রোহিঙ্গাদের দ্রুত প্রত্যাবাসন বাংলাদেশের জন্য ভালো, এডিবিকে প্রধানমন্ত্রী
পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের নিজ ভূমি মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে দ্রুত প্রত্যাবাসনের প্রয়োজনীয়তার ওপর আজ বুধবার জোর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, এটা বাংলাদেশের জন্য ভালো হবে যদি তাঁরা যত দ্রুত সম্ভব ফিরে যায়।
সংবাদ সংস্থা ইউএনবি জানায়, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ কথা বলেন।
বাংলাদেশকে নির্ভরযোগ্য অংশীদার হিসেবে আখ্যায়িত করে সফররত এডিবির উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদলটি জানায়, তাদের বাংলাদেশের উন্নয়নের অংশীদার হওয়া বজায় থাকবে।
‘এডিবি বাংলাদেশের উন্নয়নের অংশীদার হিসেবে থাকবে,’ বলেন এডিবি পরিচালনা পর্ষদের সফরকারী দলের নেতা ইনচ্যাং চং।
প্রতিনিধি দলে ছিলেন ৩৩ দেশকে প্রতিনিধিত্ব করা এডিবির ছয় পরিচালক ও বিকল্প পরিচালক। সাক্ষাৎ শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
সফররত প্রতিনিধিদল বাংলাদেশের দ্রুত দারিদ্র্য হ্রাস ও উচ্চ জিডিপি প্রবৃদ্ধির পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তন প্রশমন ও খাদ্য নিরাপত্তার প্রশংসা করে। খাদ্য নিরাপত্তা অর্জনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনেক অগ্রগতি সাধন করেছে বলে জানান তারা। এডিবি রোহিঙ্গা বিষয়েও বাংলাদেশকে তাদের সমর্থন দেওয়া বজায় রাখবে বলে জানায়।
এডিবি পরিচালক কৃষ পান্ডে বলেন, বাংলাদেশ বিভিন্ন খাতে, বিশেষ করে পরিবহন, জ্বালানি ও গৃহায়ণে অসাধারণ অগ্রগতি করেছে। তিনি উন্নয়নের স্বার্থে আঞ্চলিক যোগাযোগ ও অখণ্ডতা বহাল রাখার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর দল ক্ষমতায় আসার আগেই দেশের উন্নয়নের জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিল। তিনি জানান, অর্থনৈতিক এবং কৃষির মতো বিভিন্ন উন্নয়ন নীতিমালা তাঁদের দলের পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। ‘আমরা ক্ষমতায় আসার আগেই নীতিমালা প্রণয়ন করেছিলাম এবং এখন এগুলো বাস্তবায়ন করছি।’
সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড গ্রামকেন্দ্রিক উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের গ্রামীণ অঞ্চল ও তৃণমূল মানুষ উন্নয়ন কর্মসূচিগুলোতে অগ্রাধিকার পায়। তিনি বলেন, সরকার জনগণকে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে যুক্ত করেছে। ‘আমার দল উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ত্বরান্বিত করতে কঠোর পরিশ্রম করছে।’
উন্নয়নের গতি দ্রুত করতে সরকার ১০০ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, তিনি জ্বালানি, টেলিযোগাযোগ ও পরিবহনসহ সব খাত বেসরকারি খাতে উন্মুক্ত করে দিয়েছেন। তিনি বলেন, সরকার বিধবা ভাতাসহ বিভিন্ন সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচিতে নজর দিয়েছে। যোগাযোগ নিয়ে তিনি বলেন, আঞ্চলিক যোগাযোগ জোরদার করার জন্য রয়েছে বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত ও নেপাল (বিবিআইএন) উদ্যোগ এবং বাংলাদেশ-চীন-ভারত-মিয়ানমার (বিসিআইএম) অর্থনৈতিক করিডর।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান সাক্ষাতের সময় উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিনিধিদলের অন্য সদস্যরা হলেন- এডিবির বিকল্প পরিচালক বৈরমমোহাম্মেদ গারায়েভ, কেনজু ওহি, বোরাক মোইজিনোগলু ও এনরিক গালান এবং বাংলাদেশে এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন প্রকাশ।