পুরোহিত হত্যায় সরাসরি অংশ নেয় পাঁচজন
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে সন্তগৌড়ীয় মঠের পুরোহিত যজ্ঞেশ্বর রায়কে হত্যার মিশনে অংশ নেয় পাঁচজন। তারা সবাই নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) সদস্য।
আজ শুক্রবার দুপুরে দেবীগঞ্জ থানা চত্বরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের রংপুর রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) হুমায়ুন কবির এসব তথ্য জানান।
সংবাদ সম্মেলন থেকে জানানো হয়, গতকাল বৃহস্পতিবার গভীর রাতে দেবীগঞ্জের সুন্দরদীঘি ইউনিয়নের কালিরডাঙ্গা এলাকা থেকে যজ্ঞেশ্বর রায় হত্যাকাণ্ডের মূল হোতাসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। অন্য একজনকে নীলফামারী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি চাপাতি, দুটি পিস্তল, তিনটি ম্যাগাজিন, পাঁচটি গুলি, তিনটি ছুরি ও তিনটি ককটেল উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া কিলিং মিশনে ব্যবহৃত একটি বাইসাইকেলও উদ্ধার করা হয়েছে।
তদন্তের স্বার্থে হত্যাকাণ্ডের মূল হোতাসহ গ্রেপ্তারকৃতদের নাম জানাননি ডিআইজি। এ ছাড়া গ্রেপ্তার জেএমবি সদস্যদের সংবাদ সম্মেলনে হাজিরও করা হয়নি।
তবে পুলিশের অভিযানের সময় উপস্থিত দেবীগঞ্জ দণ্ডপাল ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য ও কমিউনিটি পুলিশের উপদেষ্টা মশিউর রহমান এনটিভি অনলাইনকে জানান, গতকাল রাতে দেবীগঞ্জ উপজেলার সুন্দরদীঘি ইউনিয়নের কালিরডাঙ্গা গ্রাম থেকে আবদুল হারেছ (৩২) ও একই উপজেলার প্রধানাবাদ গ্রামের রমজান আলীকে (২৫) গ্রেপ্তার করা হয়।
ডিআইজি জানান, মঠের পুরোহিত যজ্ঞেশ্বর হত্যাকাণ্ডে জেএমবির পাঁচ সদস্য সরাসরি অংশ নেয়। তাদের মধ্যে সরাসরি অংশ নেওয়া তিনজনকে গতকাল গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পঞ্চগড় ও নীলফামারী জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ নিয়ে এ ঘটনায় মোট ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গত ২১ ফেব্রুয়ারি হত্যার পর গ্রেপ্তার তিন জেএমবি সদস্যের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী অভিযান চালিয়ে এই তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলন থেকে জানানো হয়। কিলিং মিশনে অংশ নেওয়া আটজনের মধ্যে অন্য দুজনকেও শিগগিরই গ্রেপ্তার করা হবে বলে ডিআইজি জানান।
ডিআইজি বলেন, দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করা এবং সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টির লক্ষ্যেই এ জঙ্গি সংগঠন এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. গিয়াসউদ্দিন আহমেদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দীন মোহাম্মদ, এএসপি (সার্কেল) মো. কফিলউদ্দিনসহ অন্য পুলিশ কর্মকর্তারা।
গত ২১ ফেব্রুয়ারি সকালে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলা সদরের করতোয়ার পাশে শ্রীশ্রী সন্তগৌড়ীয় মঠের পুরোহিত যজ্ঞেশ্বর রায়কে গলা কেটে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এ সময় গোপাল চন্দ্র রায় নামের এক পূজারি গুলিবিদ্ধ হন। নির্মল চন্দ্র ওরফে নিতাই চন্দ্র ও গোপালের মা চিরতা রানী আহত হন।
এ ঘটনায় জেএমবি ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের তিন সদস্যকে আগেই গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।