কার্তিকেই শীত পড়তে শুরু করেছে পঞ্চগড়ে

Looks like you've blocked notifications!

দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে কার্তিকেই শীত পড়তে শুরু করেছে। মাঠের সবুজ ধান ক্ষেত, চা গাছ ও সবুজ ঘাস থেকে শিশিরের ঝরে পড়া আর হিমেল হাওয়া জানান দিচ্ছে শীতের আগমনী বার্তা। সেই সাথে রাস্তাঘাট এবং মাঠ-প্রান্তরের সকালের রূপ বদলাতে শুরু করেছে।

ইউএনবি এক প্রতিবেদনে জানায়, জেলার আকাশ গত দুদিন ধরে লঘু চাপের কারণে মেঘাচ্ছন্ন হয়ে আছে। মাঝে মাঝে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। গ্রাম থেকে শহর সর্বত্রই শীতকে বরণ করার প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে। অনেকেই আলমারি থেকে শীতবস্ত্র বের করে রোদে মেলে দিচ্ছেন। গায়েও চাপিয়েছেন কেউ কেউ।

হিমালয়কন্যা খ্যাত পঞ্চগড়ে সাধারণত নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে শীত পড়ে। কিন্তু এবার আগেভাগেই শীত এসে গেছে। বিকালের পর থেকেই কুয়াশার আবেশ ছড়িয়ে পড়ছে। রাতে হিমেল হাওয়া বইছে। অনেকেই লেপ, কাঁথা, কম্বল বের করেছেন। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধদের শেষ রাতে ব্যবহার করতে হচ্ছে শীতের কাপড়।

জেলা শহরের ডোকরোপাড়া এলাকার গৃহিণী নাজমা রহমান জানান, লেপ-কাঁথা বের করেছেন। রাতে কাঁথা নিতে হচ্ছে।

আগাম শীতের কারণে লেপ-তোষক বানাতে ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন স্থানীয়রা। লেপ-তোষকের দোকানে দিন দিন ভিড় বাড়ছে। শহরের শীতের কাপড়ের দোকানগুলোতেও ভিড় বাড়ছে। যানবাহনে যাতায়াত ও চলাচল করলে গরম কাপড় পরতে হচ্ছে। মোটরবাইক চালকরা আগেই গরম কাপড় বের করেছেন। কুয়াশার কারণে ভোর থেকে যানবাহনগুলো হেডলাইট জ্বালিয়ে যাতায়াত করছে। কোনো কোনো দিন হঠাৎ কুয়াশার আবরণে ঢাকা পড়ছে চারদিক।

পঞ্চগড় সরকারি মহিলা কলেজের ভূগোল ও পরিবেশ বিদ্যা বিভাগের প্রধান গোলাম কিবরিয়া মুকুল জানান, জেলায় ক্রমশ তাপমাত্রা কমছে। এখন লঘু চাপের কারণে দক্ষিণ-পশ্চিম থেকে মৌসুমী বায়ু প্রবাহিত হওয়ায় আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকছে এবং মাঝে মাঝে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি পড়ছে। এ বায়ু বন্ধ হলে হিমালয়ের হিম শীতল বায়ু প্রবাহিত হতে শুরু করবে। আর তখনই শীতের প্রকোপ বেড়ে যাবে।

একই তথ্য উল্লেখ করে তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রহিদুল ইসলাম জানান, গত এক সপ্তাহ থেকে পঞ্চগড়ে ১৮ থেকে ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা পাওয়া যাচ্ছে। এর মধ্যে প্রায় দিনই দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল পঞ্চগড়ে। শুক্রবার সকালে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবু হানিফ জানান, এ সময়ে হালকা বৃষ্টি হয়। এটা কোনো সমস্যা নয়। তবে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বেশি হলে শীতকালীন সবজি চাষাবাদ দেরি হয়ে যাবে। তবে অন্যান্য ফল ও ফসলের কোনো ক্ষতি হবে না।

সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার সিরাজউদ্দৌলা পলিন জানান, এখনো শীতের রোগী ভর্তি শুরু হয়নি। তবে কিছু শ্বাসকষ্টজনিত রোগী ভর্তি আছেন। তাদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। ‘শীত মোকাবিলায় আমরা প্রস্তুত রয়েছি।’