ইউপি নির্বাচনে ৬০০ কোটি টাকার বাজেট

Looks like you've blocked notifications!

ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) নির্বাচনের ব্যয় দ্বিগুণ করা হয়েছে। চলতি বছর আয়োজিত ইউপি নির্বাচনে বাজেট রাখা হয়েছে ৬০০ কোটি টাকা। সর্বশেষ ২০১১ সালের ইউপি নির্বাচনের ব্যয় ছিল ৩৪০ কোটি টাকা।

আজ মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশন সূত্রে এ তথ্য জানা যায়। সূত্র জানায়, প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে স্থানীয় সরকারের ইউপি নির্বাচনে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৬০০ কোটি টাকা। এ টাকার মধ্যে ২৩০ কোটি টাকা নির্বাচনী ব্যবস্থাপনার জন্য ব্যয় করা হবে। আর বাকি টাকা আইনশৃঙ্খলাসহ অন্যান্য খাতে ব্যয় করা  হবে।

আগামী সপ্তাহে কমিশন সভায় অনুমোদনের পর এই বাজেট অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা। 

নির্বাচন উপলক্ষে নির্বাচনী উপকরণ বা মালামাল ক্রয়ের উদ্যোগ নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। কমিশনের সংশ্লিষ্ট শাখার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সম্প্রতি নির্বাচনী উপকরণ ক্রয়ের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছিল। আগ্রহীরা দরপত্রে অংশগ্রহণও করেছেন।

জানা গেছে, নির্বাচন উপযোগী দেশের প্রায় সাড়ে চার হাজারেরও বেশি ইউপির নির্বাচন আগামী মার্চের শেষেই শুরু করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। এ ক্ষেত্রে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি তপসিল ঘোষণা করা হবে। সে জন্য এখন থেকেই কেনাকাটার শুরু করেছে ইসি।

ব্যয়ের খাত

কমিশন সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচন পরিচালনায় উল্লেখযোগ্য খাতসমূহ হচ্ছে, ভোটকেন্দ্রে বেষ্টনী ও গোপন কক্ষ নির্মাণ, অস্থায়ী ভোটকেন্দ্র স্থাপন, নির্বাচনী কর্মকর্তাদের ভ্রমণ ও দৈনিক ভাতা, ভোটকেন্দ্রে ব্যবহারের জন্য মনিহারি দ্রব্য ক্রয়, নির্বাচনের ফরম, প্যাকেট ও নির্বাচনী নির্দেশিকা-ম্যানুয়াল প্রস্তুত, স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স পরিষ্কার ও পরিচ্ছন্নকরণ এবং তা কেন্দ্রে পৌঁছানো, নির্বাচনে ব্যবহৃত সামগ্রী ব্যালট পেপার, সিলগালা, স্ট্যাম্প প্যাড এবং রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাদের পারিশ্রমিক। এ ছাড়া আইনশৃঙ্খলা খাতে পুলিশ, র‍্যাব, বিজিবি, কোস্টগার্ড, আনসার এবং নির্বাহী ও বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটদের নির্বাচনী কাজে নিয়োগে ব্যয় করা হয়। 

কমিশনের বাজেট শাখার উপসচিব শাহজাহান খান বলেন, ‘দশম সংসদ নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অনেক প্রার্থী জয়ী হওয়ায় অর্ধেকের বেশি আসনে আমাদের নির্বাচন করতে হয়নি। তাই তখনকার সময়ের অনেক উপকরণ অব্যবহৃত রয়েছে, যা আগামী ইউপিতে কাজে লাগানো হবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘এ ছাড়া বর্তমানে প্রায় ১০ ধরনের উপকরণ কেনা হচ্ছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে-সিল, ব্রাশ সিল, প্যাড, গালা, ছোট ব্যাগ, বড় ব্যাগ, ব্যালট বাক্সের লক, রশি ইত্যাদি। এগুলোর জন্যই দরপত্র দেওয়া হয়। 

প্রথম ধাপে ইউপির তালিকা প্রস্তুত

যেসব ইউপিতে আগামী ১ মে মেয়াদ শেষ হবে সেসব এলাকায় প্রথম দফায় নির্বাচন দিতে যাচ্ছে কমিশন। প্রথম দফায় ৭৭৪টি ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচন দেওয়ার জন্য তালিকা করেছে কমিশন। এসব ইউপির বেশির ভাই উপকূলীয় ও পাহাড়ি এলাকার।

নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে নির্বাচন কমিশনের উপসচিব মো. সামসুল আলম এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমরা যেসব ইউপির মেয়াদ ২৮ মার্চ শেষ হবে সেগুলো এবং ৩১ মে মেয়াদ শেষ হবে এমন ইউপির তালিকা করেছি। ৩১ মে মেয়াদ শেষ হবে এমন ইউপির সংখ্যা রয়েছে ৭৭৪টি। আগামী সপ্তাহেই কমিশন বৈঠকে প্রথম ধাপে ইউপি নির্বাচনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’ 

প্রথম ধাপে ইউপি নির্বাচনের এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘আইন অনুযায়ী আগামী ২৮ মার্চের মধ্যে প্রথম ধাপে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।’ 

কমিশন সূত্রে জানা গেছে, এ নির্বাচনের জন্য বিধিমালায় প্রতীকের পরিবর্তন আনা হয়েছে। সংশোধিত বিধিমালায় ইউপি নির্বাচনে দলীয় ৪০টি প্রতীকের বাইরে স্বতন্ত্র পদের চেয়ারম্যান প্রার্থীদের জন্য ১০টি প্রতীক, সাধারণ সদস্য (মেম্বার) প্রার্থীদের জন্য ১২টি  এবং সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে নতুন ১০টি প্রতীক সংরক্ষণ করা হয়েছে।

বর্তমানে দেশে চার হাজার ৫৭১টি ইউনিয়ন পরিষদ রয়েছে। স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯-এর ২৯ (৩) ধারা অনুযায়ী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের তারিখ পাঁচ বছর পূর্ণ হওয়ার আগের ১৮০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করার বিধান রয়েছে। 

দেশে ১৯৭৩, ১৯৭৭, ১৯৮৩, ১৯৮৮, ১৯৯২, ১৯৯৭, ২০০৩ এবং ২০১১ সালে মোট আটবার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন হয়েছে।