মেয়র মান্নান কারাগারে

Looks like you've blocked notifications!
বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র অধ্যাপক এম এ মান্নানসহ ১০ জনকে আজ শনিবার কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। ছবি : এনটিভি

বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র অধ্যাপক এম এ মান্নানকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

আজ শনিবার বিকেলে গাজীপুরের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালত ২-এর বিচারক মো. ইকবাল মাসুদ মেয়র মান্নানসহ এ মামলায় গ্রেপ্তার ১০ জনের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে সবাইকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

গতকাল শুক্রবার রাত ৯টার দিকে গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা কেপি পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেওয়া হয়। এর কিছুক্ষণ পরেই কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক-ফুলবাড়িয়া সড়কের ভান্নারা এলাকা থেকে অধ্যাপক এম এ মান্নানসহ ১০ জনকে গাজীপুর ডিবি পুলিশ আটক করে। রাত ১১টার দিকে ডিবি পুলিশ তাঁদের জয়দেবপুর থানায় নিয়ে যায়।

তবে ঘটনার পর পরই জয়দেবপুর থানাধীন ভোগড়া ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাকির হোসেন ও গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক আক্তারুজ্জামান লিটন গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়ে বাসটিতে আগুন লাগে বলে এনটিভি অনলাইনকে জানিয়েছিলেন। 

এ ঘটনায় জয়দেবপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আহাদুল ইসলাম বাদী হয়ে শুক্রবার রাতে অধ্যাপক এম এ মান্নানসহ ৩৯ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ২০-৩০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। এঁদের মধ্যে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের বিএনপিপন্থী ১১ জন কাউন্সিলর রয়েছেন।

মামলায় উল্লেখ করা হয়, রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টির জন্য গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র অধ্যাপক এম এ মান্নানের সালনার বাসভবনের সামনে এক-দেড়শ নেতাকর্মী একত্রিত হয়। পরে পুলিশ শুক্রবার রাত ৮টা ২০ মিনিটের দিকে চান্দনা চৌরাস্তায় গিয়ে দেখে বিএনপির নেতাকর্মীরা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের চান্দনা স্কুলের সামনে কেপি পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাসে অগ্নিসংযোগ করে এবং রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে গাড়ি ভাঙচুর শুরু করে। এ সময় ডিবি পুলিশের সহযোগিতায় নয়জনকে আটক করা হয়।

পরে আটককৃতরা জানায়, মেয়র অধ্যাপক এম এ মান্নানের নির্দেশে তারা বাসে অগ্নিসংযোগ করেছে এবং অধ্যাপক মান্নান কালিয়াকৈরের দিকে চলে গেছেন। পরে ডিবি পুলিশের সহযোগিতায় ধাওয়া দিয়ে কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক ফাঁড়ির সামনে থেকে মেয়র মান্নানকে গ্রেপ্তার করা হয়।

শনিবার বিকেলে ৪টার দিকে মেয়র মান্নানসহ ১০ জনকে গাজীপুর আদালতে হাজির করা হয়। আদালতে আসামিদের পক্ষ থেকে জামিন আবেদন করা হলেও বিচারক তা নামঞ্জুর করে সবাইকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

গাজীপুরে যাত্রীবাহী বাসে পেট্রলবোমা হামলার মামলায় গত বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি মেয়র এম এ মান্নানকে ঢাকার বারিধারার বাসভবন থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাঁকে ১৯টি মামলায় গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ। এর মধ্যে একটি মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। এরপর ওই বছরের ১৯ আগস্ট স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করে।

মেয়র মান্নান গ্রেপ্তারের পর থেকে সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন প্যানেল মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ। উচ্চ আদালত থেকে সব মামলায় জামিন লাভের পর গত ২ মার্চ অধ্যাপক মান্নান জামিনে মুক্তি পান। মুক্তিলাভের পর তিনি সাময়িক বরখাস্ত আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে রিট করলে আদালত সাময়িক বরখাস্ত আদেশ ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেন।

গত বুধবার রাষ্ট্রপক্ষ সুপ্রিম কোর্টের এ স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে আপিল করে। প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের তিন সদস্যের বেঞ্চ হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ বহাল রাখেন।