বান্দরবানে ৫ দিন বহিরাগত নিষেধ

বিপাকে পর্যটক ও হোটেল মালিকরা

Looks like you've blocked notifications!
বান্দরবানের অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র নীলাচল। ফাইল ছবি : এনটিভি

বান্দরবানে সুষ্ঠু নির্বাচন ও নিরাপত্তার স্বার্থে আগামী ২৮ ডিসেম্বর থেকে ১ জানুয়ারি পর্যন্ত পাঁচদিন আবাসিক হোটেলগুলোতে বহিরাগতদের গমনে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে প্রশাসন। 

হঠাৎ নিষেধাজ্ঞায় বেকায়দায় পড়েছে বান্দরবানে প্রায় এক মাস আগে বুকিং, গাড়ির টিকেট সংগ্রহকারী পর্যটক এবং স্থানীয় আবাসিক হোটেলগুলোর মালিকরা। আগামী ৩০ ডিসেম্বর পৌরসভা নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত মোতাবেক রিটার্নিং কর্মকর্তা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আবু জাফর স্বাক্ষরিত একটি পত্রে এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে এই প্রতিবেদককে নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা আবু জাফর।
 
ব্যবসায়ীরা জানান, শীতের সময়ে প্রতিবছর বান্দরবানে বিপুল পর্যটকের আগমন ঘটে। দেশি-বিদেশি হাজারো পর্যটকে মুখর এখন বান্দরবানের দর্শনীয় স্থানগুলো। কিন্তু আবাসিক হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট ও গেস্ট হাউসগুলোতে দেওয়া চিঠিতে বলা হয়েছে, আগামী ২৮ ডিসেম্বর দিবাগত রাত থেকে ১ জানুয়ারি দিবাগত রাত পর্যন্ত টানা পাঁচদিন এ নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে। এদিকে এ নিষেধাজ্ঞার কারণে বান্দরবানে পর্যটন শিল্পে বিরূপ প্রভাব পড়েছে। নিষেধাজ্ঞার কারণে স্থানীয় পর্যটন ব্যবসায়ীদের প্রতিদিন গড়ে প্রায় এক কোটি টাকা করে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হবে। 
হোটেল ব্যবসায়ীরা বলছেন, আগামী ৩১ ডিসেম্বর ও ১ জানুয়ারির জন্য প্রায় এক মাস আগে থেকেই জেলা শহরের আবাসিক হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট, গেস্ট হাউসগুলো বুকিং মানি পাঠিয়ে রুম বুকিং এবং যাত্রীবাহী গাড়িগুলোর অগ্রিম টিকেট সংগ্রহ করে রেখেছেন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ভ্রমণপিপাসু পর্যটকরা। অগ্রিম বুকিংয়ের টাকা নিয়ে অনেকে আবাসিক হোটেলগুলোর উন্নয়নে ব্যয়ও করে ফেলেছেন। 

ঢাকার পর্যটক রাহুল চক্রবর্তী ও রাজশাহীর পর্যটক আলম দিদারসহ অনেকে বলেন, কর্মস্থল থেকে ছুটি নিয়ে তাঁরা বান্দরবানে বেড়াতে যাওয়ার প্রোগ্রাম করেছিলেন। অনেক চেষ্টা করে বাসের অগ্রিম টিকেট সংগ্রহ করে বান্দরবানে আবাসিক হোটেলে অগ্রিম টাকা পাঠিয়ে রুম বুকিং করেছেন। সব প্রস্তুতি শেষ করে ভেবেছিলেন পরিবার নিয়ে বেড়াতে যাবেন বান্দরবান। কিন্তু নিষেধাজ্ঞার কারণে তাঁরা বান্দরবান যেতে পারবেন না। পর্যটন শহরে এমন নিষেধাজ্ঞা কোনোভাবেই যুক্তিসঙ্গত নয়। পর্যটক ও ব্যবসায়ীদের কথা চিন্তা করে প্রশাসনকে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা উচিত। 

জেলা আবাসিক হোটেল মালিক সমিতির সভাপতি অমল কান্তি দাশ ও সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বলেন, জেলা শহরের ৪৫টি আবাসিক হোটেল, মোটেল, গেস্ট হাউস, রিসোর্টে প্রায় এক মাস আগেই ৩১ ডিসেম্বর ও ১ জানুয়ারি সব রুম বুকিং করেছেন পর্যটকরা। অগ্রিম বুকিংয়ের টাকাও সংগ্রহ করেছেন ব্যবসায়ীরা। পর্যটকদের অনেকে গাড়ির অগ্রিম টিকেটও সংগ্রহ করেছেন। পাঁচদিন নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকলে বান্দরবানে পর্যটন খাতে প্রায় কয়েক কোটি টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হবেন ব্যবসায়ীরা। পর্যটক ও ব্যবসায়ীদের লোকসানের কথা চিন্তা করে নিষেধাজ্ঞার সময়সীমা কমানোর অনুরোধ করা হয়েছে। 

বান্দরবান পৌর নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা আবু জাফর বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন ও নিরাপত্তার স্বার্থে বহিরাগতদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। আগামী ২৮ ডিসেম্বর দিবাগত মধ্যরাত থেকে ১ জানুয়ারি মধ্যরাত পর্যন্ত  টানা পাঁচদিন আবাসিক হোটেলগুলোতে বহিরাগতদের রুম ভাড়া না দিতে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তবে নির্বাচন সম্পন্ন হওয়ার পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে পর্যটন শিল্পের স্বার্থে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হবে। কিন্তু নিষেধাজ্ঞার সময়েও হাইওয়ে সড়ক এবং পৌর এলাকার বাইরের অবকাঠামোগুলো ব্যবহার করতে পারবেন পর্যটকরা।