পটুয়াখালীতে আ. লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর ঘরে আগুন
পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার চরমোন্তাজ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত ও বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এর জের ধরে আজ শনিবার দুপুরে বিদ্রোহী প্রার্থীর বসতঘর ও ধানের গোলা পুড়িয়ে দিয়েছে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর সমর্থকরা।
স্থানীয় সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হানিফ মিয়া (নৌকা) ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী নাজমুল হুদার (ঘোড়া) সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের জের ধরে আজ সাড়ে ১২টায় হানিফ মিয়ার সমর্থকরা দেশে তৈরি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মাঝের চর গ্রামে নাজমুলের বসতবাড়ি এবং ধানের গোলায় আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলেছে। পরপর দুটি ঘটনায় এলাকায় চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।
আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী নাজমুল হুদা বলেন, ‘হানিফ মিয়ার নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী আমার বসতঘর ও প্রায় ৫০০ মণ ধানের গোলায় আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। তারা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মাঝের চর এলাকায় অবস্থান নিয়েছে। এতে আমার সমর্থকরা চরম আতঙ্কের মধ্যে আছে।’
এ ব্যাপারে রাঙ্গাবালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামসুল আরেফীন বলেন, ‘ঘটনাটি আমি শুনেছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি।’
এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হানিফ মিয়ার মুঠোফোনে বারবার কল করলে তিনি কথা বলেননি।
এদিকে সংঘর্ষের ঘটনায় একটি মামলা করা হয়েছে। দলের বিদ্রোহী প্রার্থী নাজমুল হুদা, বিএনপি মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. নজরুল ইসলামসহ ৭৪ জনের নাম উল্লেখ করে ২০৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হানিফ মিয়া বাদী হয়ে শুক্রবার রাতে রাঙ্গাবালী থানায় মামলাটি করেন।
মামলায় মো. হানিফ মিয়া আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যার চেষ্টা, প্রাণনাশের হুমকি, মারধর, ছিনতাই, ঘর ভাঙচুর ও মালামাল লুটের অভিযোগ করেন।
মামলার ব্যাপারে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মো. নাজমুল হুদা বলেন, ‘আমার নির্বাচনকে পণ্ড করার জন্য আমার নির্বাচনী কর্মীদের মামলা দিয়ে এলাকা ছাড়া করতে মো. হানিফ মিয়া ও তাঁর লোকজন পূর্বপরিকল্পিতভাবে গত বৃহস্পতিবার চরবেস্টিন বাজার ও নলুয়া বাজারে অরাজকতা সৃষ্টি করেছেন। তাঁরা গায়ে পড়ে আমার কর্মীদের সঙ্গে বিবাদ সৃষ্টি করে থানায় গিয়ে মামলা করেছেন।’
এ ব্যাপারে রাঙ্গাবালী থানার ওসি মো. শামসুল আরেফীন বলেন, মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাঙ্গাবালী উপজেলার চরমোন্তাজ ইউপি নির্বাচনে আ.লীগ মনোনীত প্রার্থী মো. হানিফ মিয়া ও দলের বিদ্রোহী প্রার্থী মো. নাজমুল হুদার সমর্থকদের মধ্যে চরমোন্তাজের চরবেস্টিন বাজার ও নলুয়া বাজারে কয়েক দফা সংঘর্ষ হয়। এতে উভয় পক্ষের অর্ধশত ব্যক্তি আহত হয়। সংঘর্ষ চলাকালে চরবেস্টিন বাজার ও নলুয়া বাজারের ৪০টি দোকানে ভাঙচুর ও মালামাল লুটের ঘটনা ঘটে।