‘যাত্রার সংলাপ শুনছিলাম, এর মধ্যেই বিকট শব্দ’

‘তখন মাঝরাত পেরিয়ে গেছে। আমি মঞ্চের সামনে বসে যাত্রার সংলাপ শুনছিলাম। হঠাৎ বিকট শব্দে কানে তালা লেগে যায়। তারপর শুরু হয় লোকজনের হুড়াহুড়ি আর ছোটাছুটি। আমি তখনো কিছুটা ভাবলেশহীন ছিলাম। প্রথমে কিছুই বুঝতে পারিনি।’
-কথাগুলো বলছিলেন দিনাজপুরের কাহারোল উপজেলা কান্তজিউর মন্দিরে রাস মেলা উপলক্ষে আয়োজিত যাত্রামঞ্চে দুর্বৃত্তদের ককটেল বিস্ফোরণে আহত উমাকান্ত রায় (২২)। তিনি বীরগঞ্জ উপজেলার কাশীপুর গ্রামের মিহির দাসের ছেলে। এ সময় আরো ১০ জন আহত হয়।
বিস্ফোরণের পর পরই উমাকান্তকে নিয়ে আসা হয় দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। তিনি সেখানেই চিকিৎসাধীন।
ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে উমাকান্ত বলেন, ‘যাত্রা মঞ্চের পিছন দিক থেকে ছোঁড়া হয় পরপর তিনটি ককটেল। প্রথমে কিছু বুঝতে না পারলেও পরে বুঝতে পারি ককটেল বিস্ফোরণে আমার হাত-পা ও কোমড় দিয়ে রক্ত ঝরছে। তার পরই মেলার লোকজন আমাকে সরিয়ে নিয়ে যায়।’
‘প্রথমে স্থানীয় একজন পল্লীচিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। তিনি আমাকে ব্যান্ডেজ করে রক্ত বন্ধের চেষ্টা করেন। এতেও রক্ত বন্ধ না হওয়ায় দিনাজপুরের একটি ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে ওই ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ আমাকে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজে যাওয়ার জন্য পরামর্শ দেয়।’
উমাকান্ত আরো বলেন, ‘তখনো হাত-পা দিয়ে রক্ত ঝরছিল আমার। গাড়িতে আসতে আসতে আমি আসলে পুরো ঘটনাটি বুঝতে পারি।’
মেলা কমিটির সভাপতি তরিকুল ইসলাম জানান, রাসমেলা উপলক্ষে যাত্রা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। রাত ১টার দিকে প্রচণ্ড শব্দে ককটেলগুলো বিস্ফোরিত হয়। এ সময় মঞ্চে অবস্থান করা মানুষ আহত হয়।
এ ঘটনায় কাহারোল থানা পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচজনকে আটক করেছে। এ ছাড়া মন্দির এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ককটেল বিস্ফোরণে আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন সৈয়দপুরের বাসিন্দা মিঠু (৩০), কাহারোল উপজেলার বাসিন্দা সাইদুর (২৫), জব্বার (২৮), লালমনিরহাটের বাসিন্দা সাধন (৩৫), রংপুরের বাসিন্দা মোছাদ্দেক (২৩) ও বীরগঞ্জের বাসিন্দা উমাকান্ত রায় (২২)।