বিলুপ্ত ছিটমহল

পঞ্চগড় থেকে প্রথম দফায় ভারতে গেলেন ৪৮ জন

Looks like you've blocked notifications!
পঞ্চগড়ের বিলুপ্ত ছিটমহলের ৪৮ জন নাগরিক আজ রোববার প্রথম দফায় ভারত গেলেন। ছবি : এনটিভি

পঞ্চগড়ের বিলুপ্ত ৩৬টি ছিটমহলের ৯৮ পরিবারের ৪৮৯ জন নাগরিকের মধ্যে প্রথম দফায় আজ ৪৮ জন নাগরিক ভারত গেলেন।

রোববার সকাল ১০টার দিকে জেলার বোদা উপজেলার কাজলদীঘি কালিয়াগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ চত্বর থেকে দুটি বাস ও তিনটি ট্রাকে মালামালসহ তাঁরা ভারতে রওনা দেন।

পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্টেট মোহাম্মদ গোলাম আযম ফুলের শুভেচ্ছা জানিয়ে তাঁদের বিদায় জানান। বোদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু আউয়াল তাঁদের নিয়ে নীলফামারীর ডোমার উপজেলার চিলাহাটি ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) বিওপিতে যান।

গতকাল শনিবার বিকেলে এসব নাগরিক তাঁদের মালামাল নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে জমায়েত হন। সেখানে বিজিবি ও কাস্টমস কর্তৃপক্ষের চেকিং কার্যক্রম পরিচালনা করে। পরে তাঁদের যাত্রা শুরু হয়।

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ গোলাম আজম বলেন, ‘৪৮৭ জন আবেদন করেছিলেন ভারতে যেতে। কিন্তু এরই মধ্যে আরো দুই শিশু জন্ম নিয়েছে। ফলে সংখ্যাটা ৪৮৯ জনে দাঁড়িয়েছে। তাঁদের চার দফায় ভারতে পাঠানো হবে।’

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন বলেন, ‘পঞ্চগড় জেলার ৩৬ ছিটমহলের ৯৮টি পরিবারের ৪৮৯ জন সদস্য চার দফায় ভারতে যাচ্ছেন। সব প্রস্তুতি শেষ। যেতে না চাইলে কাউকে জোর করে আমরা পাঠাব না।’

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, একইভাবে ২৩ নভেম্বর দ্বিতীয় দফায় দেবীগঞ্জের কোটভাজনী ও বালাপাড়া খাগড়াবাড়ী ছিটমহল থেকে ৩১টি পরিবারের ১৭৭ জন স্থায়ীভাবে একই পথে ভারত যাবেন। ২৪ নভেম্বর দেবীগঞ্জ উপজেলার দহলা খাগড়াবাড়ী ছিটমহলের ২৯টি পরিবারের ১৪৯ জন এবং ২৬ নভেম্বর দেবীগঞ্জ উপজেলার দহলাখাগড়াবাড়ী ও বোদা উপজেলার দইখাতা ছিটমহলের ২৩টি পরিবারে ১০৮ জন ভারতে যাবেন।

চলতি বছরের ৬ জুলাই থেকে ১৬ জুলাই পর্যন্ত জনগণনায় পঞ্চগড় জেলার ৩৬ ছিটমহলের ৪৮৭ জন ছিটমহলের নাগরিক ভারতে যাওয়ার জন্য আবেদন করে। জনগণনার পর দেবীগঞ্জ উপজেলার কোটভাজনি এলাকার লাল চান রায়ের সদ্য ভূমিষ্ঠ শিশু ভারত চন্দ্র ও একই উপজেলার দহলা খাগড়াবাড়ি ছিটমহলের রতন চন্দ্র রায়ের সদ্য ভূমিষ্ঠ কন্যা অষ্টমী রানীর জন্ম হওয়ায় ভারতে যাওয়ার মোট সংখ্যা দাঁড়ায় ৪৮৯ জনে।

৩১ জুলাই মধ্যরাতে বাংলাদেশ-ভারতের অভ্যন্তরে থাকা ১৬২টি ছিটমহল আনুষ্ঠানিকভাবে বিনিময় হয়। এরপর অনেকে তাঁদের মত পরিবর্তন করে বাংলাদেশে থেকে যাওয়ার জন্য জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বরাবরে আবেদন করে।

দুই দেশের বৈঠকে ছিটবাসীর আবেদন গ্রহণ করা হয়। পরে ৪৮৭ জনকে ভারতীয় ট্রাভেল ভিসা দেওয়া হয়। এসব ভারতীয় নাগরিকরাই তাদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বিক্রি করে পরিবার-পরিজন নিয়ে ভারতে চলে যাচ্ছেন।