দেবর-ভাবিকে পিটিয়ে মাথা ন্যাড়া করে দিলেন যুবলীগ নেতা
পরকীয়ার অভিযোগ এনে এক গৃহবধূ ও তাঁর দেবরকে গ্রাম্য সালিসে বেঁধে পিটিয়ে মাথা ন্যাড়া করে দেওয়া হয়েছে। পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার গজালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সদ্য নির্বাচিত চেয়ারম্যান খালেদুল ইসলাম স্বপন এই নির্যাতন করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল শনিবার রাত ৮টায় ইউনিয়নের ইছাদি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
চেয়ারম্যান খালেদুল ইসলাম স্বপন গলাচিপা-দশমিনা আসনে আওয়ামী লীগদলীয় সংসদ সদস্য আ খ ম জাহাঙ্গীর হোসাইনের ছোট ভাই। তিনি গলাচিপা উপজেলা যুবলীগের সভাপতি। বর্তমানে তিনি পলাতক রয়েছেন।
আজ রোববার সকালে নির্যাতিত ওই দুজনকে পুলিশ থানা হেফাজতে নিয়ে যায়। এরপর দুপুরে পুলিশ গৃহবধূকে বোরখা পরিয়ে থানা থেকে গলাচিপা আদালতে নিয়ে যায়। সেখানে তিনি এ ঘটনার জবানবন্দি দিয়েছেন।
এ ঘটনায় আজ দুপুরে গলাচিপা থানায় মামলা করেছেন ওই নারীর স্বামী। মামলায় স্বপন ছাড়াও সালিস বৈঠকের মুখপাত্র কথিত ফতোয়াবাজ মাওলানা নাসির, মান্নান মৌলভী, নিজাম মেম্বার, স্বপনের ভাগ্নে আশরাফুল ইসলাম টিপু, শামসুল হকসহ অজ্ঞাত সাতজনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলায় বলা হয়েছে, গতকাল শনিবার রাত ৮টার দিকে পরকীয়া সম্পর্কের মিথ্যা অপবাদ দিয়ে ওই গৃহবধূ ও তাঁর দেবরকে গ্রাম পুলিশ কুদ্দুসকে দিয়ে ধরে আনা হয়। ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের দোতলায় নিয়ে দুজনকেই বেঁধে লাঠি দিয়ে পেটানো হয়। এরপর মাঠে নামানো হয়। সেখানে চেয়ারম্যান স্বপন নিজেই লাঠি দিয়ে পেটাতে পেটাতে বিবস্ত্র করে ফেলেন গৃহবধূকে। একপর্যায়ে তাঁদের মাথা ন্যাড়া করে দেয় স্বপন। এ সময় নিজামকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ইসাদি গ্রামের ওই গৃহবধূর সঙ্গে তাঁর চাচাতো দেবরের পরকীয়া সম্পর্ক রয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। গতকাল তাঁদের কথা বলতে দেখে স্বপনের অনুসারীরা। এরপর স্বপনের নির্দেশেই তাঁদের ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর দুজনকেই বেঁধে পিটিয়ে মাথা ন্যাড়া করে দেওয়া হয়।
গলাচিপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রাজ্জাক জানান, নির্যাতিত নারী রাবেয়াকে থানা হেফাজতে আনা হয়। এরপর আদালতে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ সুপার সৈয়দ মোশফিকুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, তিনি ঘটনাটির ব্যাপারে শুনেছেন। ঘটনার সত্যতা যাচাই করে অপরাধী যেই হোক না কেন তাঁকে আইনের আওতায় এনে কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।