স্বামী-স্ত্রী দুজনই প্রার্থী, অভিযোগ করলেন নৌকার বিরুদ্ধে
ভোলা সদর উপজেলার আলীনগর ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন এক স্বামী ও তাঁর স্ত্রী। একে অপরের বিরুদ্ধে লড়লেও দুজনই আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী হামলা, ভাঙচুর, গুলি ছোড়াসহ প্রচারকাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ করেছেন। একই সঙ্গে তাঁরা পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে কঠোর সমালোচনা করেছেন।
আজ শনিবার দুপুরে স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহিদুল হক শুভ ও তাঁর স্ত্রী সানজিদা হক এলজিইডি কার্যালয়ের সামনে নিজ বাসায় পৃথক সংবাদ সম্মেলন করেন। এ সময় আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও পুলিশের বিরুদ্ধে এই অভিযোগগুলো তুলে ধরেন তাঁরা।
লিখিত অভিযোগে জাহিদুল হক শুভ বলেন, ‘আওয়ামী লীগের প্রার্থী বশির আহমেদ ও তাঁর সন্ত্রাসী বাহিনী আমার প্রচার-প্রচারণায় বাধা দিচ্ছে। মারধর করছে আমার সমর্থকদের। শুধু তাই নয়, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সন্ত্রাসী ভাড়া করে এনেছে। প্রতিটি ওয়ার্ডের জন্য ধারালো অস্ত্র ও লগি বৈঠা নিয়ে মহড়া দিচ্ছেন। এ পর্যন্ত আমার বহু নেতাকর্মী ও সমর্থকদের আহত করেছে। এসব বিষয় ভোলা সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও পুলিশ সুপার এবং নির্বাচন কর্মকর্তাকে লিখিতভাবে জানানো হলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তারা সব ঘটনা এড়িয়ে যাচ্ছে।’
আনারস মার্কা নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী জাহিদুল হক শুভ বলেন, ‘আমি নিরাপত্তাহীনতার অভাবে প্রচারকাজে অংশ নিতে পারছি না। পুলিশ বলছে, আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিরুদ্ধে গেলে চাকরি থাকবে না।’
নিজেকে নির্দলীয় প্রার্থী দাবি করে শুভ বলেন, ‘আমি বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের ভাগ্নিজামাই এবং পৌর মেয়র মোহাম্মদ মনিরুজ্জামানের ছোট বোনের জামাই।’
শুভর সংবাদ সম্মেলনের পর একই স্থানে তাঁর স্ত্রী ও চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী সানজিদা হক বলেন, ‘গত শুক্রবার বিকেলে প্রচারের সময় আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মো. বশির আহমেদ আমার ওপর হামলা চালায়। গাড়ির সামনে গুলি ছোড়ে ও বোমা ফাটায়। আমার মহিলা কর্মীদের লাঞ্ছিত করে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আমাকে ও আমার কর্মীদের উদ্ধার করে। এরপরও পুলিশ কিছুই করছে না। থানার ওসিকে জানালে তিনি সব ঘটনা এড়িয়ে যান। তিনি নৌকা ও আওয়ামী লীগের পক্ষে কাজ করছেন, সাধারণ মানুষের পক্ষে নয়।’
সুষ্ঠু নির্বাচন না হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করে টেলিফোন মার্কার প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী সানজিদা বলেন, ভোট দেওয়ার অধিকার কি নারীদের থাকবে? এ ছাড়া প্রতিদিন আলীনগরে রাতে ব্যাপক বোমা ফাটিয়ে আর গুলি করে আতঙ্ক সৃষ্টি করা হচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
একই সঙ্গে হত্যা মামলার মতো মিথ্যা মামলায় জড়ানোর অভিযোগ আনেন পুলিশের বিরুদ্ধে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা তথা নির্বাচন কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন সানজিদা।
উভয় প্রার্থীর সঙ্গে আলীনগর ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
অপরদিকে আলীনগর ইউপিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. বশির আহমেদ বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে আনা সব ধরনের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। তারাও আওয়ামী পরিবারের সদস্য। আমি নৌকা নিয়ে নির্বাচন করছি। দল আমাকে মনোনয়ন নিয়েছে। তাই নির্বাচন করছি। আমার কোনো বাহিনী নেই। তারা অস্ত্র নিয়ে একাধিক গাড়ির বহর নিয়ে মহড়া দিচ্ছে।’
সংবাদ সম্মেলনের ব্যাপারে ভোলা মডেল থানার ওসি মীর খায়রুল কবির বলেন, ‘তাদের দেওয়া অভিযোগ সঠিক নয়। শুক্রবার বিকেলে আলীনগরে কোনো হামলার ঘটনা ঘটেনি। আমার কোনো অফিসার সানজিদাকে করেনি। তবে সাত থেকে আটদিন আগে একটি ঘটনা ঘটেছে। তবে তাঁর গাড়িতে কেউ হামলা করেনি।’