আকিজের বিষাক্ত বর্জ্যে ভেসে উঠছে মাছ

Looks like you've blocked notifications!
মানিকগঞ্জের জাগীর এলাকার ‘আকিজ টেক্সটাইল’ কারখানার বিষাক্ত বর্জ্যে আজ বৃহস্পতিবার স্থানীয় পুকুরের মাছ মরে ভেসে ওঠে। ছবি : এনটিভি

ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক সংলগ্ন মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার জাগীর এলাকার ‘আকিজ টেক্সটাইল’ কারখানার বিষাক্ত বর্জ্যে মারাত্মকভাবে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। এই বর্জ্য ফেলায় আজ বৃহস্পতিবার দিনভর স্থানীয় পুকুরের মাছ মরে ভেসে উঠেছে।

আশপাশের জমিতে বর্জ্য মিশ্রিত পানি ঢুকে পড়ায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছে কৃষকরা। গতকাল বুধবার  রাতে ওই কারখানা থেকে এই বিষাক্ত বর্জ্য মিশ্রিত পানি ফেলা হয়েছে বলে স্থানীয় লোকজন জানিয়েছে।

লোকজন বলে, রাত ১২টার দিকে হঠাৎ করেই আকিজ টেক্সটাইল কারখানা থেকে বর্জ্য মিশ্রিত পানি ফেলা হয়। পানি পাশের ঈমান আলীর পুকুরে ঢুকে পড়লে মাছ মরে ভেসে উঠতে থাকে। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে এই দূষিত পানি পাশের প্রায় ১০০ বিঘা জমিতে ঢুকে পড়ে। এতে আবাদী বিভিন্ন সবজি, পাকা সরিষা, ভুট্টা ও ধানক্ষেত হুমকির মুখে পড়েছে। পুরো এলাকায় এই বিষাক্ত বর্জ্যের প্রচণ্ড দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে।

ইমান আলী সাংবাদিকদের জানান, গভীর রাতে কারখানার বর্জ্য মিশ্রিত পানি পুকুরে এসে পড়ায় মাছের মড়ক শুরু হয়েছে। অনেক বড় বড় মাছ মরে ভেসে ওঠায় স্থানীয় লোকজন নিয়ে গেছে। দিনভর ছোট ছোট মাছ মরে ভেসে ওঠে।

জাগীর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জাকির হোসেন জানান, আকিজ টেক্সটাইল কারখানাটি গড়ে ওঠার পর মাঝেমধ্যেই বর্জ্য বাইরে ফেলছে। এ নিয়ে স্থানীয় লোকজন কয়েকবার বিক্ষোভ করেছে। কর্তৃপক্ষকে জানালেও কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না তারা।

জাকির হোসেন বলেন, আবারও ওই কারখানার বর্জ্য এভাবে ফেলায় এলাকার লোকজনের মধ্যে প্রচণ্ড ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হচ্ছে।

মানিকগঞ্জ পরিবেশ অধিদপ্তরের জ্যেষ্ঠ কেমিস্ট আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, গত বছর এ রকম ঘটনায় আকিজ টেক্সটাইল কারখানাটিকে ছয় লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছিল। আগামী ১০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে স্থানীয় লোকজনের কোনো ক্ষয়-ক্ষতি যাতে না হয়, তা নিশ্চিত করতে কারখানা কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। অন্যথায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

এ ব্যাপারে মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক রাশিদা ফেরদৌস জানান, এভাবে বর্জ্য ফেলে পরিবেশ দূষণ ও স্থানীয় জনজীবনের ক্ষতি করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পরিবেশ অধিদপ্তরকে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।

এ ব্যাপারে কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একাধিকবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।