বেড়েছে প্রকল্পের মেয়াদ, সঙ্গে ভোগান্তি
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2015/03/16/photo-1426491459.jpg)
রাজধানীর মৌচাক-মগবাজার ফ্লাইওভারের নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল গত বছরের ডিসেম্বরে। কিন্তু নকশা পরিবর্তনসহ নানা জটিলতায় প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয় আরো এক বছর। এর ফলে নগরবাসীর ভোগান্তিও বেড়েছে। মগবাজার-মৌচাক ও সাতরাস্তায় চার লেনবিশিষ্ট প্রায় সোয়া আট কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ফ্লাইওভারটির নির্মাণ শুরু হয় ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে। সাতরাস্তা থেকে হলি ফ্যামিলি, রামপুরা থেকে শান্তিনগর এবং বাংলামোটর থেকে রাজারবাগ—মোট তিনটি প্যাকেজে এর কাজ চলছে।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পরিকল্পিত নকশা অনুযায়ী কাজ করতে গিয়ে শুরুতেই বিড়ম্বনায় পড়তে হয় নির্মাণ শ্রমিকদের। মাটির নিচে ওয়াসা, বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট লাইন ফ্লাইওভারের পাইলিংয়ের জন্য বাধা হয়ে দাঁড়ায়। এগুলো অক্ষত রেখে নকশার কিছুটা পরিবর্তন আনতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ। আর এতে কালক্ষেপণ হয় প্রায় এক বছর। সাতরাস্তা থেকে হলি ফ্যামিলি অংশে ৬০ শতাংশ, বাংলামোটর থেকে রাজারবাগ অংশে ৫৫ শতাংশ কাজ শেষ হলেও রামপুরা থেকে শান্তিনগর অংশটিতে কাজের গতি অনেক কম, শেষ হয়েছে মাত্র ৩০ শতাংশ। তাই বর্ধিত সময়েও পুরো ফ্লাইওভারের কাজ শেষ হওয়া নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়।
এ ব্যাপারে ফ্লাইওভারের অন্যতম নির্মাতা প্রতিষ্ঠান তমা কনস্ট্রাকশনের প্রজেক্ট ম্যানেজার সঞ্জয় কুমার বলেন, ‘প্যাকেজ-৪ ও প্যাকেজ-৬-এর এখনই ৬০-৬২ পারসেন্ট কাজ শেষ হয়েছে। আশা করছি, ২০১৫-তে এটা শেষ হয়ে যাবে। প্যাকেজ-৫-এর কাজ এক বছর পর শুরু হয়েছে, এটা ২০১৬-তে শেষ হবে।’
এলাকাবাসী অভিযোগ করেছে, কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক পুরোপুরি ভেঙে পড়ায় সেখানে চলাফেরা করা দায় হয়ে পড়েছে। ফ্লাইওভার নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের লরি ও ট্রাক যত্রতত্র ব্যবহার করার ফলে প্রতিদিনই দীর্ঘ যানজটে পড়তে হচ্ছে তাঁদের। তবে সঞ্জয় কুমার বলেন, ‘ফ্লাইওভারের কাজে হেভি ট্রাফিক চলবে, আমার তো ক্রেন চলবে, ট্রাক চলবে। কিছু কিছু সমস্যা তো আছে। তবে আমি প্রতিদিনই লক্ষ রাখছি, অসুবিধা যাতে কম হয়।’
নির্মাণকাজে ধীরগতি মানতে নারাজ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী শ্যামা প্রসাদ অধিকারী বলেন, ‘হাইভোল্টেজ বিদ্যুৎ লাইন আছে নিচে (মাটির), পানির লাইন, স্যুয়ারেজ লাইন আছে। এগুলো যেভাবে সেভাবে রেখে আমাদের কাজ করতে হয়েছে। এ কারণে ডিজাইন পরিবর্তন করতে হয়েছে। এসব কারণে তো কিছু সময় লাগছে। এটা জনগণকে আরো সুফল দেওয়ার জন্য এবং ভালো কাজ করার জন্য।’
প্রায় ৭৭২ কোটি টাকার ব্যয়ে এই ফ্লাইওভারটি নির্মাণ করছে ভারতের সিমপ্লেক্স এবং দেশীয় তমা ও নাভানা গ্রুপ। সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, ২০১৬ সালের ডিসেম্বর নাগাদ সর্বসাধারণের ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে ফ্লাইওভারটি।
গেল বছর ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা ছিল মৌচাক-মালিবাগ ফ্লাইওভারের নির্মাণকাজ। কিন্তু মূল নকশায় পরিবর্তনের ফলে তা আর সম্ভব হয়নি।