গঙ্গার পানিচুক্তির ১৯ বছর আজ

Looks like you've blocked notifications!
পাবনার হার্ডিঞ্জ ব্রিজের নিচে পদ্মায় এখন পানি নেই বললেই চলে। সেখানে এখন চরে গবাদি পশু। চলে চাষাবাদ। ছবি : এনটিভি

ভারতের সঙ্গে সম্পাদিত ঐতিহাসিক গঙ্গা পানিচুক্তির ১৯ বছর আজ। গত দুই বছর শুষ্ক মৌসুমে সামান্য পানিপ্রবাহ বাড়লেও বাংলাদেশ ছিল ন্যায্য হিস্যাবঞ্চিত। ফলে পদ্মা নদীবেষ্টিত ছয়টি জেলায় মরুকরণ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। পানির স্তর ৩০ থেকে ৪০ ফুট নিচে নেমে গেছে।

এদিকে গত চার মাসে কোনো প্রকার বৃষ্টিপাত নেই। পদ্মা নদী এখন পরিণত হয়েছে মরা খালে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড ও সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বর্তমানে বিশ্বে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় জলবায়ু পরিবর্তন। কিন্তু পদ্মা নদীবেষ্টিত ছয়টি জেলার অন্তত দুই কোটি মানুষ পশ্চিমবঙ্গের ফারাক্কার বাঁধের বিরূপ প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। এ কারণে দেশের বৃহত্তম গঙ্গা-কপোতাক্ষ সেচ প্রকল্প, পাবনা সেচ ও পল্লী উন্নয়ন প্রকল্প, পানাসি প্রকল্প, বরেন্দ্র প্রকল্পসহ বিভিন্ন প্রকল্পের হাজার হাজার একর জমিতে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও পাম্প ব্যবহার করেও সেচ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এদিকে পদ্মার অবস্থাও খুব করুণ। পানি নেই। এমনকি ন্যূনতম পানির প্রবাহ নেই। হার্ডিঞ্জ ব্রিজের ১৫টি পিলারের মধ্যে ১১টি পিলারই শুকনো চরে দণ্ডায়মান। যে চারটি পিলার পানিতে রয়েছে তার আশপাশে মানুষ চাষাবাদ করছে। নদীতে মাছ নেই। জেলেরা নৌকা দিয়ে জাল টেনে নিজেদের খাবারের মাছও জোগাড় করতে পারছেন না।

এদিকে ফারাক্কার প্রভাবে উত্তরাঞ্চলের ৫৪টি নদী শুকিয়ে গেছে। শুষ্ক মৌসুমে নদীগুলো পানিশূন্য হয়ে পড়ছে।

১৯৯৬ সালের ১২ ডিসেম্বর ভারতের হায়দরাবাদ হাউসে দেশটির তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী এইচ ডি দেবগৌড়া ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজ নিজ দেশের পক্ষে ৩০ বছর মেয়াদি পানিচুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। কিন্তু পানিচুক্তির পর থেকে এ পর্যন্ত বাংলাদেশ তার ন্যায্য হিস্যা পায়নি।

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ পাবনার নির্বাহী প্রকৌশলী জামানুর রহমান জানান, ভূগর্ভস্থ পানির স্তর এত নিচে নেমে গেছে যে এভাবে চললে ১০ বছর পর এ অঞ্চলে পানি পাওয়া কঠিন হবে। তা ছাড়া বৃষ্টিপাত না থাকায় বিশুদ্ধ পানির প্রাপ্যতা দিন দিন কঠিন হয়ে পড়ছে।

পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের ওয়াটার হাইড্রোলজি বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, জলবায়ু পবির্তনের কারণে পৃথিবীর নদীগুলোর ভূগর্ভস্থ উচ্চতা বেড়েছে এবং পানির স্তর নিচে নেমে গেছে। তিনি আরো বলেন, পানিপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে উচ্চপর্যায়ে বৈঠক জরুরি বলে তিনি মনে করেন।