কালীগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে দণ্ড পাওয়া ব্যক্তি কাউন্সিলর প্রার্থী
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ পৌরসভার নির্বাচনে কারাদণ্ড পাওয়া এক ব্যক্তি কাউন্সিলর প্রার্থী হয়েছেন। তাঁর নাম বজলুর রশিদ নান্নু, তিনি ৩ নম্বর ওয়ার্ড থেকে কাউন্সিলর প্রার্থী। তাঁকে সাত বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছিলেন আদালত। এ জন্য তিনি এক মাসের মতো কারাভোগও করেন।
বুধবার মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের দিন কালীগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে দায়িত্বে নিয়োজিত রিটার্নিং অফিসার ও জেলা নির্বাচন অফিসার জাহাঙ্গীর হোসেন তাঁর মনোনয়নপত্র বৈধ বলে ঘোষণা করেন। বৃহস্পতিবার এ খবর জানাজানি হলে এ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। তাঁর বিরুদ্ধে ২০০০ সালের ১ জুন মাগুরা সদর থানায় একটি মামলা করা হয়। আগামী ২০ মার্চ এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ২২ ফেব্রুয়ারি মনোনয়নপত্র জমা নেওয়া হয়েছে।
নির্বাচন অফিসের দেওয়া তথ্যমতে, এদিন মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয় সাতজন কাউন্সিলর প্রার্থীর। তারা হলেন ১ নম্বর ওয়ার্ডের মো. বাবুল আক্তার ও মো. মোফিজুর রহমান, ২ নম্বর ওয়ার্ডের মো. মিজানুর রহমান ও এমরান হোসেন, ৬ নম্বর ওয়ার্ডের আনোয়ার হোসেন ও আবদুল মান্নান বিশ্বাস মনা এবং ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মো. সিরাজুল ইসলাম।
স্থানীয় লোকজন জানিয়েছে, মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের সময় একই ওয়ার্ডের অপর দুজন প্রার্থী জিল্লুর রহমান পলক, মনিরুজ্জামান স্বপনসহ অনেকেই আপত্তি জানান। তাঁরা অভিযোগ করেন, তাঁদের আপত্তি আমলে নেননি রিটার্নিং অফিসার। অবশ্য বৃহস্পতিবার এলাকাবাসীর পক্ষে ফয়লা গ্রামের দানিয়েল নামের এক ব্যক্তি প্রমাণসহ জেলা প্রশাসকের কাছে দণ্ড পাওয়া ব্যক্তির মনোনয়নপত্র বাতিল চেয়ে আবেদন করেছেন। জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের পারভিনা খাতুন এটি গ্রহণ করেছেন।
দুপুরে বিষয়টি কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, ঝিনাইদহের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের জানানো হয়। এ সময় তাঁরা বলেন, মনোনয়নপত্রের বিষয়ে আপত্তি পাওয়ার পরে জেলা প্রশাসক ব্যবস্থা নেবেন।
দণ্ড পাওয়া বজলুর রশিদ নান্নু বলেছেন, উচ্চ আদালতে আপিল করার পর নিম্ন আদালতের রায় অকার্যকর হয়ে যায়। সে কারণে তাঁর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। দাখিল করা মনোনয়নপত্রের সঙ্গে হলফনামায় মামলা নম্বর উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০০০ সালের ১ জুন মাগুরার ভায়না মোড় থেকে দুই লাখ ৪৩ হাজার টাকা মূল্যের আট হাজার ১০০ কেজি ভারতীয় চিনিসহ একটি ট্রাক আটক করে পুলিশ। এদিন কালীগঞ্জের নরেন্দ্রপুর গ্রামের মন্টু ও মিঠুকে পুলিশ হাতেনাতে আটক করে। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে চিনির মালিক কালীগঞ্জ পৌরসভার ফয়লা গ্রামের বজলুর রশিদ নান্নু ও খয়েরতলা গ্রামের বসির উদ্দীন। মাগুরা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জিয়াউল আলম ২০০০ সালের ২২ আগস্ট মাসে নান্নুসহ পাঁচজনকে আসামি করে আদালতে প্রতিবেদন দেন। শুনানি শেষে ২০০২ সালের ৮ মে এ মামলার রায় ঘোষণা করেন মাগুরার তৎকালীন সহকারী দায়রা জজ। এ রায়ে ঝন্টু ও বসিরকে খালাস দেওয়া হয়। তবে নান্নুসহ দুজনকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
বজলুর রশিদ নান্নু আরো জানান, আপিল মামলাটি আজো নিষ্পত্তি হয়নি।