথা জানান।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে সাম্প্রতিক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ গঠিত দুই সদস্যের তদন্ত কমিটির অধিকতর তদন্ত সাপেক্ষে এই তথ্য উঠে এসেছে যে, বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের আইনবিষয়ক উপসম্পাদক অমিত সাহা ঘটনা সংঘটিত হওয়ার সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত না থাকলেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কথোপকথনের মাধ্যমে উক্ত ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত ছিল।’
‘তাঁর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অধিকতর তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় অমিত সাহাকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হলো,’ যোগ করে ছাত্রলীগ।
গত ৬ অক্টোবর রাতে আবরারকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শেরেবাংলা হলের দোতলার ২০১১ নম্বর কক্ষে রাতভর পিটিয়ে হত্যা করেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ ঘটনায় সারা দেশ ক্ষোভে-বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। আবরারের বাবা বুয়েটের ১৯ শিক্ষার্থীকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন।
এখন পর্যন্ত মামলার এজাহারভুক্ত ও সন্দেহভাজন মোট ১৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পরে আসামিদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। গতকাল রোববার পর্যন্ত চারজন ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।
আবরার হত্যাকাণ্ডে গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল, সহসভাপতি মুহতাসিম ফুয়াদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রবিন, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার, ক্রীড়া সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, সাহিত্য সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির, উপসমাজকল্যাণ সম্পাদক ইফতি মোশাররফ সকাল, উপদপ্তর সম্পাদক মুজতবা রাফিদ, উপ-আইন বিষয়ক সম্পাদক অমিত সাহা, সদস্য মুনতাসির আল জেমি ও এহতেশামুল রাব্বি তানিম, শামসুল আরেফিন রাফাত, মনিরুজ্জামান মনির, মো. আকাশ হোসেন, সাখাওয়াত ইকবাল অভি, মিজানুর রহমান মিজান, মাজেদুল ইসলাম, তোহা ইসলাম ও শামিম বিল্লাহ।