‘একজন পর্যটক ১১ জনের কর্মসংস্থান করেন’

Looks like you've blocked notifications!
মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ি উপজেলায় নাটেশ্বরে প্রত্নস্থান থেকে পাওয়া বিভিন্ন সামগ্রী দেখছেন বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন এবং সংস্কৃতিবিষয়কমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরসহ অতিথিরা। ছবি : এনটিভি

মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ি উপজেলায় নাটেশ্বরের প্রত্নস্থান পরিদর্শন করেছেন বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন এবং সংস্কৃতিবিষয়কমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। পরে তাঁরা গণমাধ্যমের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন। আজ শনিবার দুপুর ১২টার দিকে এ অনুষ্ঠান শুরু হয়।

পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান বলেন, নাটেশ্বর তথা বিক্রমপুরে পর্যটনশিল্প বিকাশের ক্ষেত্রে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে। একজন পর্যটক ১১ জনের কর্মসংস্থান করেন।

সংস্কৃতিবিষয়কমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেন, মাটির নিচে ইতিহাস, পুরাকীর্তি চাপা পড়ে ছিল দীর্ঘ বছর।  অগ্রসর ফাউন্ডেশন তা মানুষের কাছে উন্মোচন করেছে। মাটির নিচে পড়ে থাকা ইতিহাসকে খনন করে বের করে এনে বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে হবে।

অগ্রসর বিক্রমপুর ফাউন্ডেশনের সভাপতি ড. নূহ-উল-আলমের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন সংস্কৃতি সচিব আকতারী মমতাজ, চীনের উপরাষ্ট্রদূত ইয়াং সি, অধ্যাপক ড. সুফী মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে সাংবাদিকরা মুন্সীগঞ্জ তথা বিক্রমপুরের আবিষ্কৃত বৌদ্ধ বিহারসহ রামপালের দীঘি দখল মুক্ত করে একটি আর্কিউলজিক্যাল পার্ক তৈরি করার প্রস্তাব দেন।

বক্তব্য শেষে নূহ-উল-আলম নাটেশ্বরে বৌদ্ধ বিহার খননের কাজ এ বছরের জন্য সমাপ্ত ঘোষণা করেন।

এদিকে দুই মন্ত্রীসহ অতিথিদের পরিদর্শন উপলক্ষে নাটেশ্বরে প্রত্নস্থান থেকে পাওয়া বিভিন্ন তৈজসপত্র, নৌকাসহ বিভিন্ন জিনিস প্রদর্শন করা হয়।

মুন্সীগঞ্জ জেলা তথ্য বাতায়নে বলা হয়েছে, প্রত্নতত্ত্ব খননে ২০১৫ সালে অগ্রসর বিক্রমপুর ফাউন্ডেশনের সঙ্গে সংযুক্ত হয় চীনের সাংস্কৃতিক স্মারক ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ইউনান প্রাদেশিক ইনস্টিটিউট। প্রায় দুই মাস পরিচালিত প্রত্নতাত্তিক খননে নাটেশ্বরের দেউলে আবিষ্কৃত হয় অষ্টকোণাকৃতি স্তূপের অবশিষ্ট অসাধারণ বাহু, কোণ এবং অভ্যন্তরীণ অষ্টকোণাকৃতি স্তূপ, চ্যাম্বার, মন্ডপ প্রভৃতি। আবিষ্কৃত প্রায় চার মিটার প্রশস্ত সীমানা প্রাচীর বিশিষ্ট দুই জোড়া চর্তুস্তূপ বাংলাদেশের স্তূপের ইতিহাসে একটি অভিনব সংযোজন। আর্দ্রতা রোধক হিসেবে ভিত্তিদেয়ালে ঝামা ইটের ব্যবহার, চারটি স্তূপের স্থানিক পরিমিতি, বর্গাকৃতি ভারসাম্য, দেয়ালের অপ্রচলিত কাঠামো (নিচের তুলনায় ওপরে অনেক প্রশস্ত) প্রভৃতি বাংলাদেশের স্থাপত্যের ইতিহাসকে সমৃদ্ধ করবে। প্রায় এক হাজার বছরের প্রাচীন ইট-নির্মিত দুটি রাস্তার আবিষ্কার তৎকালীন রাস্তা নির্মাণ কৌশল, বসতি পরিকল্পনা ও বিন্যাসের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। দেয়ালের দক্ষিণ-পূর্ব কোণে আবিষ্কৃত হচ্ছে ইট নির্মিত ২ দশমিক ৭৫ মিটার প্রশস্ত আঁকাবাঁকা একটি বিশেষ দেয়াল; এই মুহূর্তে যা একটি বিস্ময়কর স্থাপত্যের আভাস দিচ্ছে। নাটেশ্বরের প্রত্নস্থানে প্রায় সাত মিটার গভীরতায় পাঁচটি নির্মাণযুগ বিক্রমপুর অঞ্চলে দীর্ঘ সময়ব্যাপী এক সমৃদ্ধ সভ্যতার সাক্ষ্য বহন করে। ধারাবাহিক গবেষণা এবং সম্ভাবনাপূর্ণ আবিষ্কার এই নির্মাণযুগগুলোকে আলাদাভাবে চিহ্নিত করতে সহায়তা করবে।