রিভিউয়ে মৃত্যুদণ্ড কমার নজির নেই : অ্যাটর্নি জেনারেল
অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, ‘কামারুজ্জামানের রিভিউর (রায় পুনর্বিবেচনা) আবেদনের শুনানি আপিল বিভাগে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে অনুষ্ঠিত হবে। যে চার বিচারপতি এ মামলায় আপিলের রায় দিয়েছিলেন, তাঁরাই রিভিউ আবেদনের শুনানি করবেন।’
আজ রোববার দুপুর ২টায় অ্যাটর্নি জেনারেল নিজ কার্যালয়ে কামারুজ্জামানের রিভিউর শুনানির বিষয়ে এ কথা বলেন।
মাহবুবে আলম বলেন, ‘রিভিউ শুনানির পর কারো ফাঁসি বা মৃত্যুদণ্ড কমেছে, আমার জানা নেই। ইতিহাসে এমন নজির আছে বলেও আমার জানা নেই। আসামিপক্ষের আইনজীবীরা ৪৪টি গ্রাউন্ডে রিভিউ আবেদন করেছেন। আমরাও শুনানিতে অংশ নেব।’
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘আসামিপক্ষের আইনজীবীরা তিনজন সাক্ষীর বিষয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা সঠিক নয়।’ এ রিভিউর দিন ধার্যের ফলে ফাঁসির কার্যক্রম স্থগিত হয়েছে বলে তিনি জানান।
আজ চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ ছিদ্দিকী রায় পুনর্বিবেচনার আবেদনটি পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠিয়েছেন।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় রায় রিভিউ আবেদনটি দাখিল করেন কামারুজ্জামানের আইনজীবীরা। মোট ৪৫ পৃষ্ঠার রিভিউ আবেদনে ৪৪টি যুক্তি দেখিয়ে কামারুজ্জামানের ফাঁসির আদেশ বাতিল ও তাঁর খালাস চেয়েছেন তাঁরা।
গত বছরের ৩ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি (বর্তমানে প্রধান বিচারপতি) সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের বেঞ্চ কামারুজ্জামানের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন। বেঞ্চের অপর বিচারপতিরা হলেন বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহহাব মিঞা, বিচারপতি হাসান ফয়েজ ছিদ্দিকী ও বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করে আপিল বিভাগ।
এর পর ১৯ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানসহ তিন বিচারপতি কামারুজ্জামানের মৃত্যু পরোয়ানায় সই করেন। ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই বিচারপতি হলেন মো. মুজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি শাহীনুর ইসলাম। পরে ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার মুস্তাফিজুর রহমান মৃত্যু পরোয়ানা জারি করে আইজিপি (প্রিজন) বরাবর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে পাঠান। কারাগারে কামারুজ্জামানকে মৃত্যু পরোয়ানা পড়ে শোনানো হয়।
২০১৩ সালের ৯ মে কামারুজ্জামানকে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ড দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২। একই বছর ৬ জুন সাজা বাতিল করে খালাস চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আবেদন করেন কামারুজ্জামান। তবে রাষ্ট্রপক্ষে কোনো আপিল করেনি। আসামিপক্ষে শুনানির বিপরীতে বক্তব্য পেশ করে রাষ্ট্রপক্ষ।
২০১০ সালের ২৯ জুলাই কামারুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করা হয়। ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছরের ২ আগস্ট তাঁকে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।