গোয়ালন্দে রাতেই ব্যালটে সিল মারার শঙ্কায় তিন মেয়র প্রার্থী

রাত পোহালেই নির্বাচন। গোয়ালন্দ পৌরসভার চার মেয়র প্রার্থীর মধ্যে তিনজনই আশঙ্কায় রয়েছেন, ভোটের আগের রাতেই কেন্দ্র দখলে নিয়ে ব্যালটে সিল মেরে রাখা হতে পারে।
গোয়ালন্দ পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে চার প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁরা হলেন বর্তমান মেয়র ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ নিজাম শেখ (জগ), আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী নজরুল ইসলাম মণ্ডল (নৌকা), বিএনপি মনোনীত প্রার্থী আবুল কাশেম মণ্ডল (ধানের শীষ) ও জাতীয় পার্টির প্রার্থী হেলাল মাহমুদ (লাঙ্গল)।
নির্বাচনের আগের রাতে ব্যালটে সিল মেরে ভোট কারচুপির আশঙ্কার কথা জানিয়ে জেলা রিটার্নিং অফিসার ও গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিয়োগ করেছেন তিন প্রার্থী। তাঁরা হলেন রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ পৌরসভার বর্তমান মেয়র ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ নিজাম শেখ, বিএনপি মনোনীত প্রার্থী আবুল কাশেম মণ্ডল এবং জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী মো. হেলাল মাহমুদ।
স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ নিজাম শেখ তাঁর লিখিত অভিযোগে জানান, গত দুটি পৌরসভার নির্বাচনে দুবার মেয়র পদে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়ে ১৪ বছর ধরে মেয়র পদের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। ২৮ ডিসেম্বর রাত থেকে বিপুল সংখ্যক বহিরাগত সন্দেহভাজন সন্ত্রাসী পৌর এলাকায় অবস্থান করে বিভিন্ন ওয়ার্ডে দলবদ্ধভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, এই সন্ত্রাসীরা নির্বাচনের আগের রাতেই কোনো এক দলীয় প্রার্থীর পক্ষে কেন্দ্রে কেন্দ্রে গিয়ে জোর করে ব্যালটে সিল মেরে ভোট কারচুপির পরিকল্পনা করছে। এ ক্ষেত্রে তিনি ভোটকেন্দ্রগুলো আগের রাত থেকেই নিরপেক্ষ নিরাপত্তা জোরদার এবং প্রতি ভোটকেন্দ্রে শুধু ব্যালট পেপারগুলো সকালে পাঠানোর আবেদন করেন।
বাকি দুই প্রার্থীও একই আবেদন জানিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার, রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, র্যাব-৮ প্রধান এবং বিজিবি ক্যাম্প কর্মকর্তাদের কাছে অনুলিপি প্রেরণ করেছেন।
একই আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী জাজিউর রহমান রাসেল ও ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী প্রণব ঘোষ। তিনি বলেন, ‘কেন্দ্র দখলের প্রস্তুতি হিসেবে বিশেষ প্রার্থীরা আচরণবিধি লঙ্ঘন করে বহিরাগত অনেক সন্ত্রাসীকে নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন বাড়িতে সংগঠিত করে রেখেছে। কয়েক দিন ধরে এরা এলাকায় শোডাউন করে যাচ্ছে।’ শঙ্কার পরিপ্রেক্ষিতে অভিযোগকারী প্রার্থীরা প্রতিটি কেন্দ্র রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় থেকে যানবাহনে সর্বোচ্চ ১০ মিনিটের দূরত্ব হওয়ায় ভোটের দিন সকালে কেন্দ্রে ব্যালট পেপার সরবরাহের আবেদন জানিয়েছেন।
গোয়ালন্দ পৌরসভার নির্বাচনী দায়িত্বে থাকা রাজবাড়ীর সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল) রবিউল ইসলাম বলেন, ভোটকেন্দ্রে দিন কিংবা রাতে কোনো দুষ্কৃতকারী প্রবেশের চেষ্টা করলে কঠোরভাবে তা প্রতিহত করা হবে। প্রতিটি কেন্দ্রে পর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। আশা করছি, কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা যাবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও রিটার্নিং অফিসার পঙ্কজ ঘোষ এ প্রসঙ্গে বলেন, নিয়ম অনুযায়ী আগের দিনই কেন্দ্রে ভোট গ্রহণের সব সরঞ্জাম পৌঁছাতে হবে। তবে অভিযোগ আমলে নিয়ে রাতে কেন্দ্রের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হবে।