ঝিনাইদহে মির্জা ফখরুল

বাকস্বাধীনতা নেই, একদলীয় শাসন চলছে

Looks like you've blocked notifications!
ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সম্মেলনে বক্তব্য দিচ্ছেন দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি : এনটিভি

‘দেশে এখন চরম রাজনৈতিক সংকট বিরাজ করছে। এ সরকার নির্বাচিত সরকার নয়। এখানে গণতন্ত্রকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। বাকস্বাধীনতা হনন করা হচ্ছে। দেশে এখন সম্পূর্ণ কর্তৃত্বপরায়ণ সরকারের অধীনে একদলীয় শাসনব্যবস্থা চালু করা হয়েছে।’

ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন উদ্বোধনকালে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা বলেন।

আজ মঙ্গলবার দুপুর পৌনে ১২টায় জেলা শহরের প্রিয়া সিনেমা হলে শুরু হয় এ সম্মেলন। এর আগে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করা হয়। এ সময় জাতীয় ও দলীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়।

মির্জা ফখরুল তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ করে বিজয় অর্জন করা দেশ, সেই দেশ এখন বড় রাজনৈতিক সংকটের মধ্যে রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে অনৈতিকভাবে নিজেদের নির্বাচিত ঘোষণা করা একটি সরকার দেশের জনগণের ওপর চেপে বসেছে। এই সরকার নির্বাচিত সরকার নয়, তারপরেও আজ দেশের জনগণের ওপরে যে সমস্ত আইনকানুন এবং শাসন চাপিয়ে দিচ্ছে তাতে জনগণের জীবন দুঃসহ হয়ে উঠেছে। আজকে রাষ্ট্রব্যবস্থা ভেঙে পড়তে চলেছে। কিছুদিন আগে অবসর নেওয়া বিচারপতি প্রকাশ্যে হাইেকার্টের সামনে দাঁড়িয়ে বলছেন যে প্রধান বিচারপতির আদেশ মানি না।’

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা এমন আচরণ করছেন তাতে গোটা দেশের মানুষ অস্থির হয়ে পড়েছেন। অথচ তাদের প্রধান বলছেন, ওই সমস্ত ব্যক্তির দায় তারা নেবেন না।’

দুর্নীতির বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘দুর্নীতিতে সারা দেশ আক্রান্ত হয়েছে, নিমজ্জিত হয়েছে। গণতন্ত্রকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। আমাদের অধিকারগুলোকে কেড়ে নেওয়া হয়েছে। আমাদের ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে।  বাকস্বাধীনতা হনন করা হয়েছে। এমনকি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। আমরা এখন সম্পূর্ণ কর্তৃত্বপরায়ণ সরকারের অধীনে একদলীয় শাসনে বাস করছি।’ গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় দলীয় নেতাকর্মীদের বিবাদ-বিভেদ ভুলে গিয়ে একজোট হয়ে সংগ্রাম করার আহ্বান জানান তিনি।

জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য মো. মসিউর রহমানের সভাপতিত্বে সম্মেলনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মো. শাহজাহান, সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল ওহাব, শহিদুজ্জামান বেল্টু, বিএনপি নেতা জয়ন্ত কুমার কুণ্ডু, অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান, নিতাই রায় চৌধুরী প্রমুখ।

দীর্ঘ ছয় বছর পর অনুষ্ঠিত এ জেলা সম্মেলনে বিবাদ-বিভেদ ভুলে জেলার ছয়টি থানা ও ছয়টি পৌরসভার সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে কাউন্সিলরদের ভোটে ১০১ সদস্যবিশিষ্ট জেলা কমিটি গঠন করা হবে। এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সম্মেলন চলছিল। বিকেলের অধিবেশনে মো. মসিউর রহমান ও আবদুল মালেককে পুনরায় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক করে জেলা কমিটি গঠন করা হয়েছে। পূর্ণাঙ্গ জেলা কমিটিতে ছাত্রদলের সাবেক কয়েকজন নেতার জায়গা হতে পারে বলে আভাস পাওয়া গেছে। এ ছাড়া নতুন জেলা কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদে বড় ধরনের পরিবর্তন নাও হতে পারে।

সম্মেলন উপলক্ষে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব গত রোববার বিকেলে ঝিনাইদহে আসেন। সন্ধ্যায় তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে স্থানীয় কুটুম কমিউনিটি সেন্টারে মতবিনিময় সভায় যোগ দেন। গতকাল সোমবার সকালে জেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন তিনি। এ সময় রাস্তার দুই পাশে দাঁড়িয়ে থাকা নেতাকর্মী সমর্থকরা ফুল ছিটিয়ে তাঁকে শুভেচ্ছা জানান।