পঞ্চগড়ে বিরল মদনটাক
পঞ্চগড়ে বিরল প্রজাতির একটি মদনটাক ধরেছে স্থানীয় লোকজন। পাখিটি এ মুহূর্তে পঞ্চগড় বন বিভাগের তত্ত্বাবধানে রয়েছে। জেলার আটোয়ারী ও বোদা উপজেলার মধ্যবর্তী পাথরাজ নদীর পাড় থেকে গত বুধবার বিকেলে কয়েকজন যুবক পাখিটিকে ধরে। এটিকে বোদা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে হস্তান্তর করা হয়। সেখান থেকে বন বিভাগের কর্মকর্তারা পাখিটিকে উদ্ধার করে পঞ্চগড়ে নিয়ে আসেন।
পঞ্চগড় বন বিভাগের রেঞ্জ অফিসার মো. আরশাদুল হক জানান, মদনটাক বিরল প্রজাতির পাখি। খাবার সংগ্রহের জন্য ভারতের কোনো বনাঞ্চল থেকে উড়ে এসে থাকতে পারে। খাবার না পেয়ে দুর্বল হয়ে পড়লে স্থানীয় লোকজন পাখিটিকে ধরে ফেলে।
সদর উপজেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মুহাম্মদ আব্দুস সোবহানের তত্ত্বাবধানে পাখিটিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। প্রথম দিকে পাখিটি খেতে না পারলেও চিকিৎসার পর খাবার খাচ্ছে।
বন বিভাগের রেঞ্জ অফিসার আরো জানান, পাখিটি নিয়ে ঢাকা বন্য প্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। সুস্থ হয়ে উড়তে পারলে পাখিটিকে অবমুক্ত করে দিতে বলা হয়েছে। সুস্থ না হলে পাখিটিকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হবে।
পাখি বিশেষজ্ঞ ফিরোজ আল সাবাহ এনটিভি অনলাইনকে জানান, ছোট মদনটাকের ইংরেজি নাম- লেসার অ্যাডজুট্যান্ট (Lesser Adjutant), বৈজ্ঞানিক নাম : লেপটপটিলোস জোভানিকাস, গোত্রের নাম : সিকোনিআইদি। এরা লম্বায় ৮৭-৯৩ সেন্টিমিটার হয়ে থাকে। পায়ের উচ্চতা ১১০-১২০ সেন্টিমিটার, ওজন চার থেকে সাড়ে পাঁচ কেজি।
মদনটাকের মাথার তালু, কপাল, গলা পালকহীন। গলা লালচে-হলুদ চমড়ায় আবৃত। ঠোঁট শক্ত মজবুত, রং ময়লাটে হলুদ। প্রজনন মৌসুমে ঠোঁটের গোড়া লালচে হয়। পিঠ থেকে লেজ পর্যন্ত উজ্জ্বল ধাতব কালো। ডানার গোড়ায় কালো তিলা। লেজের প্রান্ত ময়লাটে সাদা। গলার নিচ থেকে লেজের তলা পর্যন্ত সাদাটে। পা ও পায়ের পাতা কালো। অপ্রাপ্তবয়স্ক পাখির মাথায় ও ঘাড়ে পালক দেখা যায়। স্ত্রী ও পুরুষ পাখি দেখতে একই রকম। প্রধান খাবার মাছ, শামুক, ইঁদুর, ব্যাঙসহ নানা প্রজাতির সরীসৃপ।