সাত খুন মামলায় অধিকতর তদন্ত করা যাবে : হাইকোর্ট

নারায়ণগঞ্জের চাঞ্চল্যকর সাত খুনের মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চাইলে অধিকতর তদন্ত করতে পারবেন বলে অভিমত দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ জন্য আদেশের প্রয়োজন নেই বলেও জানিয়েছেন উচ্চ আদালত।
অধিকতর তদন্ত করতে ওই ঘটনায় নিহত কাউন্সিলর নজরুল ইসলামের স্ত্রীর করা আবেদন নিষ্পত্তি করে আজ সোমবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি আমির হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ অভিমত দেন।
নূর হোসেনের নেতৃত্বে ষড়যন্ত্রকারীদের নামও তদন্ত প্রতিবেদনে অন্তর্ভুক্ত করতে পারবেন বলে অভিমত দেন উচ্চ আদালত।
নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের ঘটনায় অধিকতর তদন্ত চেয়ে গত ২৯ নভেম্বর হাইকোর্টে আবেদন করেছিলেন নিহত কাউন্সিলর নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি। ৯ ডিসেম্বর এই আবেদনের শুনানি শেষে আদেশের জন্য আজকের দিন নির্ধারণ করেছিলেন আদালত।
এর আগে গত ১ ডিসেম্বর শুনানিতে এই মামলার অভিযোগপত্রে মারাত্মক ত্রুটি রয়েছে বলে মন্তব্য করেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে পুলিশ চাইলে এ মামলায় আবারও সম্পূরক অভিযোগপত্র দিতে পারে বলেও মন্তব্য করেছেন আদালত।
শুনানির সময় বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি আমির হোসেনের বেঞ্চ বলেন, ‘আমরা এই চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দেখে বুঝতে পেরেছি এতে মারাত্মক ত্রুটি রয়েছে। আমরা মামলার স্বার্থে তা বলব না। তবে আপনারা আইনজীবীরা এ ত্রুটি খুঁজে বের করবেন। কারণ সারা দেশের মানুষ অধীর আগ্রহে এ মামলার দিকে তাকিয়ে আছে।’
মামলার বিবরণ
২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের ওয়ার্ড কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজনকে অপহরণ করে হত্যা করা হয়। পরে এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে র্যাবের কয়েকজন সদস্যের জড়িত থাকার বিষয়টি উঠে আসে। ঘটনার পরপরই ভারতে পালিয়ে যান মামলার প্রধান আসামি ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা নূর হোসেন। তখন নারায়ণগঞ্জের আওয়ামী লীগদলীয় সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের সঙ্গে নূর হোসেনের পালিয়ে যাওয়ার কথোপকথনের একটি অডিও রেকর্ড গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। কিন্তু এসব বিষয়ে পলাতক নূর হোসেনের কোনো জবানবন্দি নেওয়া হয়নি। তাঁর জবানবন্দি ছাড়াই এ ঘটনায় করা দুটি মামলায় ৮ এপ্রিল অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। অভিযোগপত্রে র্যাবের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মকর্তাসহ অনেকের জড়িত থাকার বিষয়টি প্রকাশ পেলেও ঘটনার অন্তরালে আরো কেউ ছিল কি না, তা অপ্রকাশিতই রয়ে গেছে।
এ অবস্থায় হত্যাকাণ্ডের সাড়ে ১৮ মাস পর গত ১৫ নভেম্বর রাতে সাত খুন মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেনকে ভারত থেকে দেশের মাটিতে ফিরিয়ে আনা হয়। ১৬ নভেম্বর আদালতে শুনানি শেষে ১১ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে নূর হোসেনকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। নূর হোসেনকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন নিহতদের স্বজনরা।