শিশু ধর্ষণচেষ্টার শাস্তি বেত্রাঘাত, জরিমানা

Looks like you've blocked notifications!

নওগাঁয় দ্বিতীয় শ্রেণীর এক ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে ১০১টি বেত্রাঘাত, নাকে খত ও দুই লাখ ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। গতকাল বুধবার দুপুরে সদর উপজেলার দুবলহাটি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোখলেসুর রহমান আজম সালিস বসিয়ে ওই শাস্তি দেন।

নওগাঁ সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সামসুল আলম বলেন, ‘ঘটনাটি আমরা শোনার পর দুবলহাটির ওই গ্রামে পুলিশ পাঠানো হয়। গতকাল বুধবার রাতে শিশুটির বাবা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছেন।’ 

দুবলহাটি ইউনিয়নের ওই গ্রামে গিয়ে জানা যায়, মঙ্গলবার দুপুরে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া শিশুটির দিনমজুর বাবা ও মা বাড়ির বাইরে কাজ করতে যায়। এ সময় বাড়িতে একা ছিল শিশুটি। এ সময় পাশের বাড়ির লুৎফর রহমান (৫৫) ঘরে শিশুটিকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। এ সময় শিশুটির বাবা বাড়িতে পানি খেতে এসে ঘটনাটি দেখতে পান। লুৎফর রহমান শিশুর বাবাকে ধাক্কা মেরে পালিয়ে যান।

বিষয়টি জানাজানি হলে গতকাল বুধবার দুপুরে দুবলহাটি ইউপির চেয়ারম্যান মোখলেসুর রহমান আজম বিষয়টি নিয়ে গ্রামে সালিস ডাকেন। এ সময় ওই সালিসে ইউপি সদস্য কাজল রশিদ, গ্রাম্য মাতবর কাজল সরদারসহ গ্রামের দুই শতাধিক নারী-পুরুষ উপস্থিত ছিলেন।

সালিসে লুৎফর রহমানকে দোষী সাব্যস্ত করে তাঁকে ১০১টি বেত্রাঘাত, ১০ হাত পরিমাণ স্থানে নাকে খত ও দুই লাখ ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন ইউপি চেয়ারম্যান। তাঁর নির্দেশে লুৎফরের বাবা হাজি ইসমাইল হোসেন ছেলেকে ১০১টি বেত্রাঘাত করেন। 

ইউপি সদস্য কাজল রশিদ এনটিভি অনলাইনকে জানান, জরিমানার টাকা থেকে দুই লাখ টাকা শিশুটির পরিবারকে দেওয়া হবে এবং বাকি ১০ হাজার টাকা স্থানীয় যুবকদের দেওয়া হয়েছে। 

ইউপি চেয়ারম্যান মোখলেসুর দাবি করেন, তিনি সালিসে উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু রায় ঘোষণার আগে সেখান থেকে চলে যান। বাদী ও বিবাদী উভয় পক্ষের সম্মতিতে বিচার করা হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।

এদিকে ইসমাইল হোসেন দাবি করেন, তাঁর ছেলে লুৎফর নির্দোষ। অন্যায়ভাবে সালিসে তাঁকে দিয়ে ছেলেকে বেত মারা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, ছেলের কাছে নগদ টাকা না থাকায় চেয়ারম্যান তাঁর এক লাখ ৬০ হাজার টাকা মূল্যের বন্ধকি জমির কাগজপত্র নিয়ে গেছেন। এ ছাড়া জরিমানার টাকা দিয়ে গ্রামে মিষ্টি বিতরণ করা হয়েছে। এমনকি তাঁর বাড়িতেও মিষ্টির প্যাকেট পাঠানো হয়েছে।

এদিকে বুধবার বিকেলে ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের যাওয়ার খবর পেয়ে নওগাঁ সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সামসুল আলম একদল পুলিশ নিয়ে ওই গ্রামে যান এবং রাতে শিশুটির বাবা, চাচাসহ শিশুটিকে থানায় নিয়ে যায়। এরপর এই ঘটনায় মামলা করেন শিশুটির বাবা।