এটিএম বুথের টাকা লুটের ঘটনায় একজনের জবানবন্দি

Looks like you've blocked notifications!
গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলায় ডাচ-বাংলা ব্যাংকের এটিএম বুথে লোড করার সময় টাকা লুট করার ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া মিন্টু মিয়া আজ শনিবার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। ছবি : এনটিভি

গাজীপুরের কালিয়াকৈরে ডাচ-বাংলা ব্যাংকের এটিএম বুথে লোড করার সময় টাকা লুট করার ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া মিন্টু মিয়া আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

আজ শনিবার দুপুরে গাজীপুরের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতের বিচারক তাহমিনা খানম শিল্পীর সামনে মিন্টুকে হাজির করা হলে তিনি বিচারকের খাসকামরায় ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।

এদিকে ঘটনার তিনদিন পরেও লুণ্ঠিত টাকা উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।

কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মোতালেব জানান, টাকা লুটের ঘটনায় গাজীপুর সিটি করপোরেশনের বোর্ড বাজার এলাকা থেকে খুলনার পাইকগাছার বদাডাঙ্গা গ্রামের লাবলু মোল্লা ওরফে নাঈমুর ওরফে ইমনকে (২৯) এবং কালিয়াকৈরের রাখালিয়ার চালা এলাকা থেকে স্থানীয় মিন্টু মিয়াকে (৩২) শুক্রবার ভোরে আটক করা হয়। শনিবার মিন্টু মিয়া আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। বিচারক জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করার পর মিন্টুকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

ওসি জানান, অপর আসামি লাভলু মোল্লা ওরফে ইমনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করা হলে আদালত শুনানির জন্য রোববার ধার্য করেন। 

ওসি আবদুল মোতালেব মিয়া জানান, গ্রেপ্তার হওয়া মিন্টু টাকা লুটের বিস্তারিত ঘটনা পুলিশ ও আদালতের কাছে স্বীকার করেছেন। মিন্টু জানান, টাকা লুটের ঘটনায় তিনিসহ সাতজন অংশ নেন। এর মধ্যে তিনি কয়েকজনকে চেনেন এবং কয়েকজন তাঁর অপরিচিত। এ ছাড়া লুণ্ঠিত টাকার ভাগবাটোয়ারা না করে দলের একজনের কাছেই গচ্ছিত রাখা আছে বলে মিন্টু জানিয়েছেন।

এদিকে আজ শনিবার দুপুরে গাজীপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ নিজ কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেছেন, ‘কালিয়াকৈরে ডাচ-বাংলা ব্যাংকের সিসিটিভির ক্যামেরার ছবি দেখে কয়েকজনের ছবি শনাক্ত করা হয়েছে। এটিএম বুথের টাকা ডাকাতির ঘটনার সঙ্গে জড়িত কয়েকজনকে শনাক্ত করেছি এবং আমরা বুঝতে পেরেছি কারা এর সঙ্গে জড়িত ছিল।’

পুলিশ সুপার আরো বলেন, ‘আমরা সবকিছু তদারকি করছি। এরই মধ্যে গ্রেপ্তার করা একজন ঘটনাস্থলে থাকার কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে। আমরা পরবর্তী পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করছি, আশা করছি এটা বের হয়ে যাবে।’

এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. দেলোয়ার হোসেন, মিজানুর রহমান, মো. সোলায়মান, জয়দেবপুর থানার ওসি মো. রেজাউল হাসান রেজা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

পুলিশ সুপার আরো জানান, তিনি জানতে পেরেছেন অন্য সময় মানি প্ল্যান্ট লিংকের লোকজন প্রতিদিন রাত ১০-১১টার মধ্যে এটিএম বুথে টাকা লোড করতে যেতেন। কিন্তু টাকা লুটের ঘটনার রাত আড়াইটা-তিনটার দিকে কেন তারা বুথে টাকা লোড করতে গেলেন এটা রহস্যজনক। আর লুট করে যাওয়ার সময় কেন বুথের গার্ডরা গুলি করলেন না বাধা দিলেন না, এটাতেও রহস্য রয়েছে।

ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের পাশে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার সফিপুর (হরিণহাটি) এলাকার অ্যাপেক্স ফুটওয়্যার লিমিটেড কারখানার গেটের ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ফাস্টট্র্যাক এটিএম বুথে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে টাকা লোড করার সময় প্রায় এক কোটি ৮৪ লাখ টাকা বোঝাই দুটি ট্রাংক লুট করে পিকআপ ভ্যানে নিয়ে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। 

এ ঘটনায় মানিপ্ল্যান্ট লিংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) সৈয়দ আবজালুল আবেদীন বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার রাতে কালিয়াকৈর থানায় মামলা করেন। ঘটনার পরপরই পরিত্যক্ত অবস্থায় ওই ট্রাংক দুটি ও একটি এটিএম কার্ড ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার আছিম পাটুলী ইউনিয়নের বাঁশধি কড়ইতলা এলাকার মামুনের পুকুরের পাড় থেকে পুলিশ উদ্ধার করে। এ ছাড়া পুলিশ ঘটনার সময় টাকা লোড করার দায়িত্বে থাকা ওই কোম্পানির সাত কর্মচারীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।

পুলিশ এ ঘটনায় গাজীপুরের কোনাবাড়ী, বোর্ডবাজার ও ঢাকার আশুলিয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান ও তল্লাশি চালিয়েছে। তবে ঘটনার তিনদিন পরেও লুণ্ঠিত টাকা উদ্ধার করতে পারেনি।