পঞ্চগড়ে সবজির আড়তদার, বিক্রেতা ও কৃষকদের হরতাল
পঞ্চগড় জেলা শহরের প্রধান হাট রাজনগরে সবজির আড়তদার, সবজি বিক্রেতা ও কৃষকরা অনির্দিষ্টিকালের হরতালের ডাক দিয়েছেন।
হাটের ইজারাদারের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত টোল আদায়ের অভিযোগ এনে এই হরতালের ডাক দেওয়া হয়।
পঞ্চগড় বাজার কাঁচামাল আড়তদার ব্যবসায়ী সমিতি এবং ক্ষুদ্র কাঁচামাল ব্যবসায়ী সমিতির ডাকা এ হরতালে সবজির সব আড়তদার ও সবজি বিক্রেতারা নিজ নিজ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছেন। কৃষকরা বিক্রি না করে সবজি রাস্তায় ফেলে প্রতিবাদ জানান।
এদিকে হরতালের কারণে বাজার করতে না পেরে আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে স্থানীয় লোকজন পড়েছেন চরম দুর্ভোগে। হরতালে যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সবজি বাজারে অতিরিক্ত পুলিশের টহল দেখা গেছে।
আড়তদার ও সবজি ব্যবসায়ী সূত্রে জানা যায়, সরকারি বিধি অনুযায়ী, বাংলা চলতি বছরের জন্য জেলার প্রধান হাট পঞ্চগড় বাজার স্থানীয় ব্যবসায়ী আবদুল হান্নান শেখের কাছে ইজারা দেয় পঞ্চগড় পৌরসভা।
ইজারার শর্ত অনুযায়ী, সবজিভর্তি প্রতি পিকআপ ভ্যানের কাছ থেকে ১৬ টাকা, ভ্যানের কাছ থেকে ১২ টাকা, প্রতি মণ সবজি আট টাকা, বড় সবজির দোকান থেকে আট টাকা এবং ছোট দোকান থেকে দৈনিক সাড়ে চার টাকা করে টোল আদায়ের কথা। কিন্তু ইজারাদারের লোকজন পিকআপ ভ্যানপ্রতি ৪০০ টাকা, প্রতিটি ভ্যান থেকে ১০০ টাকাসহ দোকানপ্রতি ১০ টাকা করে টোল আদায় করছেন।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, হাটের ইজারাদারের লোকজন জোরপূর্বক ব্যবসায়ী এবং ক্ষুদ্র কৃষকদের কাছে নির্ধারিত টোলের তিন থেকে পাঁচগুণ বেশি টোল আদায় করছেন। এর প্রতিবাদে পঞ্চগড় বাজার কাঁচামাল আড়তদার ব্যবসায়ী সমিতি এবং ক্ষুদ্র কাঁচামাল ব্যবসায়ী সমিতি গতকাল সোমবার রাতে হরতালের ঘোষণা দেয়।
ওই ঘোষণার পর রাতেই ইজারাদার, পৌরসভা ও সবজির আড়তদার, সবজি বিক্রেতা ও কৃষকদের নিয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে পৌরসভা কর্তৃপক্ষের পরামর্শ অনুযায়ী ক্ষেত্রবিশেষে ২০ থেকে ৫০ শতাংশ কমে টোল আদায়ের আলোচনা হয়। কিন্তু ব্যবসায়ীরা এ সিদ্ধান্ত মানেননি।
পঞ্চগড় বাজার কাঁচামাল আড়তদার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি কফিল উদ্দিন বলেন, ‘আগে শাকসবজি উৎপাদনকারীদের কাছ থেকে টোল আদায় করা হতো। এখন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকেও টোল আদায় করা হচ্ছে। সরকারি বিধি মোতাবেক না নিয়ে তারা কয়েক গুণ অতিরিক্ত টোল আদায় করেন। এ নিয়ে টোল আদায়কারী ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে একাধিকার ঝগড়া বিবাদও হয়। বিষয়টি ইজারাদারকে বারবার বলার পরেও কাজ না হওয়ায় আমরা যৌথভাবে অনির্দিষ্টকালের জন্য হরতালের ডাক দিয়েছি।’
পঞ্চগড় রাজনগর হাটের ইজারাদার আবদুল হান্নান শেখ অতিরিক্ত টোল আদায়ের কথা অস্বীকার করে জানান, পৌরসভা কর্তৃপক্ষের সমন্বয়ে ইজারাদার ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে আলোচনা চলছে। বিষয়টি সমাধান হয়ে যাবে।